পাতা:বিভূতি রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড).djvu/৩০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কেদার রাজা όοά —কোথায় যাবে ? —আমি রাস্তাঘাট চীন নে, তুমি বাঙালীটোলায় 鸚 পারবে ? তু Tলায় আমার এক বন্ধর বাড়ি নিয়ে যেতে —কেন পারবো না, চলো । —ছ’ নম্বর প্রবেশবরের গলি-জিজ্ঞেস করে চলো যাওয়া যাক । একে ওকে জিজ্ঞেস করে ওরা প্রবেশবরের গলিতে নিদিষ্ট বাসায় পৌছলো। তারাও খুব বড়লোক নয়, ছোট দুটি ঘর ভাড়া নিয়ে থাকে স্বামী-স্ত্রী, চার-পাঁচটি ছেলেমেয়ে। বাড়ি অনেক দিন আগে ছিল ঢাকা জেলায় কি এক পাড়াগাঁয়ে, বাড়ির কত্তা বেনারস মিউনিসিপ্যালিটির কেরানী, সেই উপলক্ষে এখানে বাস । বাড়ির গিন্নীর বয়স চল্লিশের কাছাকাছি । তিনি ওদের যত্ন করে বসালেন, চা করে খেতে দিলেন । তাদের বাড়িতে একটি চার-পাঁচ বছরের খোকা আছে, নাম কালো। দেখতে কি চমৎকার, যেমন গায়ের রং, তেমনি মথেশ্ৰী, সোনালি চুল, চাঁচাছোলা গড়ন । শরৎ বললে, এমন সুন্দর ছেলের নাম কালো রাখলেন কেন ? গিন্নী হেসে বললেন, আমার শিরের দেওয়া নাম। তাঁর প্রথম ছেলে মারা যায়, নাম ছিল ওই । তিনিই জোর করে কালো নাম রেখেছেন । প্রথম দশ নেই খোকাকে শরৎ ভালবেসে ফেললে । বললে, এসো খোকা, আসবে ? খোকা অমনি বিনা দ্বিধায় শরতের কাছে এসে বসলো । শরৎ বললে, আমি কে হই বলো তো খোকন ? খোকা হেসে শরতের মুখের দিকে চোখ তুলে চুপ করে রইল । খোকার মা বললেন, মাসীম হন, মসিীমা বলে ডাকবে— খোকা বললে, ও মাসীমা— —এই যে বাবা, উঠে এসে কোলে বসো— খোকার মা বললেন, সেই ছড়াটা শুনিয়ে দাও তোমার মাসীমাকে খোকন ? খোকা অমনি দাঁড়িয়ে উঠে বলতে আরম্ভ করলে— . এই যে গঙ্গা পণ্যে ঢারা বিমল মরটি পাগলপারা বিশ্বনাটের চরণটলে বইছে কুটুহলে— থোকা ত এর জায়গায় "ট" বলে, 'ধ' এর জায়গায় 'ঢ' বলে—শরতের মনে হ’ল খোকার মুখে অমত বর্ষণ হচ্ছে যেন । অভাগিনী শরৎ সস্তাননেহ কখনো জানে নি, কিন্ত এই খোকাকে দেখে তার সপ্ত মাতৃহৃদয় যেন হঠাৎ সজাগ হয়ে উঠল । কত ছেলে তো দেখলে এ পর্যন্ত, মিনার কাকীমারই তো এ বয়সের ছেলে রয়েছে, তাদের প্রতি স্নেহ তো দরের কথা —শরৎ নিতান্তই বিরক্ত। এ ছেলেটির ওপর এমন ভাবের কারণ কি সে খুজে পায় না । কিন্ত মনে হ’ল এ খোকা তার কত দিনের আপনার, একে দেখে, একে কোলে করে বসে ওর নারীজীবন যেন সাথক হ’ল । শরৎ সেদিন সেখান থেকে চলে এল বটে, কিন্ত মন রেখে এল খোকার কাছে । কাজের ফাঁকে ফাঁকে তার মন হঠাৎ অন্যমনস্ক হয়ে যায়। গড়বাড়ির জঙ্গলে তাদের পরানো কোঠা । বাবা বাড়ি নেই । fR. . రి-ఫిO