পাতা:বিভূতি রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՀԵ বিভূতি-রচনাবলী দিল । সে ক্রিকেট খেলা জানে না, ননী তাহার হাভে নিজের ব্যাটখানা দিয়া তাহাকে বল মারিতে বলিল ও নিজে উইকেটু হইতে একটু দূরে দাড়াইয়া খেলার আইনকানুন বুঝাইয়া দিতে লাগিল । * খেলার অবসানে যে-যাহার স্থানে চলিয়া গেল। খেলার মাঠে পশ্চিম কোণে একটা বড় বাদাম গাছ, অপু গিয়া তাহার তলায় বসিল। একটু দূরে গবর্ণমেণ্টের দাতব্য ঔষধালয়। বৈকালেও সেখানে একদল রোগীর ভিড় হইয়াছে, ভাহীদের নানা কলরবের মধ্যে একটি ছোট মেয়ের কান্নার সুর শোনা যাইতেছে। অপূর্ব কেমন অন্তমনস্ক হইয়া গেল। চোঁদ-পনেরো বৎসর বয়সের মধ্যে এই আজ প্রথম দিন, যেদিনটি সে মায়ের নিকট হইতে বহুদূরে আত্মীয়বন্ধুহীন প্রবাসে এক কাটাইতেছে। সেদিক দিয়া দেখিতে গেলে আজ তাহার জীবনের একটি স্মরণীয় দিন । কত কথা মনে ওঠে, এই সুদীর্ঘ পনেরো বৎসরের জীবনে কি অপূর্ব বৈচিত্র্য, কি ঐশ্বৰ্য । সমীর টেবিলে আলো জালিয়াছে। অপুর কিছু ভালো লাগিতেছিল না—বিছানায় গিয়া গুইয়া রহিল । খানিকটা পরে সমীর পিছনে চাহিয়া তাহীকে সে অবস্থায় দেখিয়া বলিল, পড়বে না ? অপু বলিল, একটু পরে—এই উঠচি। —আলোটা জালিয়ে রাখো, সুপারিন্টেণ্ডেণ্ট এখুনি দেখতে আসবে, শুয়ে আছ দেখলে বকবে । অপু উঠিয়া আলো জালিল। বলিল, রোজ আসেন স্বপারিন্টেণ্ডেণ্ট ! সেকেণ্ড মাস্টার তো—না ? সমীরের কথা ঠিক। অপু আলো জালিবার একটু পরেই বিধুবাবু ঘরে ঢুকিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, কি রকম লাগলো আজ ক্লাসে ? পড়াশুনো সব দেখে নিয়েচ তো ? সমীর, ওকে একটু দেখিয়ে দিস তো কোথায় কিসের পড়া। ক্লাসের রুটিনটা ওকে লিখে দে বরং—সব বই কেন হয়েচে তো তোমার ? জিওমেট্রি নেই? আচ্ছ, আমার কাছে পাওয়া যাবে, এক টাকা সাড়ে পাচ আনা, কাল সকালে আমার ঘর থেকে গিয়ে নিয়ে এসো একখানা। বিধুবাবু চলিয়া গেলে সমীর পড়িতে বসিল ; কিন্তু পিছনে চাহিয়া পুনরায় অপূর্বকে শুইয়া থাকিতে দেখিয়া সে কাছে আসিয়; বলিল, বাড়ির জন্তে মন কেমন করচে—না ? তাহার পর সে খাটের ধারে বসিয়া তাহাকে বাড়ীর সম্বন্ধে নানা কথা জিজ্ঞাসা করিতে লাগিল। বলিল, তোমার মা একা থাকেন বাড়িতে ? আর কেউ না ? তার তো থাকতে कई हज़ । & অপূর্ব বলিল, ও কিসের ঘন্ট ভাই ? —বোর্ডিং-এর খাওয়ার ঘণ্টা—চলে যাই। খাওয়া-দাওয়ার পর দুই-তিনজন ছেলে তাহদের ঘরে আসিল। এই সময়টা আর সুপারিন্টেগুেন্টের ভয় নাই, তিনি নিজের ঘরে দরজা বন্ধ করিয়া দিয়াছেন। শীতের রাত্রে