পাতা:বিভূতি রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড).djvu/৩০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কৈদার রাঞ্জা ტo'ა বললে, এখানে বসে খাও না গো । তাড়াতাড়ি কি আছে ? শরৎ বসে চা খেতে লাগল কিন্ত কোন কথা বললে না । মিনার কাকীমা আবার বললে, তোমাকে একটা কথা বলবো ভাবছি। দিদির কাছ থেকে তোমায় যদি আমি নিয়ে যাই, তুমি মাইনে নেবে কত ? শরৎ আরও অবাক হয়ে ওর মুখের দিকে চেয়ে বললে -আমাকে ? —হ্যাঁ গো—তোমাকে । বলো না মাইনে কত নেবে ? —গিনীমা যেতে দেবেন না আমায় । মিনার কাকীমা মুখ নেড়ে বললে, সে ভাবনা তোমার না আমার ? আমি যদি বলে কয়ে নিতে পারি। মানে আর কিছ না, যেখানে থাকি খোট্টা বামনে রাধে, বাঙালীর মুখে সে রান্না একেবারে অখাদ্য। আমার নিজের ওসব অভ্যেস নেই—হাঁড়ি হে"সেল কখনো করি নি, বাপের বাড়িতেও না, শ্বশুরবাড়িতে এসে তো নয়ই । তোমাদের বাঙাল দেশের রান্না ভাল—তাই বলছিলাম—বঝেলে ? শরতের মুখ চুন হয়ে গেল । এমন একটা আশ্রয় পেয়ে সে যে কোথাও যেতে রাজী নয়, এদের ছেড়ে, মিনকে ছেড়ে । কিন্তু সে এখনও পরের দয়ার পাত্রী, তার কোন ইচ্ছে বা দয়া এসব স্থলে খাটবে না, সে ভালই বোঝে । সে চুপ করে রইল । মিনার কাকীমা ভুল বঝে বললে, আচ্ছা তাই তবে ঠিক রইল। মাইনের কথা একটা কিন্ত ঠিক করে ফেলা ভালো—তা বলছি। তখন ষে বলবে – শরৎ মিনকে নিরিবিলি পেয়ে বললে, মিন বেড়াতে যাবি ? —চলো দিদি—কোন দিকে যাবে ? —সোন ভাডারের গুহার দিকে চল--- নদীর ধারে ধারে বনাবত পথ গঞ্জকুট শৈলের ছায়ায় ছায়ায় সোন ভান্ডার ছাড়িয়ে রাজগীরের প্রাচীনতর অঞ্চলে জরাসন্ধের মল্লভুমির দিকে বিস্তৃত। ওরা সেই পথে চলল। কত পাথরের নড়ি পড়ে আছে পাহাড়ের তলায়, নদীর পাড়ে । সমতলবাসিনী শরৎ এখনও এই সব রঙচঙে নড়ির মোহ কাটিয়ে ওঠে নি, দেখতে পেলেই কুড়িয়ে অচিলে সঞ্চয় করে। মিন বললে, তুমি একটা পাগল দিদি । কি হবে ওসব ? —বেশ না এগুলো ? দ্যাধ এটা কেমন – —কি করবে ? —ইচ্ছে কি করে জানিস । ওসব দিয়ে ঘর সাজাই—কিন্তু ঘর কোথায় ? —জড়ো করেছ তো একরাশ ।--তাতেই সাজিও— —জানিস মিন, তোর কাকীমা কি বলেছে ? –कि मिर्गम ? —আমায় নিয়ে যেতে চায় ওদের বাড়ি । —তোমার যাওয়া হবে না, আমি মাকে টিপে দেবো । —আমি তোদের ফেলে কোথাও যেতে চাই নে মিন । যখন আশ্রয় পেয়েছি, যতদিন বাঁচি এখানেই থাকব। কিন্তু শেষ পৰ্য্যস্ত যেতেই হ’ল মিনার কাকীমার সঙ্গে। মিনার মা বললেন-যাও মা, ওরা কাশীতে যাচ্ছে, তোমার তীথ করা হবে এখন। আমি এর পরে তোমায় কাছে নিয়ে আসবো ।