পাতা:বিভূতি রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মৌরীফুল రిషి) ঠিক এই সময়ে এই ধূমকেতুর আবির্ভাব যেন সংবাদপত্রগগনে ৰৈ হৈ পড়ে গেল। ষেদিন আসবার দিন কাগজে ছাপা হয়েছিল সেদিনের কথা এখনো অনেকেরই নিশ্চয় মনে আছে। সেদিন রবিবার, ৭ই জুন । সন্ধ্যার অনেক আগে থেকেই লোক ছাদে স্থান গ্রহণ করে দাড়িয়ে রইলো। ভাল করে দেখতে পাওয়া যাবে বলে অনেকে কলকাতার বাইরে চলে গেল। নতুন অপেরামসের কার্টুতি লরেন্স ও মেয়োর দোকানে খুব বেড়ে গেল । বঙ্গবাসী ও সন্ধ্যা কাগজে রাজচন্দ্রবাবুর ছবি বেরুলো । উৎসাহী দু একখানা কাগজ ঠার সংক্ষিপ্ত কাল্পনিক জীবন-কথাও লিখে ফেললে। বিদ্যুতের ট্রাম তখন কলকাতায় নতুন হয়েছে —মোড়ের ওপর ট্রামযাত্রীদের কাছে দৈনিক বঙ্গ-সুহৃং খুব বিক্রি হয়ে গেল—তারা উৎসাহের আতিশয্যে আগন্তুক ধূমকেতুর ছবিটা পর্যন্ত দিয়ে দিল। এরকমও একটা গুজব রটেছিল যে, ধূমকেতুর পুচ্ছটার সঙ্গে একটা বিরাট ধাক্কা খেয়ে পৃথিবীটা একেবারে চুরমার হয়ে যাবে। এই সংবাদটা দু একটা হিন্দী কাগজে রটে যাওয়ায় মাড়োয়ারীরা বেঙ্গল ব্যাঙ্কে গিয়ে টাকা ওঠাতে শুরু করে দিলে। একটা ছোট নতুন স্বদেশী ব্যাঙ্ক একদিনে দশটা থেকে ছ’টার মধ্যে একলক্ষ ষাট হাজার টাকা নগদ আদায় দিয়ে লালবাতি জালাবার যোগাড় করে তুললে। কিন্তু এক দুর্বোধ্য যুক্তিবলে সকলেই ঠাওরে নিলে, ধূমকেতুর লেজের ধাক্কায় বেঙ্গল ব্যাঙ্ক চুরমার হয়ে গেলেও তাদের লোহার সিন্দুকগুলো প্রাণে বেঁচে যাবে। - আমি তখন আর হোস্টেলে থাকি না, বহুবাজারের মোড়ে একটা মেসে থাকি। সন্ধ্যার সময় প্রতুল আমার বাসায় এল। দু'জনে ছাদে উঠলাম। আশে-পাশের ছাদ লোকে লোকারণ্য। ভীমনাগের সন্দেশের দোকান বন্ধ, ফুলওয়ালাদের দোকান বন্ধ, সেদিন তারা ছাদ ভাড়া দিয়েছে। ক্রমে বেশ অন্ধকার হোল। তখনও ধূমকেতুর কোনো সন্ধান নেই। রাত্রি আটটা বেজে গেল। নটা—দশটা—এগারোটা । ভিড় ক্রমে পাতলা হয়ে এল। ফুলওয়ালারা মাল কাটাবার জন্তে অগত্য অধোঁক দরে মালা বিক্রি করতে লাগলে । আরও রাত হোল—কিন্তু কিছু হোল না। প্রতুল আমায় বললে—এখন না, শেষ রাত্রের দিকে উঠবে: সারা রাত্রির মধ্যে অনেকে মাঝে মাঝে ছাদে উঠে দেখতে লাগলো। সেরাত্রে অনেকেরই ঘুম হোল না। কিন্তু কেউ কিছু দেখতে পেল না। তার পরে আজকাল করে এক সপ্তাহ, ক্রমে ছ’সপ্তাহ কেটে গেল, ধাক্কা খাবার ভয়ে যার দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়েছিল তারা আশ্বস্ত হোল, ধাক্কা তো দূরের কথা—ধুমকেতুর পুচ্ছের একটা পালকও কারুর নজরে এল না । কলেজে খুব হাসাঁহাসি হোল। নলিনাক্ষবাবু এতদিন চুপ করে ছিলেন, বোধহয় তার প্রতিদ্বন্ধীর গণিতের প্রতিভার ওপর গোপনে গোপনে তিনি শ্রদ্ধাবান ছিলেন । এবার তিনি ক্লালে এসে বললেন, (তখন তিনি আমাদের পড়ান) যে, পূর্ব থেকেই তিনি জানতেন ও কিছু নয়। রাজচন্দ্রবাবুর মত বিচক্ষণ লোক যে কি data-র ওপর এ আজগুবি খবর খাড়া করলেন दि. ब्र २-२>