পাতা:বিভূতি রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অপরাজিত ১০১ করিয়া আছে, এই সব নানা ভাবনা আসিয়া জোটে, নিজের আলুঙাতে ভাঙও যেন গল৷ দিয়া নামিতে চায় না। এদিকে আর এক গোলমাল-কারখানার ম্যানেজার ইতিপূর্বে তাহাকে বার-দুই ডাকাইয়া বলিয়াছিলেন, উপরে সে যে ঘরে আছে তার সমস্তটাই ঔষধের গুদাম করা হইবে— সে যেন অন্তত্ব বাসা দেখিয়া লয়—বলিয়াছিলেন আজ মাস তিনেক আগে, তাহার পর আর কোনও উচ্চবাচ্য করেন নাই—অপুও থাকিবার স্থানের জন্ত কোথায় কি ভাবে কাহার কাছে গিয়া চেষ্টা করিবে বুঝিতে না পারিয়া একরূপ নিশ্চেষ্টই ছিল এবং নিশ্চিন্ত ভাবে দিন যাইতে দেখিয়া ভাবিয়াছিল, ও-কথা হয়ত আর উঠিবে না--কিন্তু এইবার যেন সময় পাইয়াই ম্যানেজার বেশী পীড়াপীড়ি আরম্ভ করিলেন। হাতের পয়স ফুরাইয়া আসিবার সঙ্গে সঙ্গে অপু এত সাধ করিয়া কেন। শখের আসবাবগুলি বেচিতে আরম্ভ করিল। প্রথমে গেল প্লেটগুলি—তাও কেহই কিনিতে চায় ন— অবশেষে চোঁদ আনায় এক পুরানো দোকানদারের কাছে বেচিয়া দিল। সেই দোকানদারই ফুলদানিটা আট আনায় কিনিল, দুখন ছবি দশ আনায়। তবু শেষ পর্যন্ত সে স্তাণ্ডোর ডাম্বেলটা ও জাপানী পর্দাটা প্রাণপণে আঁকড়াইয়া রহিল। সে শীঘ্রই আবিষ্কার করিল—ছাতু জিনিসটার অসীম গুণ—সস্তার দিক হইতেও বটে, অল্প খরচে পেট ভরাইবার দিক হইতেও বটে। আগে আগে চৈত্র বৈশাখ মাসে তাহার মা নতুন যবের ছাতু কুটিয়া তাহদের খাইতে দিত—তখন ছাতু ছিল বৎসরের মধ্যে একবার পালপার্বণে শখ করিয়া খাইবার জিনিস, তাহাই এখন হুইয়া পড়িল প্রাণধারণের প্রধান অবলম্বন। আগে একটু আধটু গুড়ে তাহার ছাতু খাওয়া হইত না, গুড় আরও বেশী করিয়া দিবার জন্ত মাকে কত বিরক্ত করিয়াছে, এখন খরচ বাচাইবার জন্ত শুধু মুন ও তেওয়ারী-বছর নিকট হইতে কাচা লঙ্ক আনাইরা তাই দিয়া খায়। অভ্যাস নাই, থাইতে ভাল লাগে না ! কিন্তু ছাতু খুব মুম্বাছ না হউক, তাহাও বিনা পয়সার পাওয়া যায় না। অপু বুঝিতেছিল —টানাটানি করিয়া আর বড-জোর দিনদশেক—তারপর কুলকিনারাহীন অজানা মহাসমুদ্র। ...তখন কি উপায় ? সে রোজ সকালে উঠিয়া নিকটবর্তী এক লাইব্রেরীতে গিয়া দৈনিক ইংরেজী-বাংলা কাগজে ছেলে-পড়ানোর বিজ্ঞাপন খুজিয়া দেখে। গ্যাস-পোস্টের গায়েও অনেক সময় এই ধরণের বিজ্ঞাপন মারা থাকে—চলিতে চলিতে গ্যাস পোস্টের বিজ্ঞাপন দেখিয়া বেড়ানো তাহার একটা বাত্তিক হইয়া দাড়াইল। প্রায়ই বাড়িভাড়ার বিজ্ঞাপন –আলো ও হাওয়াযুক্ত অপরিবারের থাকিবার উপযোগ দুইখানি কামরা ও রান্নাঘর, ভাড়া নামমাত্র। দিব কালেভদ্রে এক-আধটা ছেলে-পড়ানোর বিজ্ঞাপন পাওয়া যায়, তার ঠিকানাটি আগে কেহ ছিড়িয়া দিয়াছে। কাপড় ময়লা হইয়া আসিল বেজায়, সাবানের অভাবে কাচিতে পারিল না। তেওয়ারীর স্ত্রী একদিন সোত সাৰান জিয়া নিজেদের কাপড় সিদ্ধ করিতে বগিয়াছে, BB BB BBBB BBBBD DD DD DBBS BB BBBB BBBB BB BB