পাতা:বিভূতি রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ᎼᏬb" বিভূতি-রচনাবলী বৈঠকখানাতে বায়ে|স্কোপ হচ্চে। বিভূতি বসতে বললে। তারপর দেবেন ও হীরুদের সঙ্গে খেতে বসা গেল। অনেকদিন পরে আজ আবার সেই রাস পূর্ণিমা। বেরিয়ে অনেকদিন আগের মত একখানা রিকৃশ করে জ্যোৎস্নায় ও ছাতিম ফুলের গন্ধের মধ্যে দিয়ে বাসায় ফিরলুম। সেই ১৯২৩ সাল ও এই। এই ছয় বৎসরে কত পরিবর্তন। কে জানত উপরে ডায়েরীট লিখবার সময় যে এই দিনটাতেই রাসপুণিমর বায়োস্কোপের আসরেই ওদের বাড়ির সিদ্ধেশ্বরবাবুর সঙ্গে আমার শেষ দেখা ! বাসায় এসে বারান্দয় রেলিং ধরে জ্যোৎস্না-ভরা আকাশটার দিকে চেয়ে চেয়ে মনে হচ্চিল—যেন এক গ্রহদেব এই অনন্ত জ্যোৎস্নার মধ্য দিয়ে হু-হু করে উড়ে চলেচেন ওপরেওপরে—সজোরে—সবেগে—পায়ের নীচে পুরাতন পরিচিত পৃথিবীটি রইল পড়ে— বহুদূর আকাশে যেখানে পরমাণু তৈরী হচ্চে, উস্কার ছুটচে, ছায়াপথ ছড়িয়ে আছে, নক্ষত্র ছুটচে—সেখানে । বন্ধুর জর হয়েচে—আজ দাদকে পত্র দিয়েচি। দাদা যেতে বলেচেন, তা কি করে হয়। সেদিন বন্ধুর অত্যাচারের কথা কত শুনলুম। তার স্ত্রীর, বোন ও শাশুড়ীঠাকরুন বললেন। শুনে দুঃখ হয়, কিন্তু উপায় কি ! জ্যোৎস্বরাত্রে আমাদের বাড়িটা বহুদূরে কেমন দাড়িয়ে আছে, কাঠ কাটা হয়েচে, আমাদের বাড়ির সামনে ছেলেবেলাকার মত পথের ওপর তার দাগ রয়েছে। হ্যামাচরণদাদাদের কাঠ । সে এক জীবন ! কি বিচিত্র, কি অদ্ভুত, কি অপূর্ব এই জীবন-ধারা! একে ভোগ করতে হবে। এই অপূর্ব জ্যোৎস্নায় ইসমাইলপুরের জন্তে মন উদাস হয়ে যায়। যেন তার বিশাল চরভূমি, কালে জঙ্গল, নির্জন বালিয়াড়ি—আমার ডাক দিচ্চে। কাল স্কুলে ছ’টায় ম্যানেজিং কমিটির মিটি, এদিকে আবার তিনটার সময় ডাঃ দের ওখানে চা-পানের নিমন্ত্রণ। আজি দুপুরে মনে পড়ছিল বোর্ডিং-এ থাকতে Traveller's return গল্পটা কি অপূর্ব emotion fitas পড়তুম। বালোর সে সব অপূর্ব emotion মনে পড়লেই মনে হয় কি অপূর্ব, এক বিচিত্র এ জীবনধারা । সেদিনের সন্ধ্যায় নন্দরাম সেনের গলিতে যাওয়া, সেই চাউলের গুদাম—সেই শুভঙ্করী পাঠশালার সামনে আমার সহপাঠির বাড়ি মনে পড়ে। কি মুনার ! এসবের জন্তে কাকে ধন্যবাদ দেবো ?—কৰ্ম্মৈ,দেবায় হবিষ বিধেম ? আজ মনের মধ্যে যে তীব্র creative আনন্দ অনুভব করলুম, কলকাতায় এসে পর্যন্ত একবছরের মধ্যে তা হয়নি কোন দিন । আজ সন্ধ্যাবেল হঠাৎ কি হলে আমার, অকারণে আনন্দে মনের পাত্র উপছে পড়চে, একে যেন ধরে রাখা যাচ্ছে না ।