পাতা:বিভূতি রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড).djvu/১১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SSషి विडूउि-क्रनावलौ ভালই লাগিত—কারণ তাহারা যে জগৎটাতে বাস করিত—অপর কাছে সেটা একেবারেই অপরিচিত-তাহাদের মোহ ছিল, সেই অজানা ও অপরিচয়ের মোহ, কাশীর কথক ঠাকুর কি অমরকটকের আজবলাল ঝা-কে যে কারণে ভাল লাগিয়াছিল। কিন্তু এরা সে ধরণের অনন্যসাধারণ নয়, নিতান্তই সাধারণ ও নিতান্ত ক্ষুদ্র । কাজেই বেশীক্ষণ থাকিলেই হাঁপ ধরে । অপর নতুন ঘরটাতে দরজা জানালা কম, দক্ষিণ দিকের ছোট জানালাটা খলিলে পাশের বাড়ির ইন্ট-বার করা দেওয়ালটা দেখা যায় মাত্র। ভাবিল—তবুও তো একা থাকতে পারব —লেখাটা হবে । বাড়ি বদল করার দিনটা জিনিসপত্র সরাইতে ও ঘর গছাইতে সম্প্রধ্যা হইয়া গেল। হাত পা ধুইয়া ঠাণ্ডা হইয়া বসিল । আজ রবিবার ছেলে-পড়ানো নাই । বাপ ! নিশ্বাস ফেলিয়া বাঁচিল । সেই অতটুকু ঘর, কয়লার ধোঁয়া আর রাজ্যের প্যাকবাক্সের টাপিন তেলের মত গন্ধ । আজ কয়েক দিন হইল কাজলের একখানা চিঠি পাইয়াছে, এই প্রথম চিঠি, কাটাকুটি বানান ভুলে ভত্তি । আর একবার পত্ৰখানা বাহির করিয়া পড়িল -বার-পনেরো হইল এইবার লইয়া । বাবার জন্য তাহার মন কেমন করে, একবার যাইতে লিখিয়াছে, একখানা আরব্য উপন্যাস ও একটা লণ্ঠন লইয়া যাইতে লিখিয়াছে, যেন বেশী দেরি না হয় । অপর ভাবে ছেলেটা পাগল, লণ্ঠন কি হবে ? লণ্ঠন ?--দাখ তো কান্ড। উঠিয়া ঘরে আলো জালিয়া ছেলের পত্রের জবাব লিখিল । সে আগামী শনিবার তাহাকে দেখিতে যাইতেছে । সোম ও মঙ্গলবার ছয়টি, ট্রেনে স্টীমারে বেজায় ভিড় । খলনার স্টীমার এবারও ফেল করিল । *বশুরবাড়ি পে"ছিতে বেলা দপুর গড়াইয়া গেল । নৌকা হইতেই দেখে কাজল ঘাটে তাহার অপেক্ষায় হাসিমুখে দাঁড়াইয়া—নৌকা থামিতেনা-থামিতে সে ছটিয়া আসিয়া তাহাকে জড়াইয়া ধরিল। মুখ উচু করিয়া বলিল – বাবা, —আমার আরব্য উপন্যাস ? — অপর সে-কথা একেবারেই ভুলিয়া গিয়াছে । কাজল কাঁদকাঁদ সরে বলিল হৰ্ণ-উ* বাবা, এত ক’রে লিখলাম, তুমি ভুলে গেলে-- লন্ঠন ?--- অপ বলিল,—আচ্ছা তুই পাগল নাকি—কি করব ?-- কাজল বলিল - সে লণ্ঠন নয় বাবা ।- "হাতে বুলনো যায়, রাঙা কাচ, সবুজ কাচ বের করা যায় এমনি ধারা । হ:-উ", তুমি আমার কোন কথা শোনো না। একটা আশি আনবে বাবা ? —আশি* ?—কি করবি আশি । -- আমি আশিতে ছিয়া দেখবো— 敏 অপণার দিদি মনোরমা অনেকদিন পরে বাপের বাড়ি আসিয়াছেন । বেশ সন্দেরী, অনেকটা অপণার মত মুখ । ছোট ভগ্নীপতিকে পাইয়া খাব আহমাদিত হইলেন, সবগগত মা ও বোনের নাম করিয়া চোখের জল, ফেলিলেন । অপর তাহার কাছে সত্যকার স্নেহভালবাসা পাইল । সন্ধ্যাবেলা অপ বলিল – আসন দিদি, ছাদের উপর বসে আপনার সঙ্গে একটু গল্প করি । ছাদ নিষ্ঠজন, নদীর ধারেই, অনেকদরে পযfiস্ত'দেখা যায় । অপর বলিল-আমার বিয়ের রাতের কথা মনে হয় মনোরমাদি । মনোরমা মদ হাসিয়া বলিলেন -সেও যেন এক স্বপ্ন ! কোথা থেকে কি যেন সব হয়ে গেল ভাই-এখন ভেবে দেখলে—সেদিন তাই এই ছাদ্রের উপর বসে অনেকক্ষণ ধরে ভাবছিলম—তোমাকেও তো আমি সেই বিয়ের পর আর কখনও দেখি নি । এবার এসেছিলম ভাগ্যিস, তাই দেখাটা হ'ল।