পাতা:বিভূতি রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড).djvu/১৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

పిసి ఆ বিভূতি-রচনাবলী কেদার বললেন, হ্যা, হ’্যা, আমি জানি। তবে সেই ছেলেবেলায় হয়তো দু-একবার দেখে থাকব, বাবাজি তো আস না গাঁয়ে বড় একটা—কাজেই এদানীং দেখি নি আর । প্রভাসের বয়স ত্রিশ-বরিশ, মাথায় কে’াকড়া চুলে টেরি কাটা, গায়ে সাদা আদির পাঞ্জাবী, জরিপাড় ধতি পরনে । সকলেই জানে প্রভাস চরিত্রহীন ও বওয়াটে, কিন্ত বড়লোকের ছেলের কাছে বাথ অনেকের অনেক রকম, মুখে কিছু বলতে সাহস করে না। সাতকড়ি চৌধুরী বললেন—প্রভাসকে আমরা ধরেছি, আমাদের পর্বপাড়ার ইস্কুলটার সম্বন্ধে কিছু বিবেচনা করকে । ওদের হাত ঝাড়লে পর্বোত । কেদার এক পাশে গিয়ে বসলেন । ব্যাপারটা কিছুক্ষণ পরে বুঝলেন, এ গ্রামের প্রাইমারী ইস্কুলের বাড়িটা পাকা করে দেবার জন্যে সবাই প্রভাসকে ধরেছে, শ-চার-পাঁচ টাকা ব্যয় করলে আপাততঃ বাড়িটা এক রকম দাঁড়িয়ে যায় । প্রভাস বলছিল—তা যখন আপনারা বলছেন, তখন দিয়ে দেব, তবে টাকা আপাততঃ এখন আনি নি, আপনারা যদি কেউ আমার সঙ্গে কলকাতায় গিয়ে— —আহা সে-জন্যে ভাবনা কি ? তুমি যখন হয় পাঠিয়ে দিও। তুমি বললেই আমরা কাজ আরম্ভ করে দিই । তোমার ভরসা পেলে আমরা করতে পারিনে এমন কি কাজ আছে ? কি বল হে জগন্নাথ খড়ো ? * জগন্নাথ চাটুজে সাতকড়ির কথায় কোনও উত্তর না দিয়ে কেদারের দিকে চেয়ে বললেন, তোমার কথা কি হচ্ছিল বলি। ইস্কুলটার জন্যে তোমার গড়বাড়ির পরোনো ইট কিছ দিতে হবে । কেদার দ্বিরক্তি না করে বললেন–নিও । * —ঠিক তো ? —নিশ্চয় । —তা হলে সব কথা তো মিটে গেল হে সাতু, কেদার রাজার ইট তার প্রভাসের টাকা, ইস্কুল বাড়ি তো পাকা হয়ে রয়েছে। এক ছিলিম তামাক খাও—বসো কেদার রাজা । প্রভাস উঠতে চাইলে—কিন্ত সাতকড়ি চৌধুরী বাধা দিলেন । চা হচ্ছে বাড়ির মধ্যে তার জন্যে, না খেয়ে যাবার যে নেই । 叠 কেদারের একটু চা খাবার ইচ্ছে ছিল না এমন নয়, সতরাং তিনিও চেপে বসলেন। জগন্নাথ চাটুজে তাঁর সঙ্গে তার নিজের সংসারের ঝঞ্জাটের গলপ শুরু করলে । মেজ ছেলেটার জর হচ্ছে আজ এক মাস, রোজ বিকেলে জর আসে, কত রকম কি করলেন, কিছুতেই জবর যাচ্ছে না । ও-পাড়ার যতীশ চকত্তির সঙ্গে জমি নিয়ে বিবাদ চলেছে গেয়োহাটিতে । জগন্নাথ বলে জমি আমার, যতীশ বলে আমার । প্রজারা ফলে খাজনা বন্ধ করেছে, দু-পক্ষের কাউকেই খাজনা দেয় না । কেদার বললেন, কেন জমির, পড়চা দেখলেই তো মিটে যায়—কার জমি লেখাই তো 可化区一 —আরে তা কি আর দেখা হয় নি ভাবছ কেদার রাজা ? পড়চা দন্টে জমি সনাক্ত করতে হবে না ? —পড়চা দেখে যদি জমি সনাক্ত করতে না পারো, তা হলে আমীন ডেকে মীমাংসা করে নাও । সেটেলমেণ্টের ম্যাপ আছে, তাই দেখে আগে মেপে নেবার চেষ্টা কর না কেন ? —তুমি একদিন এসো না ভায়া । তুমি ম্যাপ দেখে একটা মীমাংসা দাও না করে ? জমিজমার কাজ তুমি তো খুব ভাল বোঝ । —কেদার-দা সত্যিই ভাল জানে জমিজমা-সংক্রান্ত কাজ–কিন্ত মন এদিকে দিতে চায় না