পাতা:বিভূতি রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२$७ বিভূতি-রচনাবলী চিহ্ন পাওয়া যায়। জঙ্গলের মধ্যে শ্রেণীবদ্ধ বৃদ্ধ বকুল-গাছের সারি দেখে মনে হয় কোনো সময়ে সে-সব স্থানে লোকের বাস ছিল । সে যাই থাকুক—আজও এতদিন পরে যখনই কথাটা মনে পড়ে তখনই এই কথাটাই মনে হয়, গভীর রাত্রির অন্ধকারে, জনহীন জনপদের ধ্বংসস্তুপের চারিপাশে ঘূর্ণায়মান কোন অভিশপ্ত অশরীরী আত্মার পৈশাচিক উল্লাস-ভরা অট্টহাসিই সেদিন কানে গিয়েছিল।" তাই হাসির রোলটা যখনই মনে আসে, আজও এতকাল পরেও যেন সারা শরীর শিউরে ওঠে ! প্রত্নতত্ত্ব আমি এ গল্প আমার বন্ধু মুকুমারবাবুর মুখে শুনেছি। ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিষয়ে যাহারী কিছু আলোচনা করেছেন, তাদের সকলেরই কাছে ডাক্তার মুকুমার সেনের নাম সুপরিচিত। ডাক্তার সেন অনেক দিন গবর্ণমেণ্টের প্রত্নতত্ত্ববিভাগে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করেছেন। পাটনা excavation-এর সময় তিনি পুনার সাহেবের প্রধান সহকারী ছিলেন। মধ্যে দিনকতক তিনি ইণ্ডিয়ান মিউজিয়মের প্রত্নতত্ত্ববিভাগের Curator-ও ছিলেন। বৌদ্ধ Iconography-css fsf klofss l “zisi sei যুগের মূর্তি-শিল্প” ও “ভারতীয় মূর্তি-শিল্পের ক্রমবিকাশ" নামক তার প্রসিদ্ধ বই দুখানা ছাড়া, এসিয়াটিক সোসাইটীর পত্রে এবং বহু দেশী সাময়িক পত্রিকায় এ বিষয়ে তিনি বহু প্রবন্ধ লিখেছেন । তার পড়বার ঘরটায় নানা স্থানের ভাঙা পুরানো ইট, ভাঙা কাঠের তক্তি-বসানো তুলট কাগজ ও তালপাতার পুথির স্তুপ এবং কালে পাথরের তৈরী দেবদেবীর মূর্তির ভিড়ে পা দেওয়ার স্থান ছিল না। এই সব মূর্তির শ্রেণীবিভাগ করতে তিনি অত্যন্ত পরিশ্রম করতেন। কোনো নতুন-আন মূর্তি পেলে তিনি বেশ ভাল করে দেখতেন, পুথি মেলাতেন, তারপর টিকিট আঁটতেন ‘বৌদ্ধমূর্তি—তারা"। দিনকতক পরে এ বর্ণনা তার মনঃপূত হোত না। তিনি আপন মনে বলতেন—উন্থ, ওটা ললিতক্ষেপ pose হোল যে, তারা কি করে হবে ? তারপর আবার লেন্স হাতে মূতিটার এপিঠ ও পিঠ ভাল করে দেখতেন। মূৰ্ত্তিটার যে হাত ভাঙী, সেটার দিকে চেয়ে বলতেন—এ হাতটায় নিশ্চয় পদ্ম ছিল। ই—মানে—বেশ বোঝা যাচ্ছে কি না ? তারপর আবার পুরানো টিকিটের ওপর নতুন টিকিট আঁটতেন ‘বৌদ্ধমূৰ্ত্তি— জম্ভলা”। তার এ ব্যাপার দেখে আমার হাসি’পেত। আমার চেয়েও বিজ্ঞ লোকে ঘাড় নেড়ে বলতো—হ্যাঃ, ও সব চাকরিবাজী রে বাপু, চাকরিবাজী ! নইলে কোথাকার পাটলিপুত্র কোথায় চলে গেল, ওঁরা আজ খোড়া ইটপাথর সাজিয়ে হুবহু বলে দিলেন—এটা অশোকের নাটমন্দিরের গোড়া, ওটা অশোকের আস্তাবলের কোণ ; দেখতে দেখতে এক