পাতা:বিভূতি রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড).djvu/৩৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ԾՋ3 বিভূতি-রচনাবলী —আর জন্মের বোন ছিলি তুই, এই বংশের মেয়ে ছিলি কোন জন্মে । —এতদিন কোথায় ছিলে তোমরা দিদি ? —কাশীতে। সব বলবো গল্প তোকে । চল— —আজ পিদিম তুমি দেবে দিদি । —নিশ্চয় । ভিটেয় যখন এসেছি, তখন তোকে আর পিদিম দিতে হবে না। তবে আঁমার সঙ্গে চল— বারো কালোপায়রা দীঘির ওপারের ছাতিমবন নিবিড় হয়েছে, তার ছায়ায় ছায়ায় উত্তর দেউলের যাবার পথে বাদ্রনখী গাছের জঙ্গল তেমনি ঘন, যেমন শরৎ চিরকাল দেখে এসেছে, তবে এখন গাছ শুকিয়ে যায় নি—সবে বেগনে রঙের ফুল ধরেছে বড় বড় সবুজ পাতার আড়ালে । শরৎ আগে আগে প্রদীপ হাতে, রাজলক্ষী পেছনে। কত পরিচিত পরোনো পথ, সারা জীবনই যেন অতীব শান্ত ও নিরপেদ্রব আরামে এই বাদড়নখী গাছের জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে চলেছে, সে, তার পিতৃগহের পণ্য আবেষ্টনী তার জীবনের পাথেয় যগিয়ে এসেছে—যে জীবনের না আছে রাত্রি, না আছে অরণোদয়—শ্ধ এমনি চাপা গোধলি, হৈচৈহীন কম"কোলাহলহীন ! প্রদীপ দিয়ে ওরা আবার ফিরল। পথের দুপাশে পল্পশ্রীর লীলায়িত চেতনা ওর আগমনে যেন আনন্দিত। কতকাল পরে রাজকন্যা,বাড়ি ফিরেছে ! রাজলক্ষী বলে, এঃ দিদি, এ ঘরে বসে রাঁধবে কি করে ? জল পড়ে মেজে যে একেবারে নণ্ট হয়ে গিয়েছে । —পিড়ি পেতে নেবো এখন । তুই আমার বাপের ভিটের নিন্দে করিস নি বলে দিচ্ছি— রাজলক্ষী হেসে বললে, সেই ছেলেমানষি স্বভাব এখনও যায় নি শরৎদি— —চা খাবি ? —তা খাচ্ছি—এখন বলো এতকাল কোথায় ছিলে তোমরা । —রাজারাজড়ার কান্ড, একটু হিল্লিদিল্লি বেড়িয়ে আসা গেল । —সে তো বুঝতেই পারছি । —আজ রাত্তিরে এখানে খাবি রাজলক্ষী । কিন্ত কিছু নেই বলছি, শুধু ধধৈলে ভাতে, ধধলে ভাজা । g ভাঙা ঘরে এই দুই তরণীতে বসে বহুকাল পরে আবার আসর জমালে—ওদিকে দই বন্ধ উঠোনে দুই কাঁঠালকাঠের পিড়ি পেতে বসে অনেক রকম রাজা-উজীর বধের গল্প করছিলেন । জগন্নাথ চাটুজে ইতিমধ্যে চলে গিয়েছেন। ভাই, জ্যাঠামশায় আর বাবাকে চাটুকু দিয়ে আয় তো— রাজলক্ষী চা দিতে গেলে কেদার বললেন, আরে আমার মা-লক্ষসী যে টু আয় আয়— কতকাল পরে দেখলাম, ভাল ছিলি ? গোপেশ্বর চাটুজেও বললেন, হ’্যা এ থাকিকে তো দেখেছি বটে এখানে—কি নাম যেন তোমার মা ? - রাজলক্ষী দুজনের পায়ের ধলো নিয়ে প্রণাম করে রান্নাঘরে চলে গেল। কেদার বললেন, দাদা, এবার এখানে কিছুদিন থেকে যাও । একসঙ্গে দিনকতক কাটানো বাক