পাতা:বিভূতি রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড).djvu/২৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কেদার রাজা RAషి শরৎ বিকেল থেকে কেবল দমদমায় ফেরবার জন্যে তাগাদা করতে লাগল। হেনা ক্লমাগত বুঝিয়ে রাখে, ওরা এখনো আসছে না, এলেই পাঠিয়ে দেবে। শরৎ তো জলে পড়ে নেই-এর জন্যে ব্যস্ত কি ? * কমলার দেখা নেই অনেকক্ষণ থেকে । শরৎ বললে, গঙ্গাজল কই, তাকে দেখছি নে— হেনা কমলাকে সরিয়ে দিয়েছিল, কাঁচা লোক, কখন কি বলে বসবে, করে বসবে—সব মাটি হবে। তা ছাড়া কমলার ঘরে এমন সব জিনিসপত্র আছে, যা দেখলে শরতের মনে সন্দেহ হতে পারে । হরি সা'র একটা বিছানা, আলমারিতে তার দাড়ি কামানোর আসবাব, বড় নল লাগানো গড়গড়া ইত্যাদি । মদের বোতলগুলো না হয় পাড়াগাঁয়ের মেয়ে না বঝতে পারলে –কিন্তু পরেষের বাসের এসব চিহ্নের জবাবদিহি দিয়ে মরতে হবে হেনাকে । বিকেলের দিকে হেনা বললে, চলো ভাই টকি দেখে আসি--- — সে কোথায় ? —চৌরঙ্গীতে বলো, শ্যামবাজারে বলো— ---বাবার কাছে কখন যাব ? ওরা কখন আসবে ? — চলো, টকি দেখে দমদমায় তোমায় রেখে আসবো শরৎ তখনি রাজী হয়ে গেল ৷ টকি দেখবার লোভ যে তার না হয়েছিল তা নয়। বিশেষ করে টকি দেখেই যখন বাবার কাছে যাওয়া হচ্ছে তখন আর গোলমাল নেই এর ভেতর । কিন্তু হেনার আসল উদ্দেশ্য কোনো রকমে ওকে ভুলিয়ে রাখা । টকি দেখবার জন্যে গাড়ি ডাকতে গিয়েছে বলে দেরি করিয়ে সে প্রায় সন্ধ্যা করে ফেললে । শরৎ ব্যস্ত হয়ে কেবলই তাগাদা দিতে লাগল—কখন গাড়ি আসবে, কখন যাওয়া হবে। হেনাও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ল, এদের কারো দেখা নেই—পোড়ারম খো গিরীনট। লম্বা লম্বা কথা বলে, তারও তো চুলের টিকি দেখা যাচ্ছে মা, গিয়েছে সেই সকাল বেলা। যা করবি করগে বাপ, টাকাটা মিটিয়ে দিয়ে এ আপদ তোরা যেখানে পারিস নিয়ে যা, তার এত ঝঞ্চাটে দরকার কি ? এদিকে একে আর বুঝিয়ে রাখা যায় না। সন্ধ্যার পরে গিরীন এসে নিচের তলায় হেনাকে ডেকে পাঠালে । হেনা তাড়াতাড়ি নেমে এসে বললে, কি ব্যাপার জিজ্ঞেস করি তোমাদের ? আমার ঘাড়ে যে চাপিয়ে দিয়ে গেলে এখন আমি করি কি ? ও যে থাকতে চাইছে না মোটে । কোথায় নেবে নিয়ে যাও না, আমি কতকাল ভুলিয়ে রাখবো ? আমার থিয়েটার আছে কাল। কাল ওকে কার কাছে রাখবো ? ওদিকে কন্দ্র করলে ? গিরীন তুড়ি দিয়ে গবে'র সরে বললে, সব ঠিক । -कि छ्'ठा ? --বড়োকে ভাগিয়েছি । সে বলবো এখন পরে। সে পটুলি নিয়ে ববেলেशि-श्-िझि --কি বলো না ? —প:টুলি নিয়ে ভেগেছে হি-হি –ঝি চিড়ে আনতে গিয়েছে আর সেই ফাঁকে হি-হি— পলিসের এ্যায়সা ভয় দেখিয়ে দিইছি, বড়োটা আর এ মাথো হবে না। --বেশ, এখন নিয়ে যাও – —দ্যাখো, ওকে একটু ভুলোও-টুলোও । পাড়াগাঁয়ে গরীব ঘরে থাকতো, সখ আমোদ আহমাদের মখে দেখে নি। গয়নাগটি কাপড়-চোপড়ের লোভ দেখাবে— —ওরে বাপ রে, বলেছি তো ও মেয়ে তেমন না । একটুখানি মাছমাংস খাওয়ার কথা