পাতা:বিভূতি রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড).djvu/৩৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যালাবদল එදාළු দেখাচ্ছিল । আমি তাঁর বাড়িতে কে কেমন আছে জিজ্ঞেস করলাম। থাইসিসের রোগী সেই মেয়েটিকে বাড়িতে রেখেই চিকিৎসা করাচ্ছেন,বড় ছেলেটি বাপের সঙ্গে ঝগড়া করে নিরদেশ হয়ে গিয়েচে আজ বছর দই—সম্পত্তি পাবার আগেই । কাগজে কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়ে তার খোঁজ করেচেন। অনেকক্ষণ পৰ্য্যন্ত এসব গল্প শুনলাম বসে বসে । পুণবাব গল্পের মধ্যে আরও দু-বার চা আনিয়ে খেলেন, ব্যাগ খুলে ওষুধ খেলেন তিন-চার রকম, কোনটা কবিরাজী, কোনটা বিলেতি পেটন্ট ওষুধ । দ্য প্যাকেট সিগারেট শেষ করলেন । দেখলাম পণবাব চিরবঞ্চিত জীবনের সব’গ্ৰাসী তৃষ্ণার ভোগলালসা মেটাতে উদ্যত হয়েচেন বিকারের রোগীর মত। চারিধারে ঘনায়মান মাতুর ছায়ার মধ্যে স্বল্পতৈল জীবনদীপের আলো যত সংকীর্ণ থেকে সংকীর্ণতর জ্যোতিঃবত্তের সন্টি করচে, উনি ততই উম্মাদ আগ্রহে যেখানে যা পাবার আছে পেতে চান—যা নেবার আছে নিতে চান । জীবনে ওরি যখন সবটি এল, জল না পেয়ে তখন তা আধ-মরা । সেই এল—কিস্ত এত দেরি করে ফেললে ! 骼 3k 鬱 亲 আমায় বললেন—একটু কিছর বাড়াবাড়ি খেলেই, ওষুধ খেয়ে রাখি। আর হজম করতে পারি নে এখন। আমাদের পাড়ায় আছে গদাধর কবরেজ-“খুব ভাল চিকিচ্ছে করে, একহস্তার ওষুধ নেয় দ-টাকা—তারই কাছে ভাবছি এবার— পাণবাবর সেই নিমপুতা বাটা মেখে ভাত খাওয়ার কথা আমার মনে পড়ল, আরও মনে পড়ল পণে‘বাবর প্রথম জীবনের শৌখিনতার কথা । এখন তিনি বঝেছেন আর বেশী দিন বাঁচবেন না, চিরবঞ্চিত জীবনের সব গ্রাসী তৃষ্ণায় ভোগলালসা তাঁর—বিকারের রোগীর মত অসংযত, অবুঝ । শান্তিরামকে গল্পটা বলব ভেবেছিলাম, কিন্তু সে দিব্যি নাক ডাকিয়ে ঘমেনুচ্চে । কলে দেখা সকাল বেলা বৈঠকখানার গাছপালার হাটে ঘরেছিলাম। গত মাসে হাটে কতকগুলি গোলাপের কলম কিনেছিলাম, তার মধ্যে বেশীর ভাগ পোকা লেগে নট হয়ে গেছে। নাসারির লোক আমার জানাশনো, তাদের বললাম,—কি রকম কলম দিয়েছিলে হে । সে যে টবে বস্নাতে দেরি সইল না । তা ছাড়া আবদল কাদের বলে বিক্ৰী করলে, এখন সবাই বলছে আবদল কাদের নয় ও, অত্যন্ত মামলি জাতের টী রোজ । ব্যাপার কি তোমাদের : নাসারির পরোনো লোকটাই আজ আছে । সেদিন এ ছিল না, তাই ঠকেছিলাম। এই লোকটা খুব অপ্রতিভ হলো । বল্লে—বাব, এই হয়েছে কি জানেন ? বাগানের মালিকেরা আজকাল আছেন কলকাতায় । আমি একা সব দিক দেখতে পারি নে, ঠিকে উড়ে মালী নিয়ে হয়েছে কাজ। তাদের বিশ্বাস কল্পে চলে না, আবার না কল্পেও চলে না । আমি তো সবদিন হাট সামলাতে পারি নেবাব ! ওদেরই ধরে পাঠাতে হয়, আমি বনেছিলাম টী রোজ তিনডজন, আমি তো তার কাছ থেকে টী রোজেরই দাম নেবো ? এখানে এসে ঘদ্বি আবদুল কাদের বলে বিক্ৰী করে তো তারই লাভ। বাড়তি পয়সা আমার নয়, তার। বাঝলেন না বাব ? বাজার খুব জে'কেছে। বর্ষার নওয়ালির মুখ, নানা ধরনের গাছের আমদানী হয়েচে ।