পাতা:বিভূতি রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড).djvu/১৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কৈদার রাজা పిaపి নেওয়া হয় না। কেদার অগত্যা জগন্নাথের কাছে গেলেন। জগন্নাথ গলার সরে নীচু করে বললেন, কাল রাত্তিরে নীল গোঁসাইয়ের মেয়েটা আফিম খেয়েছিল, জানো না ? কথাটা প্রথম থেকেই কেদারের ভাল লাগল না। তবুও তিনি বললেন, আফিম n কেন P--- জগন্নাথ চোখ মুখ ঘুরিয়ে হাসি-হাসি মুখে বললেন, আরে, এর আবার কেন কি কেদার রাজা ! বিধবা মেয়ে, সোমৰ্ত্ত মেয়ে, বাপের বাড়ি পড়ে থাকে—কোনো, ঘটনা-টটনা ঘটে থাকবে । কথায় বলে— কেদারের নিজের বাড়িতেও ওই বয়সের বিধবা মেয়ে, গল্প শুনবেন কি, জগন্নাথ চাটুজের কথার গঢ় ইঙ্গিত, শ্লেয ও ব্যঞ্জনা শুনে কেদার ভেতরে ভেতরে ভয়ে ও সঙ্কোচে আড়ষ্ট হয়ে উঠতে শুরু করলেন । তেল কিনতে এসে এমন বিপদে পড়বেন জানলে তিনি না হয় আজ তৈলবিহীন রান্নাই খেতেন । জগন্নাথ চাটুজ্জে বললেন, আমি শুনলাম কি করে বলি শোনো তবে । কাল আমি ক্ষেত্র ডাক্তারের বাড়িতে ডাক্তারের সরীর ব্ৰত উদযাপনে নেমস্তন্ন খেতে যাই, তাদের পরিবেশনের লোক হয় না, আমি আবার খাওয়ার পরে নিজে পরিবেশন করতে লাগলম । রাত প্রায় বারোটা হয়ে গেল । তখন ক্ষেত্র ডাক্তার বললে, এখানেই আমার বাইরের ঘরে বিছানা পেতে দিক, এখানেই শময়ে থাকুন-এত রাত্তিরে আর বাড়ি যায়-না— শয়ে আছি, রাত প্রায় তিনটের সময় নীল গোঁসাইয়ের বড় ছেলে ধীরেন এসে ডাৰ্ত্তারকে ডাকলে । আমি জেগে আছি, সব শনছি শয়ে শয়ে। ধীরেন কাঁদকাঁদ হয়ে বললে, শীগগির যেতে হবে ক্ষেত্রবাব, মীনা আফিম খেয়েছে— ডাক্তার বললে, কতক্ষণ খেয়েছে ? ধীরেন বললে, কখন যে খেয়েছিল তা তো জানা যায় না। নিজের ঘরে খিল দিয়ে শয়েছিল, এখন গোঙানি ও কাতরানির শব্দ শনে সবাই গিয়ে দেখে, এই ব্যাপার । সেই রাত্রে ক্ষেত্র ডাক্তার ছটে যায় । কত করে তখন বাঁচায় । তা ওরা ভাবে যে কাকপক্ষীতে বঝি টের পেলে না, কিন্ত আমি যে ক্ষেত্র ডাক্তারের বাইরের ঘরে শয়ে তা তো কেউ জানে না । সোমত্ত বিধবা মেয়ে মীনা, কি জানি ভেতরের ব্যাপারটা কি—কাল পড়েছে খারাপ কিনা—বলে আগন আর ঘি—আরে উঠলে যে, বোসো । বারে বারে বিধবা মেয়ের উল্লেখ কেদারের ভাল লাগছিল না—তা ছাড়া জগন্নাথ চাটুজে কি ভেবে কি কথা বলছে তা কেউ বলতে পারে না । লোক সবিধের নয় আদেী । সষের তেলের মায়া ছেড়ে দিয়েই কেদার উঠে পড়লেন, জগন্নাথ চাটুজের সামনে তিনি ধারের কথা বলতে পারবেন না সতীশকে। " জগন্নাথ চাটুজে বললেন, তা হ’লে নিতান্তই উঠলে কেদার রাজা, বাড়ি থাকো কখন হে —একবার তোমাদের বাড়িতে যাব যে—ভাবি যাব, কিন্ত গড়ের খাল পার হতে ভয় হয়, আর যে বনজঙ্গল গড়ের দিকটাতে । তা ছাড়া আবার সেই তিনি আছেন— জগন্নাথ চাটুজে হাত জোড় করে কার উদ্দেশে দু-তিনবার প্রণাম করলেন । কেদার বলে উঠলেন, আরে ও কখনো কেউ দেখে নি, এই তো শরৎ রোজ সন্ধ্যের সময় উত্তর দেউলে পিদিম দিতে যায়—একাই তো যায়—কিছল তো কখনো কই— ঝোঁকের মাথায় কথাটা বলে ফেলেই কেদার বুঝলেন কথাটা বলা তাঁর উচিত হয় নি— । জগন্নাথ চাটুজের পেটে কোন কথা থাকে না—এর কথা ওর কাছে বলে বেড়ানোই তাঁর স্বভাব-এ অবস্হায়—মেয়ের কথা তোলাই এখানে ভুল হয়েছে— কিন্ত জগন্নাথ অন্য দিক দিয়ে গেলেন পাশ কাটিয়ে । বললেন, তুমি বলছো কেদার