পাতা:বিভূতি রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড).djvu/২৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কৈদার রাজী Réა বুঝতে পেরেছে, বিধবা মানুষ সব জায়গায় সব সময় খায় না—বিশেষ করে সে পল্লীগ্রামের থ্রাক্ষণের ঘরের বিধবা, তার অনেক কিছর বাছবিচার থাকতে পারে, সে জ্ঞান দেখা যাচ্ছে--- কলকাতার লোকের একেবারেই নেই । o শরৎ এবার একটু দৃঢ়স্বরে বললে, না আমি এখন কিছু থাবো না, কিছ মনে করবেন না আপনি । প্রভাসের বৌদিদি আর কিছু বললে না এ বিষয়ে । শরৎ ভাবলে, এদের সঙ্গে ব্যবহারে হয়তো সে ভদ্রতা বজায় রেখে চলতে পারবে না,কিস্ত কি করবেসে,কেন এ নিয়ে পীড়াপীড়ি করা ? খাবে না বলেছে ব্যস মিটে গেল—ওদের বোঝা উচিত ছিল । , —আরও দু-পাঁচ মিনিট শরৎকে এ ছবি, ও আলমারি দেখানোর পরে প্রভাসের বৌদিদি ওর দিকে চেয়ে বললে, ভাল, একটা অনুরোধ রাখো না কেন- আজ এখানে থেকে যাও রাতটা । শরৎ আশ্চর্য হয়ে বললে, এখানে ? কি করে থাকবো ? —কেন, এই আলাদা ঘর রয়েছে । উনি বোধ হয় আজ আর আসবেন না। একএকদিন রাত্রে কাজ পড়ে কিনা । সারারাত আসতে পারেন না- একলা থাকতে হবে, তার চেয়ে তুমি থাকো ভাই, দুজন বেশ গল্পে-গজেবে রাত কাটিয়ে দেবো, তোমাকে আমার বড় ভাল লেগেছে । - কথা শেষ করে প্রভাসের বৌদিদি শরতের হাত ধরে আবদারের সরে বললে, কথা রাখো ভাই, কেমন তো ? তা হলে প্রভাসবাবকে —ইয়ে ঠাকুরপোকে বলে দিই আজ গাড়ি নিয়ে চলে যাক –তাই করি, বলি ঠাকুরপোকে । শরৎ বিষন্ন মনে বলে উঠল-না না, তা কি করে হবে ? আমি থাকতে পারবো না । বাবার পাশের বাড়িতে চাটুজে মহাশয়ের ওখানে আজ রাত্রে নেমস্তন্ন আছে, তাই রান্না নেই, এতক্ষণ আছি সেই জন্যে । নইলে কি এখনও থাকতে পারতাম ! বাবা একলাটি থাকবেন, তা কখনো হয় ? তা ছাড়া তিন ব্যস্ত হয়ে উঠবেন যে ! আমি তো আর বলে আসি নি যে কারো বাড়ি থাকবো, ফিরবো না । আর সে এমনিই হয় না। আপনার স্বামী যদি এসেই পড়েন—হঠাৎ -- প্রভাসের বৌদিদি বললে, এসে পড়লে কিছুই নয় । তিনটে ঘর রয়েছে এখানে, তোমাকে ভাই এই ঘরে আলাদা বিছানা করে দেবো, কোনো অসুবিধে হবে না-থাকো ভাই, প্রভাসকে বলি গাড়ি নিয়ে চলে যাবার জন্যে । বোসো তুমি এখানে - —না, সে হয় না ! বাবাকে কিছু বলা হয় নি, তিনি ভীষণ ভাববেন-- —প্রভাস কেন গাড়িতে করে গিয়ে বাবার কাছে খবর দিয়ে আসক না যে তুমি আমাদের এখানে থাকবে -তা হলেই তো সব চেয়ে ভাল হয়—তাই বলি--এই বেশ সব দিক দিয়ে সংবিধা হ’ল—তোমার পায়ে পড়ি ভাই, এতে অমত করো না । শরৎ পড়ে গেল বিপদে। একদিকে তার অনুপস্থিতিতে তার বাবার সবিধে অসুবিধের ব্যাপার, অন্যদিকে প্রভাসের বৌদিদির এই সনি্ধশধ অনুরোধ - কোন দিকে যে যায় ? অবিশ্যি একটা রাত এখানে কাটানো আর তেমন কি, সম্ভবতঃ ওর স্বামী আজ আফিসের কাজের চাপে বাড়ি ফিরতে পারবেন না বলেই ওকে সঙ্গে রাখবার জন্যে ব্যস্ত হয়েছে— শোয়ারও অসুবিধে কিছু নেই, থাকলেই হ’ল—কিন্তু একটা বড় কথা এই যে, সে বাড়ি না ফিরলে বাবা কি ভাবনাতেই পড়ে যাবেন । তবে বাবাকে যদি প্রভাসদা এখনি খবর দিয়ে দেন—সে আলাদা কথা । সে সাতপাঁচ ভেবে কি একটা বলতে যাচ্ছিল, এমন সময়ে কমলা এসে ঘরে ঢুকে বললে,