পাতা:বিভূতি রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃণাস্কুর »ፃ » —জায়গা-অনেকখানি বড়–অচেনা, অজান, রক্ষ, কৰ্কশ ভূমিত্র হলেও তা-ই চাইবে, এ একঘেয়ে পোষমানা শৌধীনতার চেয়ে । সন্ধ্যাবেলা যে ছবিটা দেখতে গেলুম গ্লোবে, সেটাও আমার আজকের মনের ভাবের সঙ্গে এমন চমৎকার খাপ খেয়ে গেল,—“Liof the Wiking গ্রীনল্যাও ছেড়ে আরও দূরে, অচেনা দেশ খুঁজে বার করতে অজানা পশ্চিম মহাসমুদ্রের বুকে পাড়ি জমিয়ে চলে গেল—নিস্তব্ধ রাত্রে জ্যোৎস্না-ঝরা আকাশ-তলায় সঙ্ক-ফোটা মরসুমী ফুলগুলোর দিকে চোখ রেখে এইমাত্র গোলদীঘির ধারে বসে সেই কথাই আমি ভাবছিলুম।” ভাবতে ভাবতে মনে হল আমি যেন এই জগতের কেউ নই—আমি যেন বহুদূর কোন নাক্ষত্রিক শূন্তপারের অজানা জগৎ থেকে কয়েক দণ্ডের কৌতুহলী অতিথির মত পৃথিবীর বুকে এসেচি–ও মরসুমী ফুল আমি চিনেও চিনি না, প্রতিবেশী মানুষদের দেখেও যেন দেখি নি, এ গ্রহের বৈচিত্র্যের সবটাই নিয়েচি কিন্তু এর একঘেয়েমিট আমার মনে বলতে পারে নি এখনও। তার কারণ আমার গতি—স্বৰ্গীয় গতির পবিত্রতা। মনে হল এইমাত্র যেন ইচ্ছা মত পৃথিবীটা ছেড়ে উড়ে আলোকের পাথায় চলে যাবে ওই বহুদূরে ব্যোমের গভীর বুকে, যেখানে চিররাত্রির অন্ধকারের মধ্যে একটা নির্জন সার্থীহীন নক্ষত্র মিট্‌-মিটু করে জলচে–ওর চারপাশে হয়তো আমাদের মত কোন এক জগতে অপরূপের বিবর্তনের প্রাণী বাস করে--- আমি সেখানে গিয়ে থানিকটা কাটিয়ে আবার হয়তো চলে যাবে কোন সুদূর নীহারিকা পার হয়ে আরও কোন দূরতর জগতের শুীমকুঞ্জবীথিতে । এই সময়ে মৃত্যুর অপূর্ব রহস্ত যা সাধারণ চক্ষুর অন্তরাল থে-ক গোপন আছে—তার কথা ভেবে মন আবার অবাক হয়ে গেল—সারা দেহ মন কেমন অবশ হয়ে গেল। . কোন বিরাট শিল্প-স্রষ্টার পুণ্য অবদান এ জীবন ? কি অভলস্পর্শ, মহিমময় রহস্ত . রোমাঞ্চ হয়। মন উদাস হয়ে যায়—যখন বাসার ফিরলুম, তখন যেন কেমন একটা ঘোর ঘোর ভাব ।-- জীবনকে যে চিনতে পেরেছে—এ জগতে তার ঐশ্বর্যের তুলনা নেই—যার কল্পনার পঙ্গুত ও ভাব-দৈন্ত দৈনন্দিন ভোগবিলাসের উর্ধ্বে তাকে উঠতে প্রাণপণে বাধাদান করেচে, সে শাশ্বত-ভিখারীর দৈন্ত কে দূর করবে ?. আজ অনেককাল পরে—প্রায় বারো বৎসর পরে—শিশিরবাবুর চন্দ্রগুপ্তের অভিনয় দেখে এইমাত্র ফিরচি। সেই ছাত্রজীবনে ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউটে দেখবার পরে এই আজ দেখা। অভিনয় খুব ভালই হল, কিন্তু আমি, কি জানি কেন, মনের মধ্যে প্রথম যৌবনের সে অপূর্ব উন্মাদন, নবীন, টাটকা, ভাজা মনের সে গাঢ় আনন্দায়ভূতিটুকু পেলাম না। দেখে দেখে যেন মনের সে নবীনতাটুকু হারিয়ে ফেলিছি। আজকাল অক্ষদিক দিয়ে মনের মধ্যে সব সময়ই একষ্ট অপূর্ব উৎসাহ পাই-একটা অষ্ট