পাতা:বিভূতি রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃণাস্কুর ২৩৯ কাল সমস্ত দিনের মধ্যে অন্ততঃ তিন-চার বার একথা বলেছে—অথচ ওর ওপর কি অবিচার করেচি এবার-ওকে নিয়ে ভাস থেলি নি একটি দিন s-৭ খেলতে চাইলেও খেলি নি। ভাল করে কথাও বলি নি । বললে—জন্মাষ্টমীর ছুটিতে আসবেন তো ? আমি বললাম—যদিই বা আসি, তোর সঙ্গে আর তো দেখা হবে না। তুই তার আগেই তো চলে যাবি ৷ এদের কথা ভেবে কলকাতায় প্রথম প্রথম কষ্ট হবে। পূজার ছুটিতে বাড়ি এসেচি। রাধামাইন্‌ গিয়েছিলাম। সেখানে একদিন এক মেঘান্ধকার বিকালবেলাতে সাটকিটার অরণ্যময় জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে বেড়িয়ে এসেছিলাম । এই পথে একা যেতে ওদেশের লোকেও বড় একটা সাহস করে না—যপন একটা ছোট পাহাড়ী ঝরনায় নেমে রবীন্দ্রনাথের চিঠির একটা অংশ সেখানে রেখে দিচ্চি, কাল নারীবাবুদের বিশ্বাস করাবার জন্মে, তখন সেখানে কুসুকুলু ঝরনার শব্দটি মেঘশীতল বৈকালের ছায়ার কি সুন্দর লাগছিল! পাহাড়ের saddleটা যথন পার হচ্চি তখন ঝমৃ-ঝম্ করে বৃষ্টি নামল, হাজার হাজার বনস্পতির পাতা থেকে পাতায় ঝরঝর করে বৃষ্টি পড়ছিল। দুরের কালাঝের পাহাড় মেঘের ছায়ায় নীল হয়ে উঠেচে–ধেtয়া ধোয় মেঘ গুলো জড়িয়ে জড়িয়ে খেলা করচে । কালিদাসের ‘সামুমান আম্রকুট কথাটি বার বার মনে পড়ছিল—এক সেই মহুয়াতলায় শিলাখণ্ডে বসে । একদিন রাখামাইন এর বাংলোর পিছনে বনতুলসীর জঙ্গলে ভরা পাহাড়টার মাথায় অস্তগামী স্বর্ষের আলোতে বসেছিলাম ; ওদিকে রাঙা রোদ-মাথানো সিদ্ধেশ্বর ভুরির মাথাটা দেখা যাচ্ছে, এদিকে পাহাডের Ledge থেকে দূরে গালুড়র চারুবাবুর বাংলো দেখা যাচ্চে— সেদিন কি আনন্দ যে মনে এল—তার বর্ণনা ভাষায় দেওয়া যায় না । সেদিন আবার বিজয়! দশমী—নীল ঝরনার ধারে একটা শিলাখণ্ডে এক বসে রইলাম সন্ধ্যাবেলাতে, ক্রমে জ্যোৎস্না উঠল, মহুয়াতলার ঘাট দিয়ে পাহাড়ের দিক দিয়ে ঘুরে আসতে আসতে কুমুমবনীতে উড়িয়া মুনীর দোকানে গেলাম সিগারেট কিনতে। আশ্চর্যের বিষয় এইখানে হঠাৎ নীরদবাবুর সঙ্গে দেখা হল । তিনি ও তার স্ত্রী Shanger সাহেবের বাংলো থেকে চ খেয়ে ঐ পথে মেঘঢাকা অস্পষ্ট জ্যোৎস্নাতে বেড়াতে বেরিয়েছিলেন–বিজয়ার কোলাকুলি সেই দোকানেই সম্পন্ন হল । ভাবলাম, আজ আমাদের দেশে বাওড়ের ধারে বিজয়ী দশমীর মেলা বসেচে। তার পরদিন আমরা গালুডতে গেলাম ডোঙাতে মুবর্ণরেখা পার হয়ে—চারুবাবুদের বাংলোতে গিয়ে স্বরেনবাবু, আমি নেকড়েডুরি পাহাড়ে গিয়ে উঠে বসলাম। চা থেয়ে আশাদের বাড়ি গিয়ে গান শুনলাম আশার—সেখানে বিজয়ার মিষ্টিমুখ না করিয়ে ছাড়লে না। ফিরবার পথে স্ববর্ণরেখাতে ভোঙা পাওয়া গেল না—অপূর্ব জ্যোৎস্বরাত্রে সুবর্ণরেখা