পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/২০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Y GAWA ᎼᏓy8 বিভূতি-রচনাবলী কথা সে বুঝিতে পারে নাই। বলিলাম, ওর এটো বাসন মাজতে হবে, ওকে খাওয়াতে হবে, ও তো উঠতে পারে না । সে-সব তোমায় দিয়ে কি করে হবে ? কুস্ত বলিল—আপনি হুকুম করলেই আমি সব করব। আমি রাজপুত কোথায় বাবুজী ! আমার জাত-ভাই কেউ এতদিন আমার কি দেখেছে ? আপনি যা বলবেন আমি তাই করব । আমার আবার জাত কি ! রাজু পাড়ের জড়ি-লুটির গুণে ও কুস্তার সেবাশুশ্রুষায় মাসখানেকের মধ্যে গিরধারীলাল চাঙ্গ হইয়া উঠিল! কুস্তা এজন্ত দিতে গেলেও কিছু লইল না। গিরধারীলালকে সে ইতিমধ্যে ‘বাবা’ বলিয়া ডাকিতে আরম্ভ করিয়াছে দেখিলাম। বলিল—আহা, বাবা বড় দুঃখী, বাবার সেবা করে আবার পয়সা নেব ? ধরমরাজ মাথার উপর নেই ? জীবনে যে কয়টি সৎ কাজ করিয়াছি, তাহার মধ্যে একটি প্রধান সৎ কাজ নিরীহ ও নিঃস্ব গিরধারীলালকে বিনা সেলামীতে কিছু জমি দিয়া লবটুলিয়াতে বাস করানো। তাহার খুপড়িতে একদিন গিয়াছিলাম। নিজের বিঘা পাচেক জমি সে নিজের হাতেই পরিষ্কার করিয়া গম বুনিয়াছে। খুপড়ির চারিপাশে কতগুলি গোড়ালেবুর চারা পুতিয়াছে। —এত গোড়ালেবুর গাছ কি হবে গিরধারীলাল ? —হুজুর, ওগুলো শরবতী নেবু। আমি বড় খেতে ভালবাসি। চিনি-মিছরি জোটে না আমাদের, ভূরা গুড়ের শরবৎ করে ওই লেবুর রস দিয়ে খেতে ভারি তার ! দেখিলাম আশর আনন্দে গিরধারীলালের নিরীহ চক্ষু দুটি উজ্জল হইয়া উঠিয়াছে। —ভাল কলমের লেবু। এক-একটা হবে এক পোয় । অনেক দিন থেকে আমার ইচ্ছে, যদি কখনো জমি জায়গা করতে পারি, তবে ভাল শরবতী লেবুর গাছ লাগাব। পরের দোরে লেবু চাইতে গিয়ে কতবার অপমান হয়েছি হুজুর। সে দুঃখ আর রাখব না। অষ্টাদশ পরিচ্ছেদ X এখান হইতে চলিয়া যাইবার সময় আসিয়াছে। একবার ভানুমতীর সঙ্গে দেখা করিবার ইচ্ছা প্রবল হইল। ধন্‌ঝরি শৈলমাল একটি মুন্দর স্বপ্নের মত আমার মন অধিকার করিয়া আছে. তাহার বনানী...তাহার জ্যোৎস্নালোকিত রাত্রি. সঙ্গে লইলাম যুগলপ্রসাদকে। তহসিলদার সজ্জন সিং-এর ঘোড়াটাতে যুগলপ্রসাদ চড়িয়ছিল—আমাদের মহালের সীমানা পার হইতে না-হুইতেই বলিল—হুজুর, এ ঘোড়া চলবে না, জঙ্গলের পথে রহুল চাল