পাতা:বিভূতি রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড).djvu/২৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কেদার রাজা ՀծՏ পর দিন একেবারে দাপরের পরই প্রভাস মোটর নিয়ে এল। শরৎ চা করে খাওয়ালে প্রভাসকে-তারপর সবাই মিলে মোটরে গিয়ে উঠল। অনেক বড় বড় রাস্তা ও গাড়ি মোটরের ভিড় পেরিয়ে ওদের গাড়ি এসে একটা বড় বাড়ির সামনে দাঁড়াল । প্রভাস বললে, এই হলো সিনেমা ঘর—আপনারা গাড়িতে বসন, আমি টিকিট করে আনি— শরং বাড়িটার মধ্যে ঢুকে চারিদিকে চেয়ে আশ্চষ্য হয়ে গেল। কত উচু ছাদ, ছাদের গায়ে বড় বড় আলোর ডুম, গদি-অটিা চেয়ার বেঞ্চি ঝক ঝক তকতক করছে, কত সাহেব-মেম বাঙালীর ভিড়। - - কেদার বললে, এ জায়গাটার নাম কি হে প্রভাস ? —আজ্ঞে এ হ'ল এলফিনস্টোন পিকচার প্যালেস—একটা পাশি কোম্পানীর । —বেশ বেশ । চমৎকার বাড়িটা—না মা শরৎ ? থাকি জঙ্গলে পড়ে, এমন ধারাটি কখনো দেখি নি—আর দেখবোই বা কোথায় ? ইচ্ছে হয় সতীশ কল, ছিবাস এদের নিয়ে এসে দেখাই । কিছুই দেখলে না ওরা, শধ তেল মেপে আর দড়ি-পাল্লা ধরেই জীবনটা কাটালে । بيتينيه @縣 সারা ঘর অন্ধকার হয়ে গেল । কেদার বলে উঠলেন—ও প্রভাস, এ কি হ’ল ? ওদের আলো খারাপ হয়ে গেল বুঝি ? প্রভাস নিম্নসারে বললে, চুপ করন কাকাবাবু, এবার ছবি আরম্ভ হবে। 叠 সামনে সাদা কাপড়ের পদার্টার ওপরে যেন জাদুকরের মন্ত্রবলে মায়াপরেীর সটি হয়ে গেল, দিব্যি বাড়িঘর, লোকজন কথা বলছে, রেলগাড়ী, ছুটছে, সাহেব মেমের ছেলেমেয়েরা • হাসি খেলা করছে, কাপড়ের পদার ওপরে যেন আর একটা কলকাতা শহর । কিন্তু ছবিতে কি করে কথা বলে ? কেদার অনেক বার ঠাউরে দেখবার চেণ্টা করেও কিছ মীমাংসা করতে পারলেন না। অবিশ্যি এর মধ্যে ফাঁকি আছে নিশ্চয়ই, মানুষের পেছন থেকে কথা বলছে কৌশল করে, মনে হচ্ছে যেন ছবির মুখ দিয়ে কথা বেরচ্ছে—কিন্তু কেদার সেটা ধরে ফেলবার অনেক চেণ্টা করেও কৃতকাযf্য হতে পারলেন না । একবার একটা মোটর গাড়ির আওয়াজ শুনে কেদার দস্তরমত অবাক হয়ে গেলেন। মানষে কি মোটর গাড়ির আওয়াজ বের করে মখ দিয়ে ? বোধ হয় কোনো কলের সাহায্যে ওই আওয়াজ করা হচ্ছে । কলে কি না হয় ? - হঠাৎ সব আলো একসঙ্গে আবার জন্বলে উঠল। কেদার বললেন, শেষ হয়ে গেল বুঝি ? প্রভাস বললে, না কাকাবাব, এখুন কিছুক্ষণ বন্ধ থাকবে-তারপর আবার আরম্ভ হবে । চা খাবেন কি ? বাইরে আসন তবে ? শরৎ বললে, প্রভাসদা, দোকানের চা আর ও'কে খাওয়ানোর দরকারনেই—সত্যিক জাতের এটো পেয়ালায় চুমাক দিতে হবে—থাকগে । ওমা, ওই যে অর্ণবাব-উনি এলেন কোথা থেকে? অরণে কেদারকে প্রণাম করে বললে, কেমন লাগছে আপনার, ও’র লাগছে কেমন ? চলন আজ সিনেমা ভাঙলে দমদমা পৰ্য্যস্ত আপনাদের পৌঁছে দিয়ে আসব— কেদার বললেন, বেশ, তা হলে আমাদের ওখানেই আজ খেয়ে আসবে দুজনে— —না আজ আর না, আর একদিন হবে এখন বরং । এই সময় গিরীন বলে সেই লোকটিও ওদের কাছে এসে দাঁড়াল। প্রভাসকে সে কি একটা কথা বললে ইংরেজীতে । প্রভাস বললে, কাকাবাব, শরৎ দিদিকে আমার এই বন্ধ ও’র বাড়িতে নিয়ে যাবার জন্যে বলছেন ।