পাতা:বিভূতি রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড).djvu/১৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অপরাজিত $6A ক৪ি হইতে হলদে পাখি উড়িয়া আর একটা কাঞ্চতে বসিতেছে । একটা জায়গায় ঘনবনের মধ্যে সীড়ি পথ, বড়গাছের পাতার ফাঁক দিয়া ঝলমলে পরিপণ" রৌদ্র পড়িয়া কাঁচ, সবুজ পাতার রাশি স্বচ্ছ দেখাইতেছে, কেমন একটা অপবে সাগন্ধ' উঠিতেছে বনঝোপ হইতে —সে হঠাৎ থমকিয়া দাঁড়াইয়া গেল সেদিকে চাহিয়াই ।•••তাহার সেই অপদেব শৈশব-জগৎটা — ঠিক এইরকম সড়ি বনের পথ বাহিয়া এমনি রৌদ্রালোকিত ঘড়ঘডাকা দীঘ শ্রাবণ দিনে, দপরে ঘুরিয়া বৈকাল আসিবার পর্ব সময়টিতে সে ও দিদি চৌশালিকের বাসা, পাকা মাকালফল, মিষ্টি রাংচিতার ফল খুজিয়া বেড়াইত—দপুর রোদের গন্ধমাখানো, কত লতা দোলানো, সেই রহস্যভরা, করণ, মধরে আনন্দলোকটি “মাইল বাহিয়া এ গতি নয়, সেখানে যাওয়ার যানবাহন নাই—প,থিবীর কোথায় যেন একটি পথ আছে যাহা সময়ের বীথিতল বাহিয়া মানুষকে লইয়া চলে তার অলক্ষিতে । ঘন ঝোপের ভিতর উকি মারিতেই চক্ষের নিমেষে তাহার ছাবিশ বৎসর প্রবের শৈশধলোকটিতে আবার সে ফিরিয়া গেল, যখন এই বন, এই নীল আকাশ, উত্তজবল আনন্দভরা এই রৌদ্রমাখানো শ্রাবণ দপরটাই ছিল জগতের সবটুকু—বাহিরের বিশ্ববটা ছিল অজানা, সে সম্বন্ধে কিছু জানিতওঁ না, ভাবিতও না—রঙে রঙে রঙীন রহস্যঘন সেই তার প্রাচীন দিনের জগৎটা !-- এ যেন নবযৌবনের উৎস-ম,খ, মন বার বার এর ধারায় স্নান করিয়া হারানো নবীনত্বকে ফিরিয়া পায়—গাছপালার সবুজ, রৌদ্রলোকের প্রাচুর্য্য, দরগাটুনটুনির অবাধ কাকলী—ঘন সড়ি পথের দরপারে শৈশবসঙ্গিনী দিদির ডাক যেন শোনা যায়।••• কতক্ষণ সে অবাক হইয়া দাঁড়াইয়া রহিল—বধাইবার ভাষা নাই, এ অনুভুতি মানুষকে বোবা করিয়া দেয় । অপর চোখ ঝাপসা হইয়া আসিল—কোন দেবতা তার প্রাথনা শুনিয়াছিলেন ? তার নিশ্চিন্দিপ.র আসা সাথক হইল । আজ মনে হইতেছে যৌবন তার আগের দেবতাদের মত অক্ষয়, অনন্ত সে জগৎটা আছে —তার মধ্যেই আছে । হয়তো কোনও বিশেষ পাখির গানের সরে, কি কোনও বনফুলের গন্ধে শৈশবের সে হারানো জগৎটা আবার ফিরিবে । অপর কাছে সেটা একটা আধ্যাত্মিক অনভুতি, সৌন্দয্যের প্লাবন বহাইয়া ও মুক্তির বিচিত্র বাৰ্ত্তা বহন করিয়া তা আসে,যখনই আসে । কিস্ত ধ্যানে তাকে পাইতে হয়, শধ অনুভূতিতেই সে রহস্য-লোকের সন্ধান মিলে ! তারছেলে কাজল বৰ্ত্তমানে সেই জগতের অধিবাসী । এজন্য ওর কল্পনাকে অপ সঞ্জীবিত রাখিতে প্রাণপণ করে—শক ও হণের মত বৈষয়িকতা ও পাকাবুদ্ধির চাপে সে-সব সোনার স্বপ্নকে রাঢ়হস্তে কেহ পাছে ভাঙিয়া দেয়—তাই সে কাজলকে তার বৈষয়িক বশীর মহাশয়ের নিকট হইতে সরাইয়া আনিয়াছে--নিশ্চিন্দিপুরের বাশবনে, মাঠে, ফুলে ভরা বনঝোপে, নদী-তীরের উলখেড়ের নিজ’ন চরে সেই অদশ্য জগৎটার সঙ্গে ওর সেই সংযোগ স্হাপিত হউক—যা একদিন বাল্যে তার নিজের একমাত্র পাথি'ব ঐ"র্য" ছিল--- নিশ্চিন্দিপুর ১৭ই আষাঢ় ভাই প্রণব, অনেকদিন তোমার কোনো সংবাদ পাই নি, কোনো সন্ধানও জানতুম না, হঠাৎ সেদিন কাগজে দেখলাম তুমি আদালতে কমানিজম নিয়ে এক বক্ততা দিয়েছ, তা থেকেই তোমার বৰ্ত্তমান অবস্হা জানতে পারি । তুমি জান না বোধ হয় আমি অনেকদিন পর আমার গ্রামে ফিরেছি। অবশ্য দদিনের