পাতা:বিভূতি রচনাবলী (নবম খণ্ড).djvu/১৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ΣΨ8 বিভূতি-রচনাবলী করেন একষটি বছর বয়সে। তার দেহের পুণ্য ভস্মরাশির ওপরে এই মন্দির প্রতিষ্ঠিত। মন্দিরের চারিধারে অতি মনোরম উদ্যান ও ফোয়ারা। t সন্ধ্যার কিছু পূৰ্ব্বে এ্যালিস ও বিমল মার্বেলের চৌবাচ্চায় মন্দিরের অতি বিখ্যাত লালমাছ দেখছিল। অনেক দূর থেকে লোকে এই লালমাছ দেখতে আসে—আর আসে নব-বিবাহিত দম্পতি—তাদের বিবাহিত জীবনের কল্যাণ কামনায়। - একটা গাছের ছায়ায় বেঞ্চিতে এ্যালিস ক্লাস্তভাবে বসলো। বিমল বল্লে-মিনির কোথায় ? —মন্দিরের মধ্যে ঢুকেছে। এখানে বসে। কেমন স্বন্দর লাল মাছ খেলা করছে দেখে। আমি কি ভাবছি বিমল জানো, এমন পবিত্র মন্দির, এমন সুন্দর শাস্তি, এই প্রাচীন পাইন গাছের সারি—সব জাপানী বোমায় একদিন ধ্বংস হয়ে যাবে। যুদ্ধের এই পরিণাম, প্রাচীন দিনের শাস্তি ও সৌন্দর্য্যকে চুরমার করে বর্বরতাকে প্রতিষ্ঠিত করবে। —এ্যালিস্, আর কতদিন চীনে থাকবে ? —যতদিন যুদ্ধ শেষ না হয়, যতদিন একজন আহত চীন সৈনিকও হাসপাতালে পড়ে থাকে। যতদিন ড্যাডি লি তার সাহায্যকারিণী মেয়ের দরকার অনুভব করেন। এ্যালিস্ বিমলের দিকে চেয়ে বল্লে—কিন্তু বিমল ততদিন তোমাকেও তো থাকতে হবে— তোমাকে যেতে দেবো না । - পাইনগাছের ওদিকে নিকটেই প্রোফেসর লি’র প্রাণখোলা হাসি ও কথাবার্তার আওয়াজ শোনা গেল । 曝 এ্যালিস বল্পে—ওরা এদিকেই আসছে। এ্যালিসের ভুল হয়েছিল, মিনি আর স্বরেশ্বর এল না—এলেন প্রোফেসর লি। এই বয়সেও র্তার চোখের অমন অদ্ভুত দীপ্তি যদি না থাকতো, তবে তাকে জনৈক বৃদ্ধ চীনা রিকশাওয়ালা বলে ভুল করা অসম্ভব হয় না—এমনি সাদাসিধে তার পরিচ্ছদ । প্রোফেসর লি বল্পেন—হ্যানকাউ শহরে এসে আমার গরীব গ্রামবাসীরা আশ্রয় পেয়ে বেঁচেছে। কিন্তু গবন মেণ্টের তৈরী মাটির নীচের ঘরে লুকিয়ে থাকলে আমার চলবে না এ্যালিস, আমি কালই এখান থেকে গ্রামে চলে যাবে। এ্যালিস বল্পে, কেন ? —দক্ষিণ চীনে সৰ্ব্বত্র ভীষণ দুভিক্ষ । লোক না খেয়ে মরছে, তার সাথে বোমা আছে । মড়ক লেগেছে। আমার এখানে বসে থাকলে চলে ? আমি আবেদন পাঠিয়েছি আমেরিকায় মার্কিন রেডক্রস সোসাইটির মধ্যস্থতায়। তারাই আপেল পাঠিয়েছিল এদের খাওয়াতে। যতদূর জানা গিয়েছে, ওরা কিছু অর্থ মঞ্জুর করেছে। টাকাটা শীগগির আসবে। এ্যালিস বল্পে—ড্যাডি, আমার একটা প্রস্তাব শুনবেন ? আমার মাসীমা নিঃসন্তান, বিধবা, অনেক টাকার মালিক। আমায় তিনি উইল করে কিছু টাকা দিতে চেয়েছিলেন,