পাতা:বিভূতি রচনাবলী (দশম খণ্ড).djvu/৩৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অঙ্গুসন্ধান Vo ছেলেদের বলেন—মনের জানলাও সব সময় ঐ রকম খুলে রাখতে হবে । ভাথে তো কেমন নীল আকাশ ? চোখকে তৈরি করে বাইরের সৌন্দৰ্য্য দেখতে। জীবনে মস্ত আনন্দ পাবে। হেড মাস্টার বাইরে দাড়িয়ে শুনছিলেন। একটু পরে ডেকে পাঠালেন। —কেন ডেকেচেন স্যার ? —এদিকে আস্বন, বস্বন দয়া করে । নারাণ মাস্টার বসেন। হেড মাস্টার বলেন—আপনাকে কথাটা বলি। আপনার আঙ্কের ফল অত্যন্ত খারাপ এবার। কাল পরীক্ষার নম্বর আনিয়েচি ইউনিভারসিটি থেকে । ছ-টা ফেল অঙ্কে । আপনি এদিকে দেখি ক্লাসে বসে আর্টের চর্চা করেন। সেজন্যে কি আপনাকে রাখা হয়েচে স্কুলে ? কতবার না আপনাকে একথা আমি বলেচি ? বড় দুঃখের বিষয় নারাণবাৰু। 1. নারাণবাবু চুপ করে থাকেন। সাহস করে কিছু বলতে পারলেন না। রাখালবাবু টার্স রুমে বসে সব কথা শুনে বলেন—ও, আর ওঁর সাবজেক্ট যে এগারটা ফেল ! তার বুঝি কোনো কৈফিয়ত নেই ? গরীবের ওপর যত জুলুম। বৈশ ! বাজারে এসে সেই দোকানে মাস্টারেরা ভাঙা পেয়ালায় চা খান। সেখানে রাখালবাবু কথাটা তোলেন। স্কুল কমিটির অবিচার সম্বন্ধে কথাবাৰ্ত্ত হয়। একজন মাস্টার (যদুবাৰু) বলেন, শুধু টিউশনি করি সকাল থেকে পাচটা । বিকেলে আরো পাঁচটা। তাতেও কি সংসার স্বচারু রূপে চলে ? একটি বড় মেয়ে ঘাড়ে। দেশের তরুণদের যারা গড়ে তুলবেন, গোটা জাতিটিকেই তারা গড়ে তুলচেন—তাদের দিকে কে তাকায় ? ভগ্নমনে যে ধার বাড়ী যান। সন্ধ্যা হয়ে আসে। যদুবাবু বলেন—তোমরা যাও, আমি আবার গুণী মল্লিকের বাড়ী প্রাইভেট পড়াতে যাবে। —খেলেন না কিছু ? বাড়ী যাবেন না ? —বাড়ী গেলে সময় পাবো কখন ? ওই কোনোদিন রাস্তায় খেতে খেতেই পথ চলি —দু-এক পয়সার বিস্কুট কি মুড়ি। কোনোদিন তারও সময় হয় না। আমাদের আবার খাওয়া, তুমিও যেমন ভায় ! স্কুলে প্রাইজ বিতরণ উপলক্ষে সভা। সভায় নারাণ মাস্টারের ছাত্র ইন্দুভূষণ চমৎকার আবৃত্তি করলে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তাকে ডেকে জিগ্যেস করলেন—এমন আবৃত্তি শিখিয়েচে কে ? —নারাণ মাস্টার মশাই । so জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নাম মিঃ কানওয়ার। পাঞ্জাবী। কেম্বি জের গ্রাজুয়েট। নারাণ মাস্টারের সঙ্গে কথা বলতে বলতে ওঁর বাড়ী আসেন। পথে মাখন স্বর কি একটা কথা