পাতা:বিভূতি রচনাবলী (নবম খণ্ড).djvu/৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চাদের পাহাড় & X একটি শাখ আসল পর্বতমালার সঙ্গে সমকোণ করে উত্তরদিকে লালধি হল নন। a লেও সেট ৪••• হাজার ফুট উঁচু। আরও পশ্চিমদিকে একটা খুব উচু পৰ্ব্বতচূড় ন মেরে আড়ালে লুকোচুরি খেলছে। দুই পাহাড়ের মধ্যেকার উপজল নি মই, বিস্তীর্ণ হবে এবং এই উপত্যক খুব ঘন জঙ্গলে ভরা। খুব বনে গাছপালার যেন তিন চারটে থাক । সকলের ওপরের থাকে শুধুই পরগাছ ও শেওলা, মাঝের থাকে ছোট বড় বনস্পতির ভিড, নীচের থাকে ঝোপঝাপ, ছোট ছোট গাছ । সূর্য্যের আলোর বালাই নেই বনের মধ্যে । আলভারেজ বনের মধ্যে না ঢুকে বনের ধারেই তাঁবু ফেলতে বললে। সন্ধার সময় ওর কফি খেতে খেতে পরামর্শ করতে বদল যে, এখন কি করা যাবে। খাবার একদম ফুরিয়েছে, চিনি অনেকদিন থেকেই নেই, সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে আর দু-এক দিন পরে কফি ও শেষ হবে। সামান্য কিছু ময়দা এখনও আছে—কিন্তু আর কিছুই নেই। ময়দা এই জন্যে আছে, যে ওর ও জিনিসটা কালেভদ্রে ব্যবহার করে । ওদের প্রধান ভরসা বন্য জন্তুর মাংস কিন্তু সঙ্গে যখন ওদের গুলি-বাঞ্চদের কারখানা নেই, তখন শিকারের ভরসাই ব| চিরকাল করা যায় কি করে ? কথা বলতে বলতে শঙ্কর দূরের যে পাহাডের চূড়াটা মেঘের আড়ালে লুকোচুরি খেলছে, সেদিকে মাঝে মাঝে চেয়ে দেখছিল। এই সময়ে অল্পক্ষণের জন্যে মেঘ সম্পূর্ণরূপে সরে গেল। চূড়াটার অদ্ভুত চেহারা, যেন একটা কুলপী বরফের আগার দিকটা কে এক কামড়ে থেয়ে ফেলেছে । আলভারেজ বললে--এপান থেকে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে বুলাওয়েও কি সল্সবেরী চারশে। থেকে পাচশে মাইলের মধ্যে। মধ্যে শ-দুই মাইল মরুভূমি। পশ্চিম দিকে উপকূল তিনশে। মাইলের মধ্যে বটে, কিন্তু পঢ়গিজ, পশ্চিম আফ্রিকা অতি ভীষণ দুর্গম জঙ্গলে ভরা, স্বতরাং সেদিকের কথা বাদ দাও। এখন আমাদের উপায় হচ্ছে, হয় তুমি নয় আমি সলাবেরী কি বুলাওয়েও চলে গিয়ে টোটা ও খাবার কিনে আনি। কম্পাসও চাই । আলভারেজের মুখের এই কথাটা বড় শুভক্ষণে শঙ্কর শুনেছিল। দৈব মানুষের জীবনে যে কত কাজ করে, তা মানুষে কি সব সময়ে বোবে ? দৈবক্রমে ‘বুলাওয়েও ও সলস্বেরী’ দুটো শহরের নাম, তাদের অবস্থানের দিক ও এই জায়গাটা থেকে তাদের আহমানিক দূরত্ব শঙ্করের কানে গেল। এর পর যে কতবার মনে মনে আল্ভারেজকে ধন্যবাদ দিয়েছিল, এই নাম দুটো বলবার জন্যে । কথাবার্তা সেদিন বেশী অগ্রসর হল না। দুজনেই পরিশ্রাস্ত ছিল, সকাল সকাল শযা। আশ্রয় করলে । 啸 বি. র. ৯—৪