পাতা:বিভূতি রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড).djvu/২৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Sάθ বিভূতি-রচনাবলী আর একটু হলে – এমন বেফাঁস কথা হঠাৎ বলে ফেললে—আমি বাইরে নিয়ে গিয়ে ধমকে দিলাম আচ্ছা করে । ভাগ্যিস পাড়াগাঁয়ের মেয়ে, কিছু বোঝে না তাই বাঁচোয়া । কমলা বিবি আবার ঘর দেখাতে নিয়ে যাচ্ছিল ওর, কত কটে থামাই । দেখলেই সব বুঝে না ফেলকে, সন্দেহ করতো। — তার পর ? —তার পর তোমরা তো এসেছ, এখন পথ বাংলাও — —লেমনেড খাওয়াতে পারবে না ? —চা পযত্তি খেতে চাইছে না—তা লেমনেড । —ও এখানে থাকুক-চলো আমরা সব এখান থেকে সরে পড়ি । —মতলবটা বুঝলাম না । —এখানে দু-দিন লকিয়ে রাখো । তার পর ওর বাবা ওকে আর নেবে না-ওর গ্রামে রটিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে দাও যে কোথায় ওকে পাওয়া গিয়েছে । পাঁড়াগাঁয়ের লোক, সমাজের ভয়ে ওকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারবে না । —তাই করো—কিস্ত মেয়েটিকে তুমি জানো না । যত পাড়াগে"য়ে ভীতু মেয়ে ভাবছো, অতটা নয় ও । বেশ তেজী আর একগাঁয়ে মেয়ে । তোমার যা মতলব, ও কতদর গড়াবে আমি বুঝতে পারছি নে। চেন্টা করে দেখতে পারো । —তুমি আমার হাতে ছেড়ে দাও, দেখ আমি কি করি - টাকা কম খরচ করা হর নি এজন্যে—মনে নেই ? —হেনাকে ডাকো একবার বাইরে । হেনার সঙ্গে পরামর্শ করো । তাকে সব বলা আছে, সে একটা পথ খুজে বার করবেই : কমলাকেও বোলো । ওর বৌদিদি শরৎকে পাশের ঘরের সাজসজ্জা দেখাতে নিয়ে গিয়েছিল ইতিমধ্যে । একটা খুব বড় ড্রেসিং টেবিল দেখে শরৎ খশী হয়ে বললে, বেশ জিনিসটা তো ? আয়নাখানা বড় চমৎকার, এর দাম কত ভাই ? — একশো পাঁচশ টাকা— —আর এই খাটখানা ? —ও বোধ হয় পড়েছিল সত্তর টাকা—আমার ধীরেনবাব-মানে আমার গিয়ে বাপের বাড়ির সম্পকে ভাই—সেই দিয়েছিল । * —বিয়ের সময় দিয়েছিলেন বুঝি ? এ সবই তা হলে আপনার বিয়ের সময় বরের যৌতুক হিসেবে— —হ্যাঁ তাই তো । —আপনার স্বামী এখনো বাড়ি আসেন নি, আফিসে কাজ করেন বুঝি ? -शाँ । —আপনার শাশুড়ী বা আর সব - ওদের সঙ্গে আলাপ হ’ল না। ~এ বাড়িতে আর কেউ থাকেন না। এ শুধু মানে আমাদের—উনি আর আমি — —আলাদা বাসা করেছেন বুঝি ? তা বেশ । —হ্যাঁ। আলাদা বাসা। আফিস কাছে হয় কিনা। এ অনেক সবিধে । —তা তো বটেই। —আপনি এইবার কিছল মুখে না দিলে সত্যিই ভয়ানক দঃখিত হবো ভাই । বারবার খাওয়ার কথা বলাতে শরৎ মনে মনে বিরক্ত হ’ল। সে যখন বলছে খাবে না, তখন তাকে পীড়াপীড়ি করার দরকার কি এদের ? সে যে বিধবা মানুষ, তা এরা নিশ্চয়ই