পাতা:বিভূতি রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অভিযাত্রিক 8ጫ¢ --না মাধোলালজি, মিশনের মেয়ে আমাদের সমাজে চলবে না । আমাদেরও তো সমাজ আছে, না নেই ? —বাবুজি আপনি না করেন, ওর একটি ভালো পাত্র তবে যোগাড় করে দেবেন ? —আমি কথা দিতে পারিনে মাধোলালজি, তবে চেষ্টা করে দেখতে পারি। দ্বারকেশ থেকে এগারো মাইল দূরবর্তী গভর্ণমেণ্ট রিজার্ভ ফরেস্ট একদিন দেখতে গেলুম। সেদিন সঙ্গে কেউই ছিল না—আমি ঘোড়া করে বেলা দশটার সময় বার হয়ে বেলা একটার সময় একেবারে পথহীন বিজন বনের মধ্যে গিয়ে পড়লুম। বড় বড় গাছ, পাতায় পাতায় জড় জড়ি—নীচে কোথাও যেন মাটি নেই, শুধুই সাদা পাথরের কুড়ি ছড়ানে—মাঝে মাঝে ঝরনা। এ বনেও অনেক বুদ্ধ-নারিকেলের গাছ দেখা গেল। ঝরনার ধারে ঘন জঙ্গল, অন্তত্ব বন এত ঘন নয়। এই বনে অত্যন্ত ম্যালেরিয়া ফুলের (Lantana Camera ) ভিড়, বিশেষ করে ঝরনার ধারে। এই সুদৃশ্ব ফুল এখানে ফুটেচে খুব বেশি ও নানা রঙের। বনের মধ্যে এক জায়গায় বাঘ শিকারের মাচান বাধা । দেখে মনে হল কিছুদিন আগে এখানে কেউ শিকার করতে এসেছিল। এই বন যে হিংস্ৰজন্তু-অধুষিত, তা মনে পড়লে এই মাচান দেখে—আরও গভীরতর অরণ্যে অবেলায় প্রবেশ করা সমীচীন হবে না ভেবে ঘোড়ার মুখ গ্রামের দিকে ফেরালুম। পথে একজন খাকী পোশাক পরা কালো লোকের সঙ্গে দেখা । লোকটি গবর্নমেন্টের অরণ্যবিভাগের জনৈক কর্মচারী। অামায় দেখে বললে—আপনি কোথায় গিয়েছিলেন ? আমি বললুম, বনে বেড়াতে গিয়েছিলুম। লোকটি বললে—অন্তায় করেচেন, এক যাওয়া আপনার উচিত হয়নি। বনে বাঘের ভয় আছে, এ সব অঞ্চলের বাঘ বড় খারাপ। একটা মানুষখেকো বাঘও বেরিয়েচে বলে জানি। সামনে আসচে কোজাগরী পূর্ণিমার জ্যোৎস্নারাত্রি। আমার প্রবল আগ্রহ ছিল অমন জ্যোৎস্কারাত্রিটি বনের মধ্যে কোথাও যাপন করা। অনেক বক্তৃতা দিয়েও একজন লোককেও যোগাড় করা গেল না যে আমার সঙ্গী হতে পারে, কারণ মানুষ-থেকে বাঘের কথা কানে শুনে সেখানে একা যেতে চাইবো এমন সাহস আমার ছিল না। অবশেষে দ্বারকেশার পূর্বপ্রাস্তে একটা ছোট পাহাড়ের ওপর সে রাত্রে খানিকক্ষপ বসে থেকে আমার সাধ খানিকটা মিটলো। আমার সঙ্গে গ্রামের দু-তিন জন লোকের মধ্যে মাধোলালও ছিল। মাধোলাল এই অরণ্য-অঞ্চল সম্বন্ধে অনেক তথ্য জানে। আমার বললে, বাবুসাহেব, আমার কোথাও যেতে ভালো লাগে না। —কেন মাধোজি ? —মন ইপিয়ে ওঠে, মনে হয় সব চাপা । * -द८बन्न भाषा शिंदब्रक ब्रांप्रब ?