পাতা:বিভূতি রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড).djvu/৩২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কেদার রাজা లిSసి পায়েস রোধে ওদের খাওয়াতাম । সেদিন যেমন কড়ায় হালয়া রোধে দিল সেই ছত্তরটা— তুই দেখিস নি—চাদরের মস্ত বড় কড়া । —নে চল আমার হাত ধর— —ওই পাগলীকে নিজের হাতে রোধে একদিন পেট ভরে খাওয়াবো। তোর বাড়িতে— —বেশ তো । 登 —আমি মাইনে বলে কিছু চাইলে ওরা দেবে না ? —দেওয়া তো উচিত। তবে গিন্নীটি যে রকম ঝান—তুমি তো ভাই মুখ ফুটে কিছ বলতে পারবে না— 象 —মরে গেলেও না । তবে একবার বলে দেখতে হবে । বেশী লোককে না পারি, একজনকেও তো পারি। ওরা খানিক দর এসেছে, ছত্রের উত্তর দিকের উচু রোয়াক থেকে প্রযের দল খেয়ে নেমে আসছে, হঠাৎ তাদের মধ্যে কাকে দেখে শরৎ থমকে দাঁড়িয়ে গেল। তার মুখ দিয়ে একটা অস্ফুট শব্দ বার হ’ল—পরক্ষণেই সে রেণুকার হাত ছেড়ে দিয়ে সেদিকে এগিয়ে চলল । বিস্মিতা রেণুকা বললে, কোথায় চললে ভাই ? কি হ’ল ? পরষের ভিড়ের মধ্যে এটো হাতে নেমে আসছেন সেই বদ্ধ ব্রাহ্মণ, তিন বৎসর আগে যিনি পদব্রজে দেশভ্রমণে বেরিয়ে গড়শিবপুরে শরৎদের বাড়ির অতিথিশালায় কয়েকদিন ছিলেন। 爱 শরৎ চেয়ে চেয়ে দেখলে । কোনো ভুল নেই—তিনিই । সেই গোপেশ্বর চট্টোপাধ্যায় ! সে প্রথমটা একটু ইতস্ততঃ করছিল—কিন্তু তখনি দ্বিধা ও সত্ত্বেকাচ ছেড়ে কাছে গিয়ে বললে, ও জ্যাঠামশাই ? চিনতে পারেন ? : সেই বন্ধ ব্রাহ্মণই বটে। শরতের দিকে অলপক্ষণ হী করে চেয়ে থেকে তিনি আগ্রহ ও বিস্ময়ের সরে বললেন—মা, তুমি এখানে ? —হ’্যা জ্যাঠামশাই । আমি এখানেই আছি— —কতদিন এসেছ ? রাজামশায় কোথায় ? তোমার বাবা ? —তিনি—তিনি দেশে । সব কথা বলছি, আসনে আমার সঙ্গে । আমার সঙ্গে একটি মেয়ে আছে—ওকে ডেকে নিই। আপনি হাত মুখ ধয়ে নিন জ্যাঠামশায় । পথে বেরিয়েই গোপেশ্বর চাটুজে বললেন—তারপর মা, তুমি এখানে কবে এসেছ ? আছো কোথায় ? —সব বলবো । আপনি আগে বসনে, আপনি কবে এসেছেন ? —আমি সেই তোমাদের ওখান থেকে বেরিয়ে আরও দু-এক জায়গায় বেড়িয়ে বাড়ি যাই । বাড়িতে বলেছি তো ছেলের বউ আর ছেলেরা । তাদের অবস্হা ভাল না। কিছুদিন বেশ রইলাম—তার পর এই মাঘ মাসে আবার বেরিয়ে পড়লাম—একেবারে কাশী । —হেটে । —না মা, বড়ো বয়সে তা কি পারি । ভিক্ষে-সিক্ষে করে কোনোমতে রেলে চেপেই এসেছি । ছত্তরে ছত্তরে খেয়ে বেড়াচ্ছি । মা অন্নপ্রশ্নোর কৃপায় আমার মত গরীব ব্রাহ্মণের দটো ভাতের ভাবনা নেই এখানে। চলে যাচ্ছে এক রকমে। আর দেশে ফিরবো না ভেবেছি মা । রেণুকাকে বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে শরৎ বললে, চলন জ্যাঠামশায়, দশাশ্বমেধ ঘাটে গিয়ে বসি । দুজনে গিয়ে দশাবমেধ ঘাটের রানায় বসলো ।