পাতা:বিভূতি রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃণাস্কুর Ꮌbr☾ বোলেয়ার সম্বন্ধে খানিকটা কথাবার্তা হল, মোহিতবাবু একটা লেখা পড়লেন—ভারপর আমরা সবাই এলাম চলে। মোহিতবাবুর আবৃত্তি কি মুনার ! কি মুন্দর সন্ধ্যাট কাটল । আজ সকালে ধূর্জটিবাবু এসেছিলেন। তার সঙ্গে ও মুরেশ চক্রবর্তীর সঙ্গে গল্পগুজবের পর আসাম মেলে রাণাঘাট এলাম ও সেখান থেকে সাড়ে তিনটার ট্রেনে দেশে এলাম । হাজারির মোটরটা দাড়িয়েছিল, সহজেই বাজার পর্যন্ত আসা গেল। এসেই কাপড়-চোপড় ছেড়ে গামছা নিয়ে নদীতে গা ধোবার জন্ত গেলাম। ভারি সুন্দর বৈকাল, আকাশের রঙ এমন মুন্দর শুধু বর্ষাকালেই হয়। গাছপালার রঙ কি সবুজ-রৌদ্রের রঙটা কেমন একটা অদ্ভুত ধরণের, কুঠার মাঠে গেলাম—সেই শিমুলগাছটার গায়ে কি মুন্দর রৌদ্রই পড়েচে–চারি ধারে আকাশের রঙে বড় মুগ্ধ করলে। আমাদের ভিটার পাশে যে গাছটা আছে, তার গায়ে খানিকট হলদে রঙের রোদ লেগে দেখতে হয়েচে অদ্ভুত । মাঠের চারিধারে সবুজ গাছপালা, আউশ ধানের সবুজ ক্ষেত, সুনীল আকাশ, এখনও বৌকথা-ক’ ডাকচে—খুব ডাকচে । সোদালি ফুল এখনও কিছু কিছু আছে। কাল বৈকালে প্রথম গেলাম সুবলবাবুদের বাড়ি বাগবাজারে, সেখানে খানিকক্ষণ গল্পগুজবের পরে বিভূতিদের ওখানে গেলাম। বাগবাজার ট্রামে আসবার সময়ে মনে ভাবছিলাম সাতাশ বছর আগে এই বর্ষাকালে, তবে বোধহয় এর আরও কিছু পরে—এই জায়গাটি দিয়ে ট্রামে করে যেভূম বাবার সঙ্গে। তখন আমি নিতান্ত বালক, আর আজ কেবলই মনে হচ্চে এই সময়ের পরে কলকাতা ছেড়ে দেশে গিয়ে সে কি অপূর্ব জীবন-যাত্রা। কি বৈচিত্র্য! সে শুধু অমুভূতিতে ভরা—নানা ধরনের বিচিত্র বাল্য অমৃভূতি...আসল জীবনটাই তো হল এই অমুভূতি নিয়ে, পুলক নিয়ে, উচ্ছ্বাস নিয়ে। আজও সেই গ্রাম আছে, নদী আছে, কিন্তু সে অপূর্ব অনুভূতি আর নেই। বিভূতিদের বাড়ি থেকে যখন আসি তখনও কেমন একটা শৃষ্ঠতার ভাব, যেন এদের বাড়ির সকলেই আছে—অথচ কি যেন নেই। সবাই কাছে এল, বসলে, গল্পগুজব করলে— কিন্তু কোথায় সেই ভাদ্রমাসের বৈঠকখানা ঘরের দিনগুলা, সেই মক্কা-মদিনা যাত্রী তাকিয়াবালিশ, সে আনন্দের ঢেউ ? Where is that child ...সিধুবাবুও নেই—কেমন একটা ফণক ফাকা । to পথে একটা মারামারি হচ্ছিল, পিকেটিং-কারী এক বালককে নাকি পুলিসে খুব মেরেচে, তাই নিয়ে। বাসে করে বায়োস্কোপ দেখতে গেলাম ও সেখান থেকে অনেক রাত্রে এলাম ফিরে ।