পাতা:বিভূতি রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অভিযাত্রিক 8○○ যাকে শিশু গাছ বলে, সে সম্পূর্ণ আলাদা গাছ, যদি-চ সীসমূ গাছের কাঠেও বেশ মজবুত তক্ত হয় শুনেচি। মোহান্তজী বললেন—বাবু, মনে থাকবে আমার কথা ? —খুব থাকবে, তবে আপনি নিজে না এলে কিছু করতে পারবো না । गॅझे হঠাৎ আমায় মোহান্তজী বললেন—আসুন, আপনার সঙ্গে পাড়েঞ্জীর আলাপ করিয়ে झेि । মাঠের মধ্যে এক জায়গায় অনেকগুলো চালাঘর দেখা গেল। কাছাকাছি অন্ত কোনো বাড়ি নেই। দূরে নিকটে অনেকগুলি সীসমূ গাছের সারি। আমি একটু ইতস্তত করলাম যেতে, কারণ স্টেশনে গিয়ে আমায় ট্রেন ধরতে হবে। মোহাস্তজী আমার কোনো আপত্তি শুনলেন না—পরে অবিশুি বুঝলাম তিনি আমার পাড়েজীর আশ্রমে রাত্রে রাখবার জন্তে সেখানে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন এবং সেই উদ্দেশ্যেই আমার সঙ্গে সঙ্গেও আসছিলেন। মোহান্তজী বাড়ির কাছে গিয়ে ডাক দিতেই একজন লোক বার হয়ে তাকে হাসিমুখে প্ৰণাম করে বললে—আসুন বাবাজী, ইনি কে ? —ইনি ভাগলপুরের বাংগালি বাবু—আশ্রমের অতিথি— —আসুন বাবুজি, আমার বড় সৌভাগ্য—উঠে এসে বসুন। বেশ জ্যোৎস্ন উঠেছিল । চারদিকে চেয়ে দেখি বাড়ির উঠানে এবং ঘরের দাওয়ায় বড় বড় জালায় ও হাড়িতে কি সব রক্ষিত আছে—কিসের একটা দুৰ্গন্ধ বেরুচ্চে চারিদিকে। বাড়িতে আমরা একেবারে ভেতরের উঠোনেই গিয়ে হাজির হয়েচি— পড়েজী একাই থাকেন বলে মনে হল, বাড়িতে কোনো মেয়েমানুষ নেই। বাড়িটা কিসের একটা কারখানা। কিসের কারখানা ভালো বুঝতে পারছিলুম না সন্ধ্যার অস্পষ্ট জ্যোৎস্নালোকে। বাড়ির মধ্যেকার উঠানে আরও অনেক বড় বড় হাড়ি-কলসী, সেগুলিতেও কি যেন বোঝাই রয়েচে । সেই এক ধরনের উৎকট গন্ধ। কিসের কারখানা এটা ? হঠাৎ আমার মনে হল বে-আইনি মদের চোলাইখানা নয় তো ? কিন্তু মোহান্তজীর মতো সাধুপুরুষ কি এমন একটা ব্যাপারের সঙ্গে যোগ রাখবেন ? আমাকে চারিদিকে সন্দেহ ও বিস্ময়ের চোখে চাইতে দেখেই বোধহয় পাড়েজী (ওর নাম স্ত্রীরাম পাড়ে) বললে—কি দেখচেন বাবুজি ? আমি সঙ্কোচের সঙ্গে বললাম—না, ওই কলসীগুলোতে কি তাই দেখচি । পাড়েজী হেসে বললে—কি বলুন তো ? —আমি ঠিক বুঝতে পারচিনে—কিসের একটা গন্ধ বার হচ্চে— —আচ্ছ, কাছে গিয়ে দেখুন না বাবুজি— প্রত্যেক কলসীতে সাদা সাদা কি জিনিস, দুধের মতো। কিন্তু এত দুধ কি হবে এখানে, আর সন্ধ্যাবেলায় এত দুখ কলসীতেই বা কেন । দুধ কি রাত্ৰিবেল খোল উঠানের মধ্যে ফেলে রাখে ? वि. ब्र २-२v