পাতা:বিভূতি রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড).djvu/১৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কেদার রাজা సిa:్స সংসারে—এই বিধবা মেয়ে শরৎ ছাড়া । মানে, এখন এই গ্রামের বাড়িতে নেই। কেদার রাজার একমাত্র পত্র বহুদিন যাবৎ নিরদেশ । কোন সন্ধানই তার পাওয়া যায় নি গত দশ বৎসরের মধ্যে । 鬱 কেদার স্নান সেরে এসে খেতে বসলেন। পাথরের খোরায় বাকড়ি কালো আউশ চালের ভাত ও ডাঁটা চচ্চড়ি । খোরার পাশে একটা ছোট কাসার বাটিতে কাঁচা কলাইয়ের ডাল । কেদার নাক সিটিকে বললে, কি ছাই-রাই-ই রাঁধস রোজ, তোর রান্নম নিত্যি খাওয়া এক ঝক:মারি । শরৎ চুপ করে রইল । নীরবে কয়েক গ্রাস উদরগহ করে ক্ষুধার প্রথম দিকের জালাটা খানিকটা মিটিয়ে কেদার মেয়ের দিকে তিরস্কারসচক দটি নিক্ষেপ করে বললেন, আহা, কি ডাল রাঁধবার ছববা । আর এই একঘেয়ে ডাটা চচ্চড়ি, এ রোজ রোজ তুই পাস কোথায় বাপ ! —আমার কি দোষ, আমি কি বাজারে যাই না কি ? ষা পাই হাতের কাছে তাই রধি । কে এনে দিচ্ছে বল না— কেদার মেয়ের দিকে চেয়ে বললেন, তার মানে ? তার মানে কি শরৎ বাবাকৈ ভাল ভাবেই বুঝিয়ে বলতে,পারত, ঝগড়ায় সে-ও কম যায় না—কিস্ত বাবার মেজাজ সে উত্তমরুপে জানে, এখনি রাগ করে ভাতের থালা ফেলে উঠে যাবেন এখন । সুতরাং চুপ করেই গেল সে । কেদার পাতের চারিদিকে ডাল-মাখা ভাত ফেলে ছড়িয়ে ছেলেমানষের মত অগোছালো ভাবে আহার সম্পন্ন করে অপ্রসন্ন মুখে উঠে বাবার উদ্যোগ করতে শরৎ বললে—বসো বাবা, উঠো না, কিছ; তো খেলে না, একটু তেতুল দিয়ে খেয়ে নাও— কেদার রেগে বললেন, তোর মড়ে দিয়ে খাবো অকমার ঢেকি কোথাকার—অমন ছাই না রাঁধলেই না— শরৎও প্রত্যুত্তরে বললে, তাই খাও, আমার মড়ে খাও না—আমার হাড় জড়ক, আর সহ্যি হয় না— মাঝে মাঝে পিতাপত্রেীতে এমন স্বশস্থ বাধা এদের সংসারে সাধারণ ব্যাপারের মধ্যে দাঁড়িয়ে গিয়েছে । ব্লকদার খারাপ জিনিস খেতে পারেন না, অথচ এদিকে সংসারের সচ্ছলতার যে রপে, তাতে আউশ চালের ভাত জোটানোই দকর। এক পোয়া সষের তেল কলবাড়ি থেকে ধারে আসে, মাথায় মাখা সমেত সেই তেলে তিন দিন চালাতে হয়—সতরাং তরকারিতে জল-আছড়া দিয়ে রান্না ছাড়া অন্য উপায় নেই । তরকারি মুখরোচক হয় কোথা থেকে ? e অথচ শরৎ বাবাকে সে কথা বলতে পারে না । বড়ই রঢ়ে শোনায় সেটা। বাবার অথ’ উপাজনের অক্ষমতার প্রতি ইঙ্গিত করা হয় তাতে • এক যদি তিনি নিজে বুঝতেন, তবে সব মিটেই যেত। কিন্ত বাবা ছেলেমানষের মত অবঝে, তিনি দেখেও কিছল দেখেন না, বঝেও বোঝেন না—প্রৌঢ় পিতার এই বালম্বভাবের প্রতি স্নেহ ও কর্ণা-বশতঃই শরৎ কিছু বলতে পারে না তাঁকে । তার পর সে বাবার পাতেই খেতে বসে গেল । দিবানিদ্রা কেদার রাজার অভ্যাস নেই, দপরে খাওয়ার পর তিনি আটদশগাছা ছিপ— নানা আকারের, পটি মাছ থেকে রই কাৎলা ধরা পৰ্য্যস্ত, সতো—বড়শি বাঁধা, মাছধরা ভাঁড়, চারকাঠি, মশলা প্রভৃতি মাছ ধরবার সরঞ্জাম নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন । নিকমার কৰ্ম্ম ।