পাতা:বিভূতি রচনাবলী (নবম খণ্ড).djvu/২৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হীরামানিক জ্বলে * ২৮৫ বিন্ধমুনি বড় ভয়ানক জিন, হিন্দুদের পুরোহিত মারা যাওয়ার পর বিন্ধমুনি হয়। এই গহন অরণ্যের মধ্যে লোকহীন পরিত্যক্ত বহু প্রাচীন নগরীর অলিতে গলিতে ঝোপেঝাপে ধূম্ৰবৰ্ণ, বিকটাকার, কত যুগের বুভূক্ষু বিন্ধমুনির দল সন্ধ্যার অন্ধকার পড়বার সঙ্গে সঙ্গে শিকারের সন্ধানে জাগ্রত হয়ে উঠে হাক পাড়ে—ম্যয় ভূখা হ ! তাদের হাতের নাগালে পড়লে কি আর রক্ষে আছে ? অতএব এখান থেকে পালানোই একমাত্র বাঁচবার পথ। স্বশীল এক মনে শুনছিল,—পালিয়ে গেলে কোথায় ? —সেই জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে আবার দু-দিন তিন দিন ধরে হেঁটে সমুদ্রের ধারে পৌঁছুলাম । জাহাজে উঠব এসে এই তখন খেয়াল । —আবার সেই মড়া-ভত্তি জাহাজে কেন ? —বুঝলেন না বাবুজি ? যদি জাহাজে উঠি, তবে তো দেশে পৌছুবার ঠিকানা মেলে । নয়তো সেই জংলি মূলুকে যাবো কোথায় ? চারিধারে সমুদ্র, যদি জাহাজ না পাই তবে সেই ংলি মুলুকে না খেয়ে মরতে হবে-নয়তো জংলি লোকেরা খুন করে ফেলবে। বাবুজি, তখন এমন ভর, যে রাতে ঘুমুতে পারি নে। একদিন প্রকাও এক বনমানুষের হাতে পড়তে পড়তে বেঁচে গেলাম—নসিবের জোর খুব। আমন ধরনের জানোয়ার যে দুনিয়ায় আছে তা জানতাম না। গাছের ওপর একদল বনমাস্থ্য ছিল—ধাড়িটা আমায় দেখতে পেলে না বাবুজি, দেখলে আর বঁাচতাম না । স্বশীল মনে মনে একবার চিস্ত করে দেখলে। লোকট। মিথ্যা কথা বলচে না সত্যি বলচে, ওর এই বনমানুষের কথা তার একটা মস্ত বড় পরীক্ষা। স্বশীল জন্তুজানোয়ার সম্বন্ধে কিছু কিছু পড়াশুনো করেছিল, বাড়ীতে আগে নানা রকম পাখি, বেজি, খরগোশ, শজারু ও বাঁদর পুত। গায়ের লোকে ঠাট্ট করে বলত, 'মুস্তফিদের চিড়িয়াখানা’। এ সম্বন্ধে ইংরেজি বইও নিজের পয়সায় কিনেছিল । ও বললে—কত বড় বনমানুষ ? —খুব বড় বাবুজি। ইন্দোরের পালোয়ান রামনকীব সিং-এর চেয়েও একটা বাচ্চার গায়ে জোর বেশি। নিজের আঁাখলে দেখলাম । —কী করে দেখলে ? –ভাল লড়লে হাত আর পা দিয়ে ধরে । আমার মাথার ওপর গাছপালার ভালগুলো তো বনমামুষে বিলকুল ভক্তি হয়ে গিয়েছিল। —তবে তে তুমি স্বমাত্র দ্বীপে কিংবা বোনিওতে গিয়েছিলে কিংবা ওর কাছাকাছি নেন ছোট দ্বীপে। তুমি যে বনমাম্বৰ বলছ-ও হচ্ছে ওরাং ওটাং-ও ছাড়া আর কোন বনমানুষ ও দেশে থাকবে না নেকট হঠাৎ অত্যন্ত বিস্ময়ে স্বণীলের মুখের দিকে চেয়ে বলে ऐंठळ-#ांज्रांन-#ांप्लांन, বাবুজি কী জায়গার নাম করলেন আপনি ? —বুমাত্র। আর বোনিও—