পাতা:বিভূতি রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড).djvu/৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দৃষ্টি-প্রদীপ b"> —আপনি বিশ্বাস করুন, আমি তা শুনিনি। কে আমার বলেচে আপনি খোজ নিন ? –ওখানে আমাদের আগেকার নায়েব ছিল, ওটা তার কোয়ার্টার ছিল, সে বছর-চারেক আগে মারা গিয়েছে, শোননি এ-কথা ? —ন। আমি শুনিনি। আরও কথা বলি শুনুন, আপনার ছেলে হওয়ার আগের দিন কলকাতায় আপিসে আপনাকে কি বলেছিলুম মনে আছে ? বলেছিলুম একটি খোকা দাড়িয়ে আছে—দরজা খুলে মেজবৌরাণী এসে তাকে নিয়ে গেলেন—এ কথা বলেছিলুম কিনা ? মনে ক’রে দেখুন। —হঁ্য, আমার খুব মনে আছে। সেও তুমি জানতে না যে আমার স্ত্রী আসন্ন-প্রসব ছিল ? যদি আমি বলি তুমি একটা বেশ চাল চেলেছিলে—যে কোনো একটি সন্তান তো হ’তই—তুমি অন্ধকারে ঢ়িল ছুড়েছিলে, দৈবাৎ লেগে গিয়েছিল। শালটিানরা ও রকম বুজরুকি করে—আমি কি বিশ্বাস করি ওসব ভেবেচ ? —বুজরুকি কিসের বলুন ? আমি কি তার জন্তে আপনার কাছে কিছু চেয়েছিলুম ? বা আর কোনোদিন সে-কথার কোনো উল্লেখ করেছিলুম ? আমি জানি আমার এ একটা ক্ষমতা—ছেলেবেলায় দাৰ্জিলিঙের চা-বাগানে আমরা ছিলাম, তখন থেকে আমার এ ক্ষমতা আছে । কিন্তু এ দেখিয়ে আমি কখনও টাকা রোজগারের চেষ্টা তো করিনি কারোর কাছে ? বরং বলিই নে— মেজবাবু অসহিষ্ণুভাবে বললেন—অল ফিডলস্টিকৃ—মনের ব্যাপার তুমি কিছু জানো না। তোমাকে বোঝাবার উপায় আমার নেই। ইট্‌ প্লেজ, কুইয়ার টিক্স উইথ, আস-যদি ধরে নিই তুমি মিথ্যাবাদী নও—ইউ মে বি এ সেলফ, ডিলিউডেড, ফুল এবং আমার মনে হয় তুমি তাই-ই। আর কিছু নয়। যাও এখন— আমি চলে এলাম। নবীন মুহুরী আমার পিছু পিছু এসে বললে—তোমার সাহস আছে বলতে হবে—মেজবাবুর সঙ্গে অমন ক’রে তর্ক আজ পর্যন্ত কেউ করেনি। না! যা হোক, তোমার সাহস আছে। আমার তো ভয় হচ্চিল এই বুঝি মেজবাবু রেগে ওঠেন— আমি জানি নবীনই আমার নামে লাগিয়েছিল, কিন্তু এ নিয়ে ওর সঙ্গে কথা কাটাকাটি করবার প্রবৃত্তি আমার হ’ল না। কেবল একটা কথা ওকে বললাম—দেথ নবীন-দা, চাকুরির ভয় আমি আর করি নে। যে-জন্তে চাকুরি করছিলাম, সে কাজ মিটে গিয়েচে । এখন আমার চাকুরি করলেও হয় না-করলেও হয়। ভেবো না, আমি নিজেই শীগগির চলে যাবো ভাই । ক-দিন ধরে একটা কথা ভাবছিলাম। এই যে এতগুলো পাড়াগেরে গরীব চাষীলোক এখানে পুজো দিতে এসেছিল—এর সকলেই মূখ, ভগবানকে এরা সে ভাবে জানে না, এর চেনে বটতলার গোসাইকে । কে বটতলার গোসাই ? হয়ত একজন ভক্ত বৈষ্ণব, গ্রাম্য লোক, বছর পঞ্চাশ আগে থাকত ওই বটতলার। সেই থেকে লৌকিক প্রবাদ এবং বোধ হয় মেজবাবুদের অর্থগৃঃ ত দুটােতে মিলে বটতলাকে করেচে পরম তীর্থস্থান। কোথায় ভগবান, কোথায় প্রথিতযশা ঐতিহাসিক অবতারের দল—এই বিপুল জনসভ্য তাদের সন্ধানই রাখে না হয়ত । এদের এ কি ধৰ্ম্ম ধৰ্ম্মের নামে ছেলেখেলা । কিন্তু নিমৰ্চাদকে দেখেচি। তার সরল ভক্তি, তাদের ত্যাগ। তার স্ত্রীর চোথে যে অপূর্ব ভাববৃষ্টি, যা সকল ধৰ্ম্মবিশ্বাসের উৎসমুখ—এসব কি মূল্যহীন, ভিত্তিহীন, জলজ শেওলার মত মিথ্যার মহাসমুদ্রে ভাসমান ? এ রকম কত নিমচাঁদ এসেছিল মেলায়। জ্যাঠাইমাদের আচারের শেকলে আষ্ট্রেপৃষ্ঠে বাধা ঐশ্বর্ঘ্যের ঘটা দেখানে দেবার্টনার চেয়ে এ আমার ভাল वि. ब्र 8-४