পাতা:বিভূতি রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড).djvu/৩৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কেদার রাজা එළුද් তাঁর দিকেই ক্ৰমশঃ এগিয়ে আসছে নাকি ? চোর-টোর হবে কি তা হলে ? না কোনো ছাড়া গর বা ষাঁড়— কিন্ত পরক্ষণেই তাঁর মনে হ’ল এ পায়ের শব্দ মানুষের নয়—গর বা ষাঁড়েরও নয়। পদশদের সঙ্গে কোনো কঠিন জিনিসের যোগ আছে—খব ভারি ও কঠিন কোনো জিনিস । এক-একবার শব্দটা থেমে যায়—হয়তো এক মিনিট-- তার পরেই আবার••• হঠাৎ গোপেশ্বরের মনে হ’ল শব্দটা যেন—তাকেই লক্ষ্য করে হোক বা নাই হোক— মোটের ওপর খুব কাছে এসে গিয়েছে। তিনি আর কালবিলব না করে উধাবাসে ছুটে । নিজের ঘরে ঢুকতেই পাশের বিছানা থেকে কেদার জেগে উঠে বললেন, কি, কি—অমন করছ কেন দাদা ? - —ইয়ে, একবার বাইরে গিয়েছিলাম—কিসের শব্দ—তাই ছুটে চলে এলাম—কেমন যেন গা ছম ছম-– —শব্দ ? ও শেয়াল-টেয়াল হবে— —না দাদা, মানুষের পায়ের শব্দের মত, ভারি পায়ের শব্দ–যেন ইট পড়ার মত— কেদার কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বললেন, হ: । আজ কি তিথি ? —তা কি জানি, তিথি-টিথির কোন খোঁজ রাখি নে তো— —হ । নাও শয়ে পড় দাদা’একটা কথা বলি। অমন একা রাত্তির বেলা যেখানেসেখানে যেও না—দরকার হয় ডাক দিও ! রাজলক্ষী দপুরবেলা হাসিমুখে একখানা চিঠি হাতে করে এসে বললে, ও শরৎদি, তোমার নামে কে চিঠি দিয়েছে দ্যাথো— শরৎ সবিস্ময়ে বললে, আমার নামে ! কে আনলে ? —দাদার সঙ্গে পিওনের দেখা হয়েছিল বাজারে—তাই দিয়েছে— —দেখি দে– —কোথাকার ভাবের মানুষ চিঠি দিয়েছে দ্যাথো খালে— বলে রাজলক্ষী দুটুমির হাসি হাসলে। শরৎ হুকুটি করে বললে, মারবো খ্যাংরা মুখে যদি ওরকম বলবি—তোরভাবেরমানষেরা তোকে চিঠি দিক গিয়ে—জন্মজন্ম দিক গিয়ে— রাজলক্ষী হেসে বললে, তোমার মুখে ফুলচন্দন পড়কে শরৎদি, তাই বলো—তাই যেন হয় । —ওমা, অবাক করলি যে রে রাজি’? সত্যি তাই তোর ইচ্ছে নাকি ? —যদি বলি তাই ? —ও মা আমার কি হবে l —অমন বোলো না শরৎদি । তুমি এক ধরণের মানুষ তোমার কথা বাদ দিই—কিস্ত মেয়েমানুষ তো, ভেবে দ্যাখো। আমার বয়েস কত হয়েছে হিসেব রাখো ? শরং সাস্তানা দেওয়ার সরে বললে, কেউ আটকে রাখতে পারবে না যেদিন ফুল ফুটবে বাঝলি রাজি ? কাকাবাবর হাতে পয়সা থাকলে কি আর এতদিন—ফুল যেদিন ফুটবে— —ফুল ফুটবে ছাতিমতলার শাশান-সই হলে—নাও, তুমিও যেমন । খোলো চিঠিখানা দেখি— শরৎ চিঠি খলে পড়ে বললে, কাশী থেকে রেণুকা চিঠি দিয়েছে—বা — —সে কে শরৎদি ?