পাতা:বিভূতি রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড).djvu/২৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কেদার রাজা ఇప్పి শরং বলল-যশোর জেলায় গড়শিবপুরে । মেয়েটি বলল, এসো ওপরে এসো। ওপরের ঘর বেশ চমৎকার সাজানো । শরৎ চেয়ে চেয়ে দেখলে । বড় বড় গদি-অটিা চেয়ার, মেঝের উপর বড় বড় শতরঞ্জির মত আসন পাতা । তার ওপর দিয়ে মাড়িয়ে চলে যাচ্ছে সবাই, তবে আসন পাতা কেন ? এক কোণে একটি ছোট পাথরের মাত্তি",মেয়েটি বলল, তার বশরের চেহারা । বড় ডাক্তার ছিলেন, আজ ছ-বছর মারা গিয়েছেন । ফুল-পানীতে বড় বড় রজনীগন্ধার ঝাড় । রান্নাঘরের মধ্যে কল, রান্না করতে করতে কল টিপলেই জল, ভারী সবিধে । ছ-সাতটা বড় কাঠের আলমারি-ভত্তি’ মোটা মোটা বই । সেগুলো দেখিয়ে মেয়েটি বলল, বশীর ডাক্তার ছিলেন বড়, নাম করতে পারি নে। তাঁর ডাক্তারি বই এগুলো-- আরও সাত আলমারি বোঝাই বই আছে, নিচের ঘরে—*বশরের শোবার ঘরে । মেয়েটি শরৎকে কিছু মিষ্টি ও ফল খেতে দিলে । তার পর গিন্নী মেয়ে ও নাতি সঙ্গে তাদের বড় মোটরে আবার এলেন কালীমন্দিরে । বেলা প্রায় তিনটে । শরৎ বলল, মা, আমি গঙ্গায় একটা ডুব দিয়ে আসি, বহুত গরম— আসল কথা গরম নয়। গঙ্গাহীন দেশের মেয়ে শরৎ, গঙ্গাকে কাছে পেয়ে সম্বব'দা ডুব দ্বিয়ে পণ্য সঞ্চয়ের লোভ দমন কুরতে পারে না। কিন্ত স্নান করে উঠে আসবার সময় শরৎ মহা বিপদের সামনে পড়ে গেল। স্নান করে উঠে কৃষ্ণকালী লেনের মুখে এসেছে, বt দিকেই মনসাতলা ও কৃষ্ণকালীর মন্দিরে একবার দশন করে আসবে—হঠাৎ দেখলে তার ঠিক সামনে দাঁড়িয়ে গিরীন, প্রভাস ও আরও দুটো অজানা লোক । তারা চারিদিকে কি যেন খুজছে । ওর সঙ্গে গিরীনের একেবারে চোখোচোখি হয়ে গেল। গিরীন আঙল দিয়ে তারসঙ্গীদের ওর দিকে দেখিয়ে বলল—এই যে ! তার পর সবাই মিলে এসে ওকে ঘিরে ধরলে । গিরীন বলল, তার পর ? রাগ করে ঝগড়া করে পালিয়ে এসে এখানে আছ ? চল বাড়ি চলো— সঙ্গীদের দিকে চেয়ে বলল, কেমন বলেছি কি না যে ঠিক কালীঘাটে খুজলেই পাওয়া যাবে। আজীর গাড়োয়ান দেখ ঠিক সন্ধান দিয়েছিল । বাবা, এ সব ডিটেকটীভগিরি কি তোমাদের কক্ষেমা ? প্রভাস বলল, চলো শরৎ দিদি, ফিরে চলো-রাগ কেন ? আর রাগ করে বাড়ি ছেড়ে চলে আসতে হয় ? 嘯 ওদের কথাবাত্তার সরে এমন একটা সহজ ভাব নিয়ে এসে ফেলেছে যেন শরৎ ওদের বহুদিনের ন্যায্য অভিভাবকত্ব থেকে বঞ্চিত করে নিজের একগয়েমি এবং বদমেজাজের দরন নিজে চলে এসেছে। ওরা যথেষ্ট উদারতা দেখিয়ে আবার ফিরিয়ে নিতে এসেছে। গিরীন বলল, নাও হয়েছে, কোথায় বাসা নিয়েছ চল দেখি—জিনিসপত্র কিছল আছে-টছে ? প্রভাস একখানা গাড়ি ডেকে আনো- এসো— শরৎ হতভম্বব হয়ে গিয়েছিল, এতক্ষণে যেন সম্মিবং ফিরে পেয়ে বলল, আপনি আবার এসেছেন এখান পৰ্য্যস্ত ? কেন এসেছেন, আমি আপনাদের সঙ্গে যাবই বা কেন ? আপনাদের সাহস তো খাব ৷ প্রভাসের দিকে চেয়ে বলল, আর প্রভাসদা, আপনাকে মায়ের পেটের ভাইয়ের মত জ্ঞান করতাম—তার সাজা খুব দিয়েছেন । এত খারাপ হয় লোকে তা আমি বুঝি নি। বাবা কোথায় ? বাবার খবর কিছু আছে ? গিরীন ওদের দিকে সাট করে চোখ টিপে বলল-আরে আছেই তো । তিনি তো কাল থেকে এসে আমাদের ওখানে প্রভাসদের বাড়ি বসে। সেই জন্যেই নিতে আসা-চলো ।