পাতা:বিভূতি রচনাবলী (দশম খণ্ড).djvu/৩৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\ლა8 বিভূতি-রচনাবলী না। এখন তাই হচ্ছে, যা বলেছিলাম। শুভদ ঠাকরুণ বললেন—শ্বাশুড়ি খারাপ না হয় বুঝলাম। কিন্তু জামাই তো শুনেচি বড় ভালো ছেলে । —ভালো হোলে কি হবে পিসি, মায়ের কাছে জুজু। মার সামনে কথা বলতুে পারে ছেলে ? উনি বলেন, মায়ের বাধ্য হয়ে থাকাই ছেলের উচিত। বললাম যে, কোনোদিকে নজর নেই ওঁর—চাল নেই, তেল নেই, আজ বাদে কাল সকালে কি হবে ঠিক নেই—কে শুনচে সে সব কথা । ছাত্রদের নিয়েই ব্যস্ত। কেউ এক পয়সা দেবে না, ভূতের ব্যাগার থেটেই খুশি । আচ্ছা, বলো তো পিসি, এ কি রকম কাণ্ড ? নারাণ মাস্টার বাইরে থেকে হাক দেন এই সময়ে—একটা আলো ধরে । বাইরের দিকে বডড অন্ধকার । মনোরমা মুখ ঝামটা দিয়ে বলেন—হঁ্যা, সাতটা লণ্ঠনে আলো জেলে তোমার জন্যে বসে আছি যে ! পিপে পিপে তেলের ব্যবস্থা করে রেখেচ যে ! এলে কোথেকে আমার মাথা কিনে, জিগ্যেস করি ? নারাণ মাস্টার লজ্জিত মুখে ঘরে ঢুকতে ঢুকতে হোচট খান। মনোরমা বলেন—লাগলো নাকি ? তোমার দেহটা এমনি করেই সাতখোয়ারে যাবে। দেখি কোথায় লাগলো ?-- মনোরম রান্নাঘরে গিয়ে চা তৈরি করচেন। ননীমাধব খিড়কী দোর দিয়ে চুপি চুপি ঢুকে বললে মা, বাবা কোথায় ?...বাটিতে কি ? —ওঁর জন্যে দুটো চি ড়ে ভাজা করেচি ঘি দিয়ে। না খেয়ে খেটে খেটে ওঁর শরীরট যে গেল ! এই খানিক আগে এমন হোচট খেলেন যে পা ভেঙে যেতে যেতে রয়ে গেল। ও থেকে তোমাকে না। তোমার জন্যে চালভাজা আছে—তেল মেখে দিচ্ছি। দিদির বাড়ী যাস নি ? -छ्रे । —কেমন আছে সে ? এতক্ষণ সেখানে ছিলি ? কি খেতে দিলে ? —কিছুই না। ঘণ্টাকর্ণ। দাও চি ড়েভাজা—দিদি ভাল আছে। —না—না । এ ওঁর জন্যে ঘি দিয়ে ভাজা । তোকে এর পরে দেবে! এখন । বোসে৷ গে যাও ! নারাণ মাস্টার চিড়ে ভাজা খেতে খেতে স্ত্রীর সঙ্গে গল্প করেন। মনোরমা বলেন—ননী এই এল আমলার শ্বশুর বাড়ী থেকে। অনেকক্ষণ ছিল সেখানে। অমলা ভাল আছে। নারাণ মাস্টার স্ত্রীর মুখের দিকে চেয়ে বললেন—কে বললে এ সব কথা ? —কেন ননী বললে, আবার কে বলবে। সে এই তো এল ওর দিদির বাড়ী থেকে। রান্নাঘরে বসে খাবার খাচ্ছে ।