পাতা:বিভূতি রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড).djvu/৩৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উৎকর্ণ N:t হাট নিয়ে যা, খুড়ীম কোথায় " সেই সব দিনের শত স্থতি জড়ানো গৌর কলুর দোকানের সঙ্গে। ফিরবার পথে গাজিতলায় ভাঙনের ধারে গিয়ে কতক্ষণ বসে রইলুম। ওই দুরে বনসিমতলার ঘাট, কে একটি ছোট মেয়ে যেন এখনও স্বান করে ভিজে চুলে ভিজে কাপড়ে বনসিমতলায় ঝোপের পাশ দিয়ে যেতে যেতে একবার চকিত নয়নে পিছন দিকে চাইলে । বনগায়ে ফিরে সাৰ্ব্বজনীন পূজার আরতি দেখতে গিয়েছি প্রফুল্লদের বাড়ি। আজ ছুবেলাই খুকুদের বাড়ি যাইনি। একটু পরে ভিড়ের মধ্যে খুকু এসে দাড়াল, চারিদিকে চেয়ে দেখলেতারপর চৌকির ওপর উঠে ঠাকুর দেখতে লাগল আর মাঝে মাঝে এদিকে চাইচে । বেজায় রাগ করেচে আজ সারাদিন যাইনি বলে। পরদিন সকালে ভয়ানক অমুযোগ ও অভিমানের পালা । তারপর একদিন নকফুল হরিপদ চক্ৰবৰ্ত্তীর বাড়ি নৌকো করে নিমন্ত্রণ খেতে গেলুম-আমি, মন্মথদা, বিভূতি । আমাদের ঘাটে নেমে গুটকেকে ডাকতে গেলুম, আমি, বিভূতি ও মন্মথদ । গুটকে ইন্দুর ছেলে, গরীব বাপ, ভাবলুম নিয়ে যাই, ভালো-মন্দটা খেতে পাবে এখন। গিয়ে শুনি তার জর । w সন্ধ্যার সময় নকফুল থেকে যখন ফিরচি, তখন দেখি দেবু একখান নৌকো থেকে বলচে– ও বিভূতিদা “দুজনে বেড়াতে বার হয়েচ মহাষ্টমীর দিনটা! বনগাতেই ছিলুম। খয়রামারির মাঠে বেড়াতে যেভুম। একদিন গিয়েছিলুম চালকী। নরেনদী এসে নিমন্ত্রণ করেছিল। অজস্র বন-তারার ফুল ফুটেচে বনে ঝোপে, ছাতিম ফুল ফুটেচে —বৃষ্টি থেমে যাওয়ার দরুন পথঘাট খট, খট, করচে শুকনে, বেশ লাগল। চালকীতে খেয়ে দেয়ে গেলুম বারাকপুর। আমার রোয়াকে চেয়ার পেতে বসলুম সেই জ্যৈষ্ঠ মাসের পরে। মনে হল এক্ষুনি খুকু যেন আঁচল উড়িয়ে আসচে পাশের বাড়ির শিউলিতলা থেকে। আর তার সঙ্গে ওভাবে জীবনে কখনই হয়তো দেখা হবে না। আর কোনদিন সে আঁচল উড়িয়ে পাশের উঠোনের পথটি চেয়ে আসবে না আগের মত। মনে পড়ল ওদের উঠোনের ওই বড় শিউলি গাছটায় ফুল ফুটত এই পূজোর সময়—আমি বসে বসে এইখানে 'আইভানহো’র অনুবাদ করতুম, আমার কাছে রোজ সন্দে-বেলা আসাই চাই ওর-ভোটের গাডিতে নানা ছুতো করে আমার বনগী থেকে আসা—সেসব দিনের কথা কোনদিন ভোলা যাবে না । তারপর ঘাটের ধারে গুটকের সঙ্গে মাছ ধরা দেখতে গেলুম। সতুকাকা, ইন্দু, খামাচরণদা মাছ ধরচে। ইন্দু গল্প করতে করতে পাকা রাস্তায় এল । বেলা তিনটে পর্য্যন্ত বাড়িতে শুয়ে থেকে মন্মথদার বাড়ি এসে চ খেলুম। তারপর ক্রমে ক্রমে ওখানে খুব আড্ডা হত। সন্ধ্যে-বেলা খুকুদের বাডি যেভূম —ও গ্রামোফোন বাজালে একদিন। আমার জন্তে জরদার কোঁটাে এনে বল্লে—পারতি খাবেন। পারতি ? তারপর গত শনিবারে বনগী থেকে চলে এলুম কলকাতা এবং সেইরাত্রেই ঘাটশীলা রওনা হই। ঘাটশীলার বাড়িট বেশ হয়েচে । কমল খুব যত্ন করলে। যেদিন সকালে গেলুম ঘাটশীলা—সেদিনই দুপুরের গাড়িতে গালুডি গেলুম নীরদবাবুদের বাড়ি। খামবাবুর সঙ্গে গেলুম আর বছর যে ঘরে জর হয়ে পড়ে থাকতুম, সেই ঘরটা। চিত্তবাবুর বাড়িতে পার্টি হল খুব। মেয়ের যথেষ্ট যত্ন করে থাওরালেন, অটোগ্রাফ খাতায় সই করিয়ে নিলেন। সন্ধ্যার ছায়ার কালাঝোর ও সিদ্ধেশ্বর ডুংরি গম্ভীর দেখাচ্ছে। পশুপতিবাবু ও কমল বেড়াতে এল আমার বাসার। আমি রোজ সুবর্ণরেখার তীরের চারা শাল ওভেদবনের মধ্যে রাঙামাটির ওপর দুপুর রোদে চুপ করে বসে থাকতুম। এই বেড়ানোর আননটা যেখানে.নেই সেখানে আমার ভাল লাগে না । গালুডি আগে এমনি ছিল, আজকাল সেখানে না আছে বন, না আছে दि. ब्र. 8-२e