পাতা:বিভূতি রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8సిఫి বিভূতি-রচনাবলী পার হয়েই নগাধিরাজ হিমালয়—ভারতের আসল রূপই এই । বাংলা অস্ত ধরনের দেশ– বাংলা গুমিল, কমনীয়, ছায়াভরা ; সেখানে সবই মৃদু, সুকুমার, গাছপালা থেকে নারী পর্যস্ত। এখানে যেন শিবমূর্তি ধরেচে-কমনীয়তা নেই, লাবণ্য নেই—শুধু রূক্ষ, বিরাট, উদার। উড়িয়া ও মধ্যভারতের বনের শিববৃক্ষ যেন এখানকার প্রকৃতির রূপের প্রতীক। অনেকরাত্রে ডাকবাংলোয় পৌঁছলুম। বন্ধুরা তখনও কেউ আসেনি। একাই অনেকক্ষণ বসে রইলুম। ঘণ্টাখানেক পরে ওর এল। বললে, স্টেশনের কাছে একটা হায়েনা মেরেচে দেখে এলুম। —কে মেরেচে ? —রেলের এক সাহেব। দেখে এসো, প্লাটফর্মে ময়া হাঁয়েনাটা এনে রেখেচে । —তার চেয়ে ঠাকুরকে চা করতে বলা যাক, এসো চ খাওয়া যাক। মরা হয়েনা দেখে কি হবে। সেই পুজারী ঠাকুর পরম নিষ্ঠার সঙ্গে আমাদের ভাত বেড়ে দিলে। এত রাত হওয়া সত্ত্বেও গ্রামের অনেকগুলি লোক ডাক-বাংলোয় এসেছিল আমাদের বিদায় দিতে। দূরে পাহাড়ের মাথায় চাদ অস্ত গেল। আমরা স্টেশনে চলে এলুম, রাত দুটোয় ট্রেন, শীত পড়েচে খুব। পাটোয়ারী হাত জোড় করে বললে—বাবু, বিম্বাধরের আজিটা মনে আছে তো ? আমায় বার বার করে বলে দিয়েচে আপনাদের মনে করিয়ে দিতে। আপনার বড়লোক, একটু বলে দিলেই গরিবের অনেক উপকার হয়। কথাটা ঠিক, কিন্তু বলি কাকে ? হায় বিম্বাধর ।