পাতা:বিভূতি রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

`VI বিভূতি-রচনাবলী বলিলেন- ওদের আজকাল ভরি দেমাক, যুদ্ধের বাজারে লোহার দোকানদার সব লাল হয়ে যাচ্ছে, দালালের পর্যন্ত দু-পয়স ক’রে নিলে । অপু বলিল—দীলাল আমি হ’তে পারি নে ? —কেন পারবেন না, শক্তটা কি ? আমার শ্বশুর একজন বড় দালাল, আপনাকে নিয়ে যাব একদিন—সব শিখিয়ে দেবেন, আপনাদের মত শিক্ষিত ছেলে তো আরও ভাল কাজ করবে— মহা-উৎসাহে ক্লাইভ স্ট্রাট অঞ্চলের লোহার বাজারে দালালি করিতে বাহির হইয়া প্রথম দিন-চার-পাচ ঘোরাঘুরিই সার হইল ; কেহ ভাল করিয়া কথাও বলে না, একদিন একজন বড় দোকানী জিজ্ঞাসা করিল,—বোলটু আছে ? পাচ ইঞ্চি পাঁচ জ? অপু বোলটু কাহাকে বলে জানে না, কোন দিকের মাপ পাচ ইঞ্চি পাঁচ জ তাহীও বুঝিতে পারিল না। নোটবুকে টুকিয়া লইল, মনে মনে ভাবিল, একটা অর্ডার তো পাইয়াছে, খুজিবার মতও একটা কিছু জুটিয়াছে এতদিন পরে। পাচ ইঞ্চি পাচ জ বোলটু এ-দোকান ও-দোকান দিন-চারেক বৃথা খোজা-খুঁজির পর তাহার ধারণা পৌছিল যে, জিনিসটা বাজারে স্থলভপ্রাপ্য নয় বলিয়াই দোকানী এত সহজে তাহাকে অর্ডার দিয়াছিল। একদিন একজন দালাল বলিল—মশাই সওয়া ইঞ্চি ঘেরের সীসের পাইপ দিতে পারেন যোগাড় ক’রে আড়াই শো ফুট ? যান না অর্ডারটা নিয়ে আমুন এই পাশেই ইউনাইটেড মেশিনারি কোম্পানীর অফিস থেকে। পাশেই খুব বড় বাড়ি। আফিসের লোকে প্রথমে তাহাকে অর্ডার দিতে চায় না, অবশেষে জিজ্ঞাসা করিল-“মাল আমাদের এখানে ডেলিভারি দিতে পারবেন তো ?.. এ কথার মানে ঠিক না বুঝিয়াই সে বলিল—ই তা দিতে পারব। বহু খুজিয়া কলেজ স্ট্রাটের যে দোকান হইতে মাল বাহির হইল, তাহারা মাল নিজের খরচে কোথাও ডেলিভারি দিতে রাজী নয়, অপু নিজের ঘাড়ে ঝুকি লইয়া গরুর গাড়িতে সীসার পাইপ বোঝাই দেওয়াইল-রাজ উডমাণ্ড স্ট্রীটে দুপুর রৌদ্রে মাল আনিয়া হাজিরও করিল। ইউনাইটেড মেশিনারি কোম্পানী কিন্তু গাড়ির ভাড়া দিতে একদম অস্বীকার করিল, মাল তো এখানে ডেলিভারী দিবার কথা ছিল,তবে গাড়ি-ভাড়া কিসের? অপু ভাবিল, না হয় নিজের দালালির টাকা হইঙে গাড়ি ভাড়াটা মিটাইয়া দিবে এখন। এখন কাজে নামিয়া অভিজ্ঞতাটাই আসল, না-ই বা হইল বেশী লাভ। সে বলিল—আমার ব্রোকারেজটা ? —সে কি মশাই, আপনি সাড়ে পাচ আন ফুটে দর দিয়েছেন, আপনার দালালি নেন नि ? ७ कशनs झग्न ! অপু জানে না যে,প্রথম দর দিবার সময়ই তাছার মধ্যে দালালি ধরিয়া দিবার নিয়ম,সবাই তাহা দিয়া থাকে, সেও যে তাহা দেয় নাই, একথা কেহই বিশ্বাস করিল না। বার-বার সেই কথা তাহাদের বুঝাইতে গিয়া নিজের আনাড়ীপনাই বিশেষ করিয়া ধরা পড়িল। লীলার