পাতা:বিভূতি রচনাবলী (দশম খণ্ড).djvu/৩১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নীলগঞ্জের ফালমন সাহেব २०७ একখানা নৌকে আছে। মাঝি থাকে না, নিজেই নৌকো বেয়ে পার হয়ে ওপারে শিমূলতলায় বলি। শিমূলফুল ফুটেচে গাছটাতে, টুপটাপ করে রাঙা ফুল ঝরে পড়চে। শুকনো কঞ্চির বেড়া দিয়েচে পোড়া খালের ধারে ধীরে । চাধাদের মুহুরি-ক্ষেতে মূহূরি পেকে গাছ শুকিয়ে গিয়েছে, কিন্তু এখনো মূহুরি তোলে নি । ঘেটুফুলের কি স্বন্দর স্বগন্ধ বেরুচ্চে পড়ন্ত রোঙ্গে। নিঃশ্বাস টেনে শুকি । কেবলই ইটিছি, কিন্তু হাটতে পারিনে আর । পা ধরে আসচে। ফলেস্থা গ্রামের পেছনে মন্ত বঁাশবাগানে মরা শুকৃনো বঁাশপাতার কেমন চমৎকার গন্ধটা ! বঁাশবাগানের মধ্যে দিয়ে পখটা, তারপর আবার মাঠ। মাঠের মধ্যে বড় একটা যঞ্জিভুমুর গাছ । থোলো খোলে৷ যঞ্জিভুমুর পেকে টুপটুপ করচে গাছে। আমার গা বমি-বমি করছিল। ডুমুরতলায় বলে বমি করলাম। গা কেমন ঝিম্ ঝিম্ করতে লাগলো। জলতেই পেলো। ঠাও। জল কোথায় পাই ? 屬 অবসন্তু হয়ে থাকলে চলবে না, মার কাছে পৌছতে হবে। কখনো একা এত দূর পথ হাট নি। ভয় করচে। অন্য কিছুর ভয় আমার নেই। চিলতেমারি গ্রামের শ্মশানটা রাস্তার ধারেই পড়ে। শ্মশানে নাকি কত লোক ব্ৰহ্মদত্যি দেখেরচ, পত্নী দেখেচে । চিলতেমারি যেতে অবিপ্তি সন্ধ্যে হবে না। হে ভগবান, যেন সন্ধ্যা না হয়। মাকে দেখতেই হবে। তার আগে যেন সন্ধ্যা না হয়, অথবা না মরি ! হে ঠাকুর! একটা কাদের বাড়ী পথের ধীরে। দরজায় দাকিয়ে বললাম—একটু জল দেবে ? একটি দশ-বারে বছরের মেয়ে আমার সামনে এসে বললে—কি জাত! —ব্রাহ্মণ । —আমাদের জল খাবে ? আমরা জেলে । —তা হোক, দাও । মেয়েটি একটু পরে একখানা পাটালি অার এক ঘটি জল নিয়ে এসে আমায় দিলে। আমার দিকে ভাল ক’রে চেয়ে দেখে বললে—তোমার কি হয়েচে ? --नः । —কোথায় বাড়ী ? —মনোহরপুরে। -পাটালি খাবে না। শুধু জল দাও। জল খেয়ে আমি হেঁটে চললাম অতি কষ্টে । মেয়েটা আমার দিকে আশ্চৰ্য্য হয়ে চেয়ে স্নইক কতক্ষণ । সে বোধ হয় বুঝতে পেরেছিল আমার ইটিতে কষ্ট হচ্চে। সে টেfচয়ে বললে—আজি এখানে থেকে গেলেই পারতে—হঁ্যাগে ? আমি ঘাড় নেড়ে বললাম-না, আমাকে বেতেই হবে, মীর জন্তে মন কেমন করচে । জাবার মাঠ। কি স্বন্দর মাঠ ! শুধু আকৰ্ম্ম ফুল আর ঘেটুফুল ফুটে আছে .যদি শরীয় ভালো থাকতো, হয়তো মাঠে হাডুডু খেলতাম বন্ধুদের নিয়ে। স্থধ্য অস্ত ধাচে এখনো সামনে চিলতেমারি গ্রাম, তারপর কেউটেপাড়ার খেয়াঘাট— ৰমুনা নদীর ওপর।