পাতা:বিভূতি রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড).djvu/১২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অপরাজিত ১২৫ যুবকটি বলিল-আমাদের মধ্যে আপনার বই নিয়ে খাব আলোচনা—আজ্ঞে হ্যাঁ । ওবেলা বাড়িতে থাকবেন ? “বিভাবরী’ কাগজের এডিটার শ্যামাচরণবাব আপনার সঙ্গে দেখা করতে আসবেন, আমি—আরও তিন-চার জন সেই সঙ্গে আসব –তিনটে ? আচ্ছা, তিনটেষ্ট তেই ভাল । আরও খানিক কথাবাত্তার পর যুবক বিদায় লইলে অপর ছেলের দিকে চাহিয়া বলিল,— উস-স-সা-স, খোকা ? ছেলে ঠোঁট ফুলাইয়া বলিল—আমি আর তোমার সঙ্গে কথা কব না বাবা—না বাপ আমার, লক্ষী আমার, রাগ ক'রো না । কিন্তু কি করা যায় বল তো ? —কি বাবা ? —তুই এক্ষুনি ওঠ, পড়া থাক এবেলা, এই ঘরটা ঝেড়ে বেশ ভাল ক'রে সাজাতে হবে— আর ওই তোর ছে’ড়া জামাটা তত্ত্বপোশের নিচে লুকিয়ে রাখ দিকি —ওবেলা বিভাবরী'র সম্পাদক আসবে - —“বিভাবরী’ কি বাবা ? —“বিভাবরী’ কাগজ রে পাগল, কাগজ—দৌড়ে যা তো, পাশের বাসা থেকে বালতিটা চেয়ে নিয়ে আlয় তো ! বৈকালের দিকে ঘরটা একরকম মন্দ দাঁড়াইল না । তিনটার পরে সবাই আসিলেন । শ্যামাচরণবাবু বলিলেন--আপনার বইটার কথা আমার কাগজে যাবে আসছে মাসে । ওটাকে আমিই আবিৎকার করেছি মশাই! আপনার লেখা গলপটলপ ? দিন না । পরের মাসে বিভাবরী’ কাগজে তাহার সম্বন্ধে এক নাতিদীর্ঘ প্রবন্ধ বাহির হইল, সঙ্গে সঙ্গে তাহার গলপটাও বাহির হল । শ্যামাচরণবাব, ভদ্রতা করিয়া প"চশটা টাকা গল্পের মতুল্যস্বম্প লোক মারফৎ পাঠাইয়া দিয়া আর একটা গলপ চাহিয়া পঠাইলেন । অপর ছেলেকে প্রবন্ধটি পড়িতে দিয়া নিজে চোখ ধ.জিয়া বিছানায় শ্যইয়া শুনিতে লাগিল । কাজল খানিকটা পড়িয়া বলিল-বাবা, এতে তোমার নাম লিখেছে যে ! অপর হাসিয়া বলিল—দেখেছিস খোকা, লোক কত ভাল বলছে আমাকে ? তোকেও একদিন ওই রকম বলবে, পড়াশুনো করবি ভাল করে, বুঝলি ? দোকানে গিয়া শুনিল বিভাবরী'তে প্রবন্ধ বাহির হইবার পর খব বই কাটিতেছে— তাহা ছাড়া তিন বিভিন্ন স্থান হইতে তিনখানি পত্র আসিয়াছে। বইখানার অজস্র প্রশংসা ! একদিন কাজল বসিয়া পড়িতেছে, সে ঘরে ঢুকিয়া হাত দ খানা পিছনের দিকে লুকাইয়া বলিল,—খোকা, বল তো হাতে কি? কথাটা বলিয়াই মনে পড়িয়া গেল, শৈশবে একদিন তাহার বাবা-সেও এমনি বৈকাল বেলাটা - তাহার বাবা এইভাবেই, ঠিক এই কথা বলিয়াই খবরের কাগজের মোড়কটা তাহার হাতে দিয়াছিল । জীবনের চকু ঘুরিয়া ঘরিয়া কি অদ্ভুত ভাবেই আবত্তিত হইতেছে,চিরযুগ ধরিয়া ! কাজল ছটিয়া গিয়া বলিল,—কি বাবা,দেখি ? —পরে বাবার হাত হইতে জিনিসটা লইয়া দেখিয়া বিস্মিত ও পুলকিত হইয়া উঠিল । অজস্র ছবিওয়ালা আরব্য উপন্যাস । দাদামশায়ের বইয়ে তো এত রঙীন ছবি ছিল না ? নাকের কাছে ধরিয়া দেখিল কিন্তু তেমন পরনো গন্ধ নাই, সেই এক অভাব । অনেক দিন পরে হাতে পয়সা হওয়াতে সে নিজের জন্যও একরাশ বই ও ইংরেজী भIाशाछिन कर्गनम्ला ठानिम्नाएछ । পরদিন সে বৈকালে তাহার এক সাহেব বন্ধর নিকট হইতে একখানি চিঠি পাইয়া গ্রেট ইস্টান' হোটেলে তাহার সঙ্গে দেখা করিতে গেল । সাহেবের বাড়ি কানাডায়, চল্লিশ