পাতা:বিভূতি রচনাবলী (নবম খণ্ড).djvu/৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

AV) वेिङ्कडि-ब्रळ्नावलौ ডাল ভেঙে নাড়লে, কিন্তু কিছুতেই পাইলটের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারলে না। দেখতে দেখতে এরোপ্লেনখানা স্থদুরে ভায়োলেট রঙের পল ক্রুগার পর্বতমালার মাথার ওপর অদৃশ্ব হয়ে গেল । Įử হয়তো আরও এরোপ্লেন যাবে এ পথ দিয়ে। কি আশ্চৰ্য্য দেথতে এরোপ্লেন জিনিসটা ! ভারতবর্ষে থাকতে সে একখানাও দেখে নি। শঙ্কর ভাবলে, আগুন জালিয়ে কাচা ডাল পাতা দিয়ে সে যথেষ্ট পোয়া করবে। যদি আবার এ পথে যায়, পাইলটের দৃষ্টি আকৃষ্ট হবে ধোয়া দেখে। একটা সুবিধে হয়েছে, এরোপ্লেনের বিকট আওয়াজে শকুনির দল কোন দিকে ভেগেছে। সেদিন কাটল। দিন কেটে রাত্রি হবার সঙ্গে সঙ্গে শঙ্করের দুর্ভোগ হল শুরু । আবার গত রাত্রির পুনরাবৃত্তি। সেই কোয়োটের দল আবার এল। আগুনের চারিধারে তারা আবার তাকে ঘিরে বসলো। নেকড়ে বাঘটা সন্ধ্যা না হতেই দূর থেকে একবার দেখে গেল। গভীর রাত্রে আর একবার এল । কিসে এদের হাত থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায় ? আওয়াজ করতে ভরসা হয় না—টোটা মাত্র দুটি বাকী। টোটা ফুরিয়ে গেলে তাকে অনাহারে মরতে হবে। মরতে তো হবেই, তবে দুদিন আগে আর পিছে ; যতক্ষণ শ্বাস ততক্ষণ আশ । কিন্তু আওয়াজ তাকে করতেই হল। গভীর রাত্রে হায়েনাগুলো এসে কোয়োটদের সাহস বাড়িয়ে দিলে। তারা আরও এগিয়ে সরে এসে তাকে চারিধার থেকে ঘিরলে। পোড়া কাঠ ছুড়ে মারলে আর ভয় পায় না। একবার একটু তস্তামত এসেছিল—বসে বসেই ঢুলে পড়েছিল। পরমুহূর্তে সজাগ হয়ে উঠে দেখলে, নেকড়ে বাঘট| অন্ধকার থেকে পা টিপে টিপে তার অত্যন্ত কাছে এসে পড়েছে। ওর ভয় হল ; হয়তে ওটা ঘাড়ে ঝাপিয়ে পড়বে। ভয়ের চোটে একবার গুলি ছুড়লে, আর একবার শেষ রাত্রের দিকে ঠিক এরকমই হল। কোয়োটগুলোর ধৈর্য্য অসীম, সেগুলো চুপ করে বসে থাকে মাত্র, কিছু বলে না। কিন্তু নেকড়ে বাঘটা ফাক খুজছে। রাত ফরসা হবার সঙ্গে সঙ্গে দুঃস্বপ্নের মত অস্তহিত হয়ে গেল কোয়োট, হায়েনা ও নেকড়ের দল। সঙ্গে সঙ্গে শঙ্করও আগুনের ধারে শুয়েই ঘুমিয়ে পড়ল। একটা কিসের শব্দে শঙ্করের ঘুম ভেঙে গেল। খানিকট আগে খুব বড় একটা আওয়াজ হয়েছে কোনো কিছুর। শঙ্করের কানে তার রেশ এখনও লেগে আছে । কেউ কি বন্দুকের আওয়াজ করেছে ? কিন্তু তা অসম্ভব। এই দুর্গম পৰ্ব্বতের পথে কোন মানুষ আসবে ? একটিমাত্র টোটা অবশিষ্ট আছে। শঙ্কর ভাগ্যের ওপর নির্ভর করে সেটা খরচ করে একটা আওয়াজ করলে। যা থাকে কপালে, মরেছেই তো। উত্তরে দুবার বন্দুকের আওয়াজ হল।