পাতা:বিভূতি রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড).djvu/৩১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ర్ఫి9 বিভূতি-রচনাবলী —বেশি দরে নয়। এক হিন্দুস্হানী বড়লোক কাশীতে তাঁথ’ধম্ম করতে এসেছে মা । লোকজন খাওয়াবে—আমাদের সব নেমস্তন্ন করেছে । চলো না ? —না মা, আমি যাবো না । —এতে কোনো লৎজা নেই, অবস্হা খারাপ হলে মা সব রকম করতে হয় । আমারও দেশে গোলাপালা ছেল, দই ছেলে হাতীর মত। তারা থাকলে আজ আমার বেন্ধ" বয়েসে কি-এ দশা হয় ? বড়ীর চোখ দিয়ে জল পড়তে লাগল। শরৎ ভাবলে, দেখেই আসি, খাবো না তো—যা জিনিস দেবে, নিয়ে এসে পাগলীকে কি পটলের বউকে দিয়ে দেবো । তাই সেদিন সে মনোমোহন পীড়ের ধৰ্ম্মশালায় গেল বড়ীর সঙ্গে ৷ ধৰ্ম্মশালার বিস্তত প্রাঙ্গণে অনেক বন্ধ বাঙালী ও হিন্দস্হোনী ব্রাহ্মণ জড়ো হয়েছে—মেয়েমানুষও সেখানে এসেছে, তবে সংখ্যা খুব বেশী নয় । যারা ভোজ দিচ্ছে, তারা বাংলা জানে না—হিন্দীতে কথাবাত্তা কি বলে, শরৎ ভাল বঝতে পারে না। তারা খুব বড়লোক, দেখেই মনে হ’ল । শরৎকে দেখে আলাদা ডেকে তাদের একটি বউ বললে, তুমি কি আলাদা বসে খাবে, মাইজি ? —না মা—আমি নিয়ে যাবো । —বাড়িতে লেড়কালেড়কি আছে বুঝি ? শরৎ মদ হেসে বললে, না। –আচ্ছা বেশ নিয়ে যাও—এখানে থাকো কোথায় ? —একজনদের বাড়ি । রান্না করি । —বাঙালী রান্না করো ? -शT"ा भा ! একটু পরে ভোজের বন্দোবস্ত হ’ল । অন্য কিছ নয়, শুধু হালয়া, তিল তেলে রান্না। প্রকাণ্ড চাদরের কড়াইয়ে প্রায় দশ সের সাজি, দশ সের চিনি—আর ছোট টিনের একটিন তিল তেল ঢেলে হালয়া তৈরী হচ্ছে, শরৎকে ডেকে নিয়ে গিয়ে হিন্দুস্হানী বৌটি সব দেখালে। অভ্যাগত দরিদ্র নরনারীদের বসিয়ে পেট ভরে সেই হালয়া খাওয়ানো হ’ল— যাবার সময় দু-আনা করে মাথাপিছ ভোজন দক্ষিণাও দেওয়া হ’ল। শরৎকে কিন্ত একটা প:টলিতে হালয়ো ছাড়া পরী ও লাল্ড, অনেক করে দিলে ওরা। খাবারগুলো পাটলি বেধে নিয়ে এসে শরৎ পটলের বউকে দিয়ে দিলে। বললে, আজ আর পাগলীর দেখা নেই। আজ খেতে পেতো, আজই নিরদেশ। পটলের বউ বললে, পাগলীর জন্যে রেখে দেবো দিদি 2 —কেন মিথ্যে বাসি করে খাবে ? কাল যে আসবে তারই বা মানে কি আছে ? খাও তোমরা । —তুমি খাবে না ? —আমি খাবো না, সে তুমি জানো। ওরা কি জাত তার ঠিক নেই, ওদের হাতে রান্না— —কাশীতে আবার জাতের বিচার— —কেন কাশী তো জগন্নাথ ক্ষেত্তর না, সেখানে নাকি জাতের বিচার নেই— এমন সময় ওপর থেকে ঝি এসে বললে—ওগো বামনঠাকরন, মা ডাকছেন— ওপরে যেতেই মিনার কাকীমা এক তুমুল কাণ্ড বধিয়ে দিল। মোগলসরাই থেকে তার ভাইপোরা এসেছে, রাত আটটার গাড়িতে চলে যাবে, অথচ বামনীর দেখা নেই, মাইনে