পাতা:বিভূতি রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড).djvu/৪০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিভূতি-রচনাবলী في بيريا চায়ের দোকানে বসে আডডা দিতে দিতে চা খাই। সেই দিনই রাত ন’টায় কমলরাণীর নিমন্ত্রণে ওদের সঙ্গে "বিশ বছর আগে দেখে,এলুম রঙমহলে। মন্মথ রায়ও একদিন কুম্কুম্ দেখবার নিমন্ত্রণ করেছিলেন । অনেক ঘটনা ঘটে গিয়েচে এই দেড় মাসের মধ্যে। সুপ্রভার সঙ্গে দেখা করতে ঈস্টারে শিলং গেলুম। সেখানে জর্জিনা ও সেবা প্রথমে এসে বল্লে, সুপ্রভা ছুটিতে মিরালী চলে গিয়েচে । তারপর হাসতে হাসতে সুপ্রভা এল। ক'দিন খুব বেড়ানো গেল। ওখান থেকে চলে আসার কিছুদিন পরে ঘাটশীল গেলুম—এবং সেখান থেকে এসে ঢাকা গেলুম রেডিওতে বক্তৃতা দিতে। রত্ন দেবীর বাবার বাড়ি গিয়ে উঠলুম। বেশ কাটল সেখানে। ইতিমধ্যে স্বপ্রভার বিবাহ হয়ে গেল গত ১৫ই বৈশাখ। আমি গত শনিবারের সাহিত্য-বাসর উপলক্ষ্যে মুন্সেফবাবুর বাড়িতে গেলুম। মায়া ও কল্যাণী ছাড়লে না—ওদের বাড়িতে রইলুম। রাত্রে ওদের ছাদে গল্প। পরদিন আমাদের পুরোনো বাসায় গেলুম। সেই জানলার ধারে দাড়াই। পাচী এসেচে, দেখা হল। ● আজ দেশ থেকে ফিরলুম। ঘাটশীল যাব গ্রীষ্মের ছুটি প্রায় শেষ হয়ে গেল। খুকু বনগায়ে এসেছিল অনেকদিন পরে, ওর সঙ্গে দেখা হল দু'তিনদিনের জন্তে । কল্যাণী খুব সেবাযত্ন করেছিল। গ্রীষ্মের ছুটিটা এবার কি আননেই কাটল ! রোজ নদীজলে নাইতে নেমে সে কি আনন্দ । বিশেষ করে একদিন অনেক রাত্রে বনগা খুকুদের বাড়ি থেকে ফিরে। আর একদিন কুঠার মাঠের আঘাটার পাশে নেমে। সেই রকম আম কুড়চ্চে পাগলার মা, হাজারী—আজও দেখে এসেচি। এখনও খুব আম। এবার আদৌ বৃষ্টি হয়নি। আজ আষাঢ় মাস, দেশের পথে সৰ্ব্বত্র ধুলো, খান-ডোবা সব শুকনো, ভীষণ গরম, এমন কখনো দেখিনি। সুপ্রভা লুকিয়ে পত্র লিখেছিল, বেলডাঙ্গার আইনদির বাড়ির পিছনে বসে তা পড়েছিলুম—আর চিঠি লিখেছিল জর্জিন। কাল ন'দি চলে গেল গোপালনগর স্টেশনে কলকাতার গাড়িতে,খুকুর সঙ্গে ওরা যাবে মানকুণ্ডু। কাল খুকুও চলে গেল বনগা থেকে। পরশু সাব-ডেপুটি অজিত বস্ব, মুন্সেফ, হরিবাবু, সবাই গিয়ে ছিলেন আমার বাড়িতে। আমাদের ভিটেতে গিয়ে মায়ের কড়াখানা দেখলেন। তেঁতুল গাছের ওপর আমায় বসিয়ে ফটাে নিলেন। বাবার স্থতিস্তম্ভ সম্বন্ধে কথাবার্তা হল। কাল সন্ধ্যায় জ্যোৎস্নালোকে বেলডাঙ্গা থেকে বেরিয়ে আসবার পর কুঠীর মাঠের আঘাটায় স্নান করে ফিরচি, আমাদের বাড়ির পেছনের বাশবনে কোথাও জ্যোৎস্না, কোথাও জোনাকির বাক জলচে–থকে দাড়িয়ে রইলুম কতক্ষণ। এক অদৃষ্ট অনুভূতি ! আবার যেন আমি বালক হয়ে গিয়েচি, এইমাত্র ভরতদের সঙ্গে সলতেখাগি আমতলাটার ময়না গাছের ধারে আম কুড়িয়ে ফিরচি–সারা গা আমার শৈশবের পরিবেশ অনুযায়ী বদলেচে—জ্যেঠাইমা, সইম, হরিকাকা-সেই সময়ের মনোভাব—সংকীর্ণতা, দারিদ্র্য, অথচ কি মহাৰ্ঘ আনন্দ...তা বর্ণনা করা যায় না—সে এক জগৎ-যেমন এবার আমি বিলবিলের ধারে বলে বসে কত মেয়েদের জলে ওঠা নামা করতে দেখতুম, ওরা কাপড় কাচছে, বাসন মাজচে, পরম্পরের সঙ্গে গল্প করচে —so o go wo...the little pool in the woods—cow aims fross so footবিলের ডোবাটার। ও নিয়ে একটা গল্প লিখব। এরা এই ক্ষুদ্র জগতে সবাই কিন্তু যথেষ্ট সন্তুষ্ট আছে—এর বেশী এর চারও না, বোঝেও না কিন্তু। পাগলার মা আম কুড়িয়ে সন্তুষ্ট, নেলির মাথালা থালা আমসত্ব দিয়ে সন্তুষ্ট, হরিপদদা গারের মোড়লী করে সন্তুষ্ট । এর বেশী