পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/১৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

›ግ8 বিভূতি-রচনাবলী ইহাদের মধ্যে সদাচারী, গৰ্ব্বিত মৈথিল ব্রাহ্মণ হইতে আরম্ভ করিয়া গাঙ্গেীত ও দোসাদ পৰ্য্যন্ত সমাজের সর্বস্তরের লোকই আছে। যুগলপ্রসাদ মুহুরীকে জিজ্ঞাসা করিলাম—এরা কি এতদিন গৃহহীন অবস্থায় ছিল ? এত লোক আসছে কোথা থেকে ? যুগলপ্রসাদের মন ভাল নয়। বলিল—এদেশের লোকই এই রকম। শুনেছে এখানে জমি সস্তায় বিলি হচ্ছে—তাই দলে দলে আসছে । সুবিধে বোঝে থাকবে, নয়তো আবার ভেরা উঠিয়ে অন্য জায়গায় ভাগবে। —পিতৃপিতামহের ভিটের কোন মায়া নেই এদের কাছে ? –কিছু না বাবুজী । এদের উপজীবিকাই হচ্ছে নূতন-ওঠা চর বা জঙ্গলমহাল বন্দোবস্ত নিয়ে চাষবাস করা। বাস করাটা আনুষঙ্গিক । যতদিন ফসল ভাল হবে, খাজনা কম থাকবে, ততদিন থাকবে। —তার পর ? —তার পর খোজ নেবে অন্ত কোথায় নূতন চর বা জঙ্গল বিলি হচ্ছে, সেখানে চলে যাবে। এদের ব্যবসাই এই। সেদিন গ্র্যান্ট সাহেবের বটগাছের নীচে জমি মাপিয়া দিতে গিয়াছি, আসরফি টিগুেল জমি মাপিতেছিল, আমি ঘোডার উপর বসিয়া দেখিতেছিলাম, এমন সময় কুস্তাকে পথ ধরিয়া যাইতে দেখিলাম । কুন্তাকে অনেকদিন দেখি নাই। আসরফিকে বলিলাম—কুন্তা আজকাল কোথায় থাকে, ওকে দেখি নি ত ? আস্থরফি বলিল—ওরা কথা শোনেন নি বাবুজী ? ও মধ্যে এখানে ছিল না অনেক দিন— —কি রকম ? —রাসবিহারী সিং ওকে নিয়ে যায় তার বাড়ী। বলে, তুমি আমাদের জাতভাইয়ের স্ত্রী—আমার এখানে এসে থাক— —বেশ । —সেখানে কিছুদিন থাকবার পরে—ওর চেহার দেখেছেন ত বাবুজী, এত দুঃখে কষ্টে এখনও—তার পর রাসবিহারী সিং কি-সব কথা ওকে বলে—এমন কি ওর উপর অত্যাচারও করতে যায়—তাই আজ মাসখানেক হ’ল সেখান থেকে পালিয়ে এসে আছে। শুনি রাসবিহারী ছোরা নিয়ে ভয় দেখায়। ও বলেছিল, মেরে ফেল বাবুজী, জান দেগা—ধরম দেগা নেহিন । —কোথায় থাকে ?