পাতা:বিভূতি রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড).djvu/৩৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

থালাবদল છીછો দভাগ্যের বিষয় তার উলেটাটাই শ,নে এসেচি চিরকাল। কখনও বুঝতে পারিনি যে আমার বয়স অলপ । সেই কথাটাই আজ রাত্রে আমার বেশী করে মনে এল। ছেলেবেলায় আমি ছিলাম খুব রোগা শীণ—অসুখে ভুগতম বছরে ন’ মাস । হাতে তাবিজ-কবজ, গলায় আমড়ার অটি, কোমরের ঘনসিতে বাদড় নখ—সমস্ত দেহে নানা ধরনের বাধা ও গণ্ডী—মাতু্য যাতে হঠাৎ ডিঙ্গিয়ে এসে আমাকে নিয়ে না পালায়। এই কারণে ইকুলে ভৰ্ত্তি হতে হয়ে গেল দেরি। যে ক্লাসে গিয়ে ভত্তি হলম, সে ক্লাসের মধ্যে আমিই বড়। সকলে আমাকে ডাকতে লাগল—‘কান-দা’ বলে । কিন্তু প্রথমে ততটা বুঝতে পারি নি যে আমার বয়েসটা এমন বেখাপা গোছের বেশী। একদিন হোল কি, তখন মাস দই ভৰ্ত্তি হয়েচি, মামার বাড়ি যাওয়াতে দিন তিনেক ইকুল কামাই হোল— তারপর যেদিন ইস্কুলে গেলাম, ফণিমাস্টারের ক্লাসের পড়া হোল না। ফণিমাস্টার আমার চুল ধরে টেনে বল্লে—বড়োধাড়ী কোথাকার, শিং ভেঙে বাছরের দলে মিশেচে—আবার ইস্কুল কামাই করে । ছেলেরা অনেকে খিল-খিল করে হেসে উঠল আমার দন্দশায় খুশি হয়ে । বাবার আপিসের পেন্সিলের ও পেন্সিল-ঘষা' রবারের প্রত্যাশা রাখতো যে সব ছেলে, তারাই চুপ করে রইল। এই আমি প্রথম জানলাম যে আমার বয়স বেশী। এর আগে কেউ আমাকে এ-কথা বলে নি । বাড়িতে দিদি ছিলেন আমার চেয়ে বড়। মা বাবা এদের মুখে কখনও আমার বয়েস সম্বন্ধে শ্লেষ-সচক কোনো কথা শুনি নি। কিন্ত আজ থেকে আমার ধারণা বদলে গেল –তখন বুঝলাম কেন ক্লাসের ছেলেরা আমায় ‘কানদা’ বলে ডাকে । এবং এই দিনটি থেকে ক্লাসের পড়া না বলতে পারার অক্ষমতার চেয়েও আমার বয়সের লজ্জায় সব সময় সঙ্কুচিত হয়ে থাকতুম । ফণুিমাস্টারও কি প্রতিবারই প্রতি পদে পদেই আমার সে গোপন লৎজা, যা আমি লোকচক্ষ থেকে লুকিয়ে রাখতে প্রাণপণ করি,— তা-ই ঢাক পিটিয়ে সকলের সামনে প্রচার করবে আর আমার সে অত্যন্ত নিভৃত গোপন ব্যথার সহানে কারণে অকারণে আঘাত করবে নিমমি ভাবে ? এদিকে বয়সের তুলনায় আমি একটু লম্বা ছিলাম। একদিন গ্রামারের কি ভুল বার হোতেই ফণিমাস্টার বল্লে—নাঃ, এ ধাড়ী ছোড়াটাকে নিয়ে আর পারা গেল না দেখচি ৷ বলি গোঁফ-দাড়ি যে লতিয়ে চললো, এখনও নাউনের পাসিং শিখলে না ? আমার চোখে লৎজায়, অপমানে জল এল । আমার মনে হোল বাস্তবিকই আমার বয়েস বেশী, তাতে নীচের ক্লসের ছোট ছোট ছেলেদের সঙ্গে পড়া আমার পক্ষে লৎজার কথা—প্রতিদিন ওদের চোখের সামনে আমি এরকমভাবে বকুনি খেতে আর পারি নে, বিশেষ করে ওই ছোট ছোট ছেলেরা—যারা আমায় দাদা বলে ডাকে, তাদের সামনেই আমার এ অপমানের লঙ্গা অসহ্য । বাড়ি গিয়ে মাকে লাজক মুখে বললাম,—আমি আর স্কুলে পড়বো না মা ! আমার ক্লাসের ছেলেরা ছোট ছোট, আমার লৎজা করে ওদের সঙ্গে পড়তে । মা অবাক হয়ে বললেন—কেন রে তেFর বয়স কত হয়েচে ? —তুমিই বল না কত হয়েচে ? –এই তেরোয় পড়বি আষাঢ় মাসে—বারো বছর ন” মাস চলচে— —ও বয়সে কেউ বুঝি সিক্সথ ক্লাসে পড়ে ? —না, তুমি একেবারে বড়ো হয়ে গিয়েচো—তোমার দাঁত পড়ে গিয়েচে, চুল পেকে গিয়েচে—তুমি কি আর সিক্সথ ক্লাসে পড়তে পার ? পাগলা একটা কোথাকার— মায়ের কথায় আমার মনের সন্দেহ দীর হোল না। নিজের ছেলেকে কেউ ছোট দেখে না —ও'রাই আমার ছোট বলেন, কই আর তো কেউ বলে না ? হায় আমার সে তেরো বছর