পাতা:বিভূতি রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

cयौन्त्रीपूल ՀbԳ পরে সারাদিনের কর্মক্লাস্ত শরীরটাকে নিঃসঙ্গ শয্যায় লুটিয়ে দিয়ে আপন মনে কত কথা ভাবে। ব্র্যাঞ্চ লাইনের স্টেশন, রাত্রে আর ট্রেন নেই।” জানালার বাইরে খোলা আকাশটা নক্ষত্রভরা, একটা মাদার গাছের ডাল-পালা গরাদের গারে এসে ঠেকেছে! মনে পড়ে মৃত্যুর পূর্বে নলিনী তার হাত নিজের ছুখানি রোগজীর্ণ দুর্বল হাতের মধ্যে নিয়ে হাসিমুখে বলেছিল—আমার একটা কথা রাখবে লক্ষ্মীটি, ফের বিয়ে কোরো। কথা রাখবে ঠিক, বলে ? সে নলিনীর মুখে হাতচাপ দিয়ে বলেছিল—ছি, ওসব কথা কি বলতে আছে ? তুমি সেরে উঠবে ; ডাক্তারবাবু তো বলেছেন, পূর্ণিমাটা কেটে গেলেই পথ্যি দেবেন। ও-রকম কথা আর তুলো না, মা ভয় পেয়ে কান্নাকাটি করবেন—ছিঃ সে পূর্ণিমা কাটে নি । কর্মভারনত নিরানন্দ প্রবাসের দিনগুলিতে নলিনীর এই স্থতিই মাঝে মাঝে কাজের ফঁাকে ফাকে স্বরেশের অন্তমনস্ক মুহূর্তগুলি মধুর রসে ভরিয়ে তোলে, নিশীথে ফোটা রজনীগন্ধার মিঠা মৃদ্ধ সুবাসের মত-বিশেষ করে এইসব রাত্রে যখন সে একা --- মাঘ মাসের সকাল বেলা । এই মাত্র স্টেশন থেকে এসে রাধতে বসেছে, একটি বারো তেরো বছরের অপরিচিত মেয়ে একখানা থালা হাতে ঘরে ঢুকে লাজুক সুরে বললে—ম পাঠিয়ে দিলেন।...থালাতে ছয়-সাতটি বাটিতে নানা তরকারী। মুরেশ হঠাৎ বড় সন্ত্রস্ত হয়ে উঠলে, কি করা উচিত ঠিক করতে না পেরে তাড়াতাড়ি তরকারী বাটি থেকে তরকারী নামিয়ে সেগুলো খালি করে দেবার চেষ্টায় এতটা অনর্থক ব্যস্ততার আমদানি করে বসলো যে মেয়েটি মৃদু হেসে বললে—বাটি এখন থাক, রেখে দিন আপনি, ঝি এসে নিয়ে যাবে এখন। শুধু খালাখানা উঠিয়ে নিয়ে সে চলে গেল। সুরেশ ভাবলে, বড়বাবুর বাসা থেকে এসেছে বটে কিন্তু বড়বাবুর নিজের মেরে নয় সে জানে। এতদিন এ মেয়েটিকে কখনো ctitશ8 નિ c sl ? বেশ শাস্ত মুখখানি। মাসখানেক কেটে গেল। ব্র্যাঞ্চ লাইনের স্টেশনে ছোটবাবুর জীবন সকাল-সন্ধ্যা একঘেয়ে একরঙা ছবির মত বৈচিত্র্যহীন ভাবে কেটে চলেছে। সেই মেয়েটি আরও কয়েকবার নানা কাজে সুরেশের বাসায় বাতায়াত করেছে ; মেয়েটি বড়বাবুর ভাগিনেী—মা নেই, বাপ পদ্মার ও-পারে কোন এক স্টেশনে চাকুরি করেন, সম্প্রতি মামার বাড়ি এসেছে বেড়াতে, মামীমাকেই মা বলে ডাকে—এ সব খবর স্বরেশ ক্রমে জানতে পারে। একদিন কি কাজে মেয়েটি এল। স্বরেশ কথার কথায় বললে—রেণু, পানগুলো আজ কদিন ধরে পড়ে রয়েছে, সাজ অভাবে খাওয়া হয় না । গোটাকতক লেজে রেখে যাবে ? রেণু অমনি পান সাজতে বসে গেল। নিপুণ হাতে এক রাশ পান সাজ শেষ করে সে তাগিদ দিয়ে কলঙ্ক-ধরা অপরিষ্কার কাসার ডিবেটা স্বরেশের বাক্সের কোণ থেকে বায় করে