পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/১৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আরণ্যক X86. সঙ্গে তাহার তুলনা করিতেছে। টেকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে, কথা মিথ্যা নয়। বৈকাল পাচটার সময় ইহারা চলিয়া গেল। যাইবার সময় কতকগুলি খালি জমাট দুধের ও জ্যামের টিন ফেলিয়া রাখিয়া গেল। লবটুলির জঙ্গলের গাছপালার তলায় সেগুলি আমার কাছে কি খাপছাড়াই দেখাইতেছিল! २ বসন্তের শেষ হইতেই এবার লবটুলিয়া বইহারের গম পাকিয়া উঠিল। আমাদের মহালে রাই সরিষার চাষ ছিল গত বৎসর খুব বেশী । এবার অনেক জমিতে গমের আবাদ, সুতরাং এবছর এখানে কাটুনি মেলার সময় পড়িল বৈশাখের প্রথমেহ । কুটুনি মজুরদের মাথায় যেন টনক আছে, তাহদের দল এবার শীতের শেষে আসে নাই, এ সময়ে দলে দলে আসিয়া জঙ্গলের ধারে, মাঠের মধ্যে সৰ্ব্বত্র খুপড়ি বাধিয়া বাস করিতে শুরু করিয়াছে। দুই-তিন হাজার বিঘা জমির ফসল কাটা হইবে, সুতরাং মজুর ও আসিয়াছে প্রায় তিন-চার হাজারের কম নয়। আরও শুনিলাম আসিতেছে। আমি সকাল হইলেই ঘোড়ায় বাহির হই, সন্ধ্যায় ঘোড়ার পিঠ হইতে নামি । কত নূতন ধরনের লোক আসিতে আরম্ভ করিয়াছে, ইহাদের মধ্যে কত বদমাইস, গুও, চোর, রোগগ্রস্ত—সকলের উপর নজর না রাখিলে এসব পুলিসবিহীন স্থানে একটা দুর্ঘটনা যখন-তখন ঘটিতে পারে। দু-একটি ঘটনা বলি। একদিন দেখি এক জায়গায় দুটি বালক ও একটি বালিকা রাস্তার ধারে বসিয়া কাদিতেছে । ঘোড়া হইতে নামিলাম ! জিজ্ঞাসা করিলাম--কি হয়েছে তোমাদের ? উত্তরে যাহা বলিল উছার মৰ্ম্ম এইরূপ : উহাদের বাড়ী আমাদের মহালে নয়, নন্দলাল ওঝা গোলাওয়ালার গ্রামে। উহার সহোদর ভাই-বোন, এখানে কাটুনি মেলা দেখিতে আসিয়াছিল। আজই আসিয়া পৌঁছিয়ছে, এবং কোথায় নাকি লাঠি ও দড়ির ফাসের জুয়াখেলা হইতেছিল, বড় ছেলেটি সেখানে জুয়া খেলিতে আরম্ভ করে। একটা লাঠির যে-দিকটা মাটিতে ঠেকিয়া আছে সেই প্রান্তটা দড়ি দিয়া জড়াইয়া দিতে হয়, যদি দড়ি খুলিতে খুলিতে লাঠির আগার ফাস জড়াইয়া যায়, তবে খেলাওয়ালা খেলুড়েকে এক পয়সার চার পয়সা হিসাবে দেয় । বড় ভাইয়ের কাছে ছিল দশ আনা পয়সা, সে একবারও লাঠিতে ফাস বাধাইতে পারে নাই, সব পয়সা হারিয়া ছোট ভাইয়ের আট আনা ও পরিশেষে ছোট বোনের চার আন ه د-f( . . d