পাতা:বিভূতি রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড).djvu/২৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কেদার রাজা RSS পরের জঙ্গল-এরা তোমাকে দেখে নি কখনো তাই এমন বলছে। সেখানে গাছ দেখতে রেলেও যেতে হয় না, ইটিমারেও যেতে হয় না—ঘমে ভেঙে উঠে চোখ মছে জানালা দিয়ে, চাইলেই দেখতে পাবে জঙ্গলের ঠ্যালা । কমলাও বললে, তাই করন—কলকাতায় চলে আসন, কেমন থাকা যাবে -- প্রভাসের বৌদিদি বললে, এই আমাদের বাড়িতেই থাকবে ভাই ! মানে—আমাদের বাড়ির কাছেও বাসা করে দেওয়া যাবে এখন । এমনি সাজিয়ে গজিয়ে বেশ চমৎকার করে দেওয়া যাবে । কি ভাই সেখানে পড়ে আছ জঙ্গলে, কলকাতায় এসে বাস করে দেখো ভাই, আমোদ ফুত্তি কাকে বলে বুঝতে পারবে । আমাদের সঙ্গে থাকবে, একসঙ্গে বেড়াবো, দেখবো শনৈবো, সে কি রকম মজা হবে বলো দিকি ভাই ? তোমার মত মানুষ পেলে তো— কমলাও উৎসাহের সরে বললে, আপনাকে পেয়ে আর ছাড়তে ইচ্ছে করছে না বলেই তো— শরতের খুব ভাল লাগছিল ওদের সঙ্গ । এমন মন-খোলা, আমাদে, তরণী মেয়েদের সঙ্গ পাড়াগাঁয়ে মেলে না, এক আছে রাজলক্ষী, কিন্তু সেও এদের মত নয়--এদের যেমন সন্ত্ৰী চেহারা, তেমনি গলার সর.এদের সঙ্গে একত্রে বাস করা একটা ভাগ্যের কথা। কিন্তু ওরা যা বলছে, তা সম্ভব হবে কি করে ? এরা আসল ব্যাপারটা বোঝে না কেন ? সে বললে, ভাল তো আমারও লেগেছে আপনাদের । কিন্তু বুঝছেন না ? কলকাতায় বাবা থাকবেন কি করে ? তেমন অবস্থা নয় তো তাঁর ? এই হ’ল আসল কথা । প্রভাসের বৌদিদি হেসে বললে, এই ! এজন্যে কোনো ভাবনা নেই তোমার ভাই। এখন দিনকতক আমাদের বাসাতে থাকো না - তার . পর বাসা একটা দেখে শুনে নিলেই হবে এখন। আর তোমার বাবা ? উনি ধে অফিসে কাজ করেন, সেখানে একটা কাজটাজ— —সে কাজ বাবা করতে পারেন না । ইংরেজি জানেন না—উনি জানেন গান-বাজনা, বেশ ভাল বেহালা বাজাতে পারেন— প্রভাসের বৌদিদি কথাটা যেন লাফে নিয়ে বলল, বেশ, বেশ—তবে তো আরও ভাল । নরেশবাব থিয়েটারেই তো কাজ করেন -তিনি ইচ্ছে করলে— শরৎ বললে, নরেশবাব কে ? —নরেশবাব !—এই গিয়ে—ও’র একজন বন্ধ । আমাদের বাসায় প্রায়ই আসেন-টাসেন दिना । শরৎ একটুখানি কি ভেবে বললে, কিন্তু বাবা কি গাঁ ছেড়ে থাকতে পারবেন ? আমার শহর দেখা শেষ হয় নি বলে তিনি এখনও বাড়ি যাবার পেড়াপীড়ি করছেন না—নইলে এতদিন উদ্ব্যস্ত করে তুলতেন না আমাকে । নিতান্ত চক্ষলৎজায় পড়ে কিছু বলতে পারছেন না। তিন টিকবেন শহরে ? তবেই হয়েছে ! প্রভাসের বৌদিদি বললে, আচ্ছা, এক কাজ করো না কেন ? —কি ? —তুমিই কেন থাকো না এখন দিনকতক ? এই আমাদের সঙ্গেই থাকো। তোমার বাবা ফিরে যান দেশে, এর পরে এসে তোমাকে নিয়ে যাবেন । আমাদের বাড়িতে আমাদের বন্ধ হয়ে থাকবে, টাকাকড়ির কোনো ব্যাপার নেই এর মধ্যে—তোমায় মাথায় করে রেখে দেবো ভাই। বড় ভাল লেগেছে তোমাকে, তাই বলছি । কি বলিস, কমলা ? তুই কথা বলছিস নে যে—বল না তোর গঙ্গাজলকে । কমলা বললে, হ্যাঁ, সে তো বলছিই— প্রভাসের বৌদিদি বললে, সে-সব গেল ভবিষ্যতের কথা। আপাততঃ আজ রাত্রে তুমি