পাতা:বিভূতি রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড).djvu/২১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কেদার রাজা ఇSరి কত সংসারের কথা, কত ধরণের সুখ-দঃখের কাহিনী । বড় বড় আম কাঁঠালের বাগান, যা তাদের গড়ের বাগানের চেয়েও অনেক বড়, পঞ্চাশ বিঘের কলমের আমবাগান ; কত বড় বাড়ি, তাদের মেয়েদের বেীদের কথা, দিগন্তবিস্তীণ মাঠ, মাঠের মধ্যে বাবলা গাছের সারি, শেওড়াবন, শিরীষের ফল পেকে ফেটে কালো বাঁচির রাশি ছড়িয়ে আছে ; উইয়ের ঢিবির পাশে বনধাতুরার ঝোপ । শরৎ তন্ময় হয়ে শুনতো ••• 纖 অন্য এক জীবন, অন্য এক অস্তিত্বের বাত্ত বহন করে আনতো এ সব গলপ । আজ সে মেয়ে হয়ে জন্মেছে—তার হাত-পা বাঁধা, কোথাও যাবার উপায় নেই, কিছু দেখবার উপায় নেই—তার ওপর রয়েছেন বাবা, বন্ধ, সদানন্দ বালকের মত সরল, নিৰিব’কার । তার পরে এল প্রভাসদা । প্রভাসদা এল আর এক জীবনের বাত্তা নিয়ে । শহরের সহস্র বৈচিত্র্য ও জাঁকজমক আছে সে কাহিনীর মধ্যে। মান,ষ যেখানে থাকে অত অদ্ভুত আমোদ-প্রমোদের মধ্যে ডুবে— নিত্য নতুন আনন্দের মধ্যে যেখানে দিন কাটে, দেখতে ইচ্ছে হয় শরতের সে দেশ কেমন । খুব বড় একটা আশা ও আকাংক্ষা শরতের মনে জেগেছে প্রভাসের সঙ্গে সাক্ষাৎ হওয়ার পর থেকে । 辑 তার পরে এই রাজলক্ষী, ষোল বছরের কিশোরী মেয়ে তো মোটে—এরও নাকি একঘেয়ে লাগছে আজকাল গড়শিবপুরের জীবন । ওর বয়সে শরৎ শােধর শিবপুজো করেছে বসে বসে দীঘির ঘাটে বোধনের বেলতলায়, অত সে বুঝতও না, জানতও না । কিন্ত আজকালের মেয়েদের মন আলাদা । শরৎ যে কালের মেয়ে, সে কাল কি আছে ? রাজলক্ষ্যী শরতের দিকে চেয়ে হঠাৎ বলে উঠল—”সত্যি শরৎদি— শরৎ মুখ নিচু করে বাসন মাজছিল, মুখ তুলে ওর দিকে চেয়ে বিস্ময়ের সরে বললে, কি রে ? —আচ্ছা, তোমার চেহারা দেখলে কে বলবে তোমার বয়স হয়েছে ! তোমাকে দেখে, আমি মেয়েমানুষ, আমারই চেখের পলক পড়ে না শরৎদি—সত্যি-সত্যি বলছি । রাজকন্যে মানায় বটে । শরৎ সলঙ্গজ হাসি হেসে বললে, দর–বাদরী । —মিথ্যে বলি নি শরৎদি-এতটুকু বাড়িয়ে বলছি নে— —কেন নিজের দিকে তাকিয়ে বুঝি কথা বলিস নে ? —আর লৎজা দিও না দিদি, তোমার,পায়ে পড়ি। অনেক তাকিয়ে দেখেছি, কাজেই ওকথা মনে সব্বদাই জেগে থাকে। ওকথা তুলে আর কেন মন খারাপ করিয়ে দ্যাও ? শরৎ কিছুক্ষণ চুপ করেথেকে একটুইতস্ততঃ করে বললে—একটা কথা বলবো রাজলক্ষী ? —কি শরৎদি ঃ —আমায় অমন কথা আর বলিস নে । কে কোথায় থেকে শুনবে আর কি ভাববে। এ গাঁ বড় খারাপ হয়ে উঠেছে ভাই । —কেন শরৎদি এ কথা বললে ? —তোকে এতদিন বলি নি, কাউকে বলি নি বুঝলি ? কিন্তু যখন কথাটা উঠলই, তখন তোর কাছে বলি । —কি কথা বলে ফেল না ঝাঁ করে। হা করে তোমারমুখের দিকে কতক্ষণ চেয়ে থাকবো— —এ গায়ের কতকগুলো পোড়ারমথো ড্যাকরা জুটেছে, তাদের মা বোন জ্ঞান নেই— সেগুলোর জালায় আমার সন্দের সময় উত্তর দেউলে পিদিম দিতে যাবার যদি জো থাকে— সেগুলো কবে যাঁড়াতলার ঘাটসই হবে তাই ভাবি