পাতা:বিভূতি রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড).djvu/৪৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উমি্মুখর 8ర్చి দুঃখের দিন । তখন কি ছেলেমানুষ ছিলম আর কি নিবোধই ছিলম তাই এখন ভাবি ৷ তখন বি-এ পাস করে, কি না জানি ভাবতাম নিজেকে । আমি খেয়া পার হয়ে বাসে উঠে আসচি, বশীর মহাশয়ের সঙ্গে পথে দেখা । তাঁর সঙ্গে দেখা করে কথা বলে আবার বসিরহাট এলমে ওদের নতুন বাসায় । দিদি ও পাঁচী ওখানে আছেন । দিদিকে দেখলে চেনা যায় না এমন নয়, তবুও সে দিদি আর নেই—কি যেন নেই মুখে যা তখন ছিল । একথা বলা বড় কঠিন । বয়েস হলে মানুষের মুখের কি যেন চলে যায়, এর উত্তর কে দেবে ? পাঁচীকে তো চেনাই যায় না । দেড়টার গাড়িতে পাঁচীর সঙ্গে এক গাড়িতে কলকাতায় এলাম । * ঠাকুরমায়ের গ্রাধের পর সেই মাটি’ন লাইনের গাড়িতে বসিরহাট থেকে এসেছিলাম, তখন আমি জাঙ্গিপাড়া কুলে চাকরি করি। কলেজ থেকে বার হয়ে প্রথম চাকরিতে ঢুকেচি ৷ আর আজ এই সতেরো-আঠারো বছর পরে মাটিনের গাড়িতে চড়ে বসিরহাট থেকে এলাম । সতেরো-আঠারো বছরের আগের আমি আর আজকার আমার চিন্তাধারা, অভিজ্ঞতা, জীবনের outlook সব বিষয়ে কি ভয়ানক বদলে গিয়েচে তাই ভাবচি । দিদি তাঁর মেয়ে মানীর বিয়ের জন্যে ট্রেনে উঠবার সময় পয্যন্ত বললেন । বললেন— ভেবেছিলাম তোমার সঙ্গে দেখা হোল না, এখানে যখন এলম, তখন দেখা হযে তোমার সঙ্গে। কিন্ত এ কথায় তেমন আনন্দ পেলাম না। আগে হলে দিদির কথায় কত খুশি হ’তাম কিন্তু আজ—মানুষের মন কি বদলেই যায় ! মন যে কি বহরপী দেবতা, কি বিচিত্র রহস্যময় তার প্রকৃতি, ভেবে দেখলে অবাক হয়ে যেতে হয় । সন্ধ্যাবেলা বন্ধর বাসায় গিয়ে চা খেয়ে একটু গল্পগুজব করলাম রাত নটা পয্যন্ত । আসবার সময় ১০নং রটের বাসে অনেকদিনের অচল একটা টাকা চলে গেল । গত পুজোর সময় টাটানগরে খ্যাদা টাকাটা আমায় নোট ভাঙ্গানি দিয়েছিল, কিছুতেই এতদিন চলে নি । আজ সকাল থেকে কত ছবি চোখের সামনে এল গেল । ইটিডোর পথ, চাঁদা কাঁটার বন ইচ্ছামতীর ধারে। বিস্তৃত ইচ্ছামতী, ইটিল্ডার ঘাটে লোকে সব বসে রোদ পোয়াচ্চে, ইন্দবাবর ছেলে অনাদি, নরেনের ছেলে, দিদি, দিদির মেয়ে মানী, পাঁচী। ছোট লাইনে আসবার পথে মনে পড়ল, আগে রবীন্দ্রনাথের বলাকা থেকে কবিতা মনে মনে আবৃত্তি করতুম ‘এবার আমায় সিন্ধতীরের কুঞ্জবীথিকায় । কবিতাটি বড় প্রিয় ছিল তখন। কাল সারাদিন যে বসিরহাট পানিতর অঞ্চলে কাটিয়েছি, আজ যেন সে সব স্বপ্নের মত মনে হচে । ইচ্ছামতীর তীরের চাঁদী কাঁটার বনের পথে, ওই স্রোতাপসারিত কদমাক্ত তীরভূমির সঙ্গে প্রথম যৌবনের যে সব সমতি জড়িত, তা কাল একটু একটু অপষ্ট মনে এল । প্রসাদকে কাল বড় ভাল লেগেচে—আর প্রসাদের বাবাকে । আজ সকালে উঠে রমাপ্রসনের বাড়ি গিয়ে শনি সে গিয়েচে আপিসে । বাসায় ফিরেই হঠাৎ গিরীনবাব এসেচে দেখলাম । সে বললে, রাজা নাকি মারা গিয়েচেন শুনেচেন । আমি অবিশ্যি জানতুম পঞ্চম জৰ্জ খুব অসহে, কিন্তু এত শীঘ্ৰ যে তিনি মারা যাবেন, তা ভাবি নি। খবরের কাগজ মেসে আসে ‘অমৃতবাজার পত্রিকা”—তাতে মাত্র এই খবর দেখা to “King's life is peacefully drawing a close’—ion isson vssons: "[MI too স্টেটসম্যান দেখে এসে বললে রাজা মারা গিয়েছেন বাস্তবিকই । স্কুলে গিয়ে তখনি ছয়টি হয়ে গেল। নতুন একটি প্রকাশক আমার কাছে ঘরেছিল বই নেবার জন্যে, তাকে সঙ্গে নিয়ে বেড়াতে গেলাম শৈলজাবাবরে বাড়ি, সেখান থেকে বিচিত্রা