পাতা:বিভূতি রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড).djvu/২৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

R8షి বিভূতি-রচনাবলী প্রভাস বললে, কেন সিনেমায় ? কি বলেন কাকাবাব—ৈ শরতের যদিও সিনেমা দেখবার আগ্রহ খুবই প্রবল, তবুও সে যেতে রাজী হ’ল না। বাবা সেই কোন সকালে দটো খেয়ে বেরিয়েছেন, এখন গিয়ে রান্না না চড়িয়ে দিলে আবার তিনি কখন খাবেন ? অগত্যা সকলে মোটরে আলোকোeজবল কলিকাতা নগরীর বিরাট সৌন্দয্যের মধ্যে দিয়ে এল আবার সেই রেলগেছের পলের মুখে । শরৎ এতক্ষণ চুপ করে ছিল, এইবার বললে, বাবাঃ, কত বড় শহর ? কুলও নেই, কিনারাও নেই । প্রভাস হেসে বললে, শরৎদি, একি আর তুমি ধৰ্ম্মম দাসপুর পেয়েছ ? গড়শিবপর থেকে ধম্মদাসপর যত বড়—ততখানি লম্বা হবে কলকাতা । আজ চলো, কাল আবার ভাল করে দেখো। আমাদের মলঙ্গা লেনের বাড়িতেও নিয়ে যাব । বেলগেছের পল ছেড়ে ৪-ধারের দশ্য যেন অনেকটা পাড়াগারের মত। বড় বড় বাগানবাড়ির ঘন বক্ষশ্রেণীর অন্তরালে দু-চারটি বিজলি বাতি, কোনো কোনো বাগানবাড়ি একদম অন্ধকার । এখানে এক পশলা বটি আসতে গাড়ির জানলার কাঁচ উঠিয়ে দেওয়া হ’ল হ্যান্ডেল ঘুরিয়ে—খাড়। সেঞ্জা পথ তীর হেডলাইটের আলোয় পণ্ট ফুটে উঠেছে চোখের সামনে—দ্রতগামী মোটর লফে লফে যেন সে সন্দীঘ পথটার খানিকটা করে অংশ এক এক কামড়ে গিলে খাচ্ছে । শরৎ হাঁ করে চেয়ে রইল । ওদের বাগানবাড়িটার ফটক দিয়ে গাড়ি ঢুকল ভেতরে । এ বাগানটা যেন আরও অন্ধকার । তবে সব ঘরেই বিজলি বাতির বন্দোবস্ত । প্রভাস কি টিপলে-পট্রেস পটুস-এ ঘরে আলো জনলে উঠল সবুজ কাঁচের বড় চিমনির মধ্যে দিয়ে—ধারাণদায় পটুস, পটুস-দীঘ বারান্দায় এদিক থেকে ওদিকে তিনটে আলো জলে উঠল । শরৎ বললে, আমায় দেখিয়ে দিন প্রভাসদ কি করে জবালতে হয়— পটুস-বাতি নিবে গেল—একদম অন্ধকার । —এইটে হাত দিয়ে টেপো শরৎদি—এই দেখো—এই জবললো—আবার উঠিয়ে দাও— এই নিবে গেল— শরৎ বালিকার মত খুশিতে বাম বার সুইচ টিপে আলো একবার জালিয়ে একবার নিবিয়ে দেখতে লাগল । 3. * —বাবা, দ্যাখো কি রকম, তুমি এরকম দাখো নি—. কেদার তাচ্ছিল্যের সরে বললেন, ওসণ তুমি দ্যাথো মা । আমি এর আগেও এসেছি, ওসব দেখে গিয়েছি— শরৎ বললে, সে কধে বাবা ? তুমি আবার কবে কলকাতায় এসেছিলে শুনি ? —তুই তখন জন্মাস নি। কলকাতায় তখন ঘোড়ার ট্রাম চলত। তোর মার জন্যে বড়বাজার থেকে ভাল তাঁতের ডুরে শাড়ী বিনে নিয়ে গিয়েছিলাম, তাই দেখে তোর মার কি আহমাদ ।--তখন ইলেকটির আলো সব রাস্তায় ছিল না, দু-একটা বড় রাস্তায় দেখেছিলাম । লোকের বাড়িতে তখন গ্যাস জৰলত— প্রভাস বিস্ময়ের সরে বললে, সত্যি কাকাবাব, আপনি যা বলছেন ঠিক তো । আমি বাবার মুখেও শুনেছি প্রথম হ্যারিসন রোডে ইলেকট্রিক লাইট জলে, তখন— —হ’্যা, হ’্যা, ওই যে রাস্তা বললে, ওখানেই আমি দেখেছি—অনেক দিনের কথা । ইতিমধ্যে ঝি এসে জানাল, উননে অচি দেওয়া হয়েছে । শরৎ তাড়াতাড়ি রান্নাঘরের