পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/২১০

సెB বিভূতি-রচনাবলী —ইস্। মিথ্যে কথা ! নাঢ় বইহারের সীমানা পার হইয়া পান্ধী হইতে মুখ বাড়াইয়া একবার পিছন ফিরিয়া চাহিয়া দেখিলাম । বহু বস্তি, চালে চালে বসত, লোকজনের কথাবাৰ্ত্তা, বালক-বালিকার কলহস্ত, চীৎকার, গরু-মহিষ, ফসলের গোল । ঘন বন কাটির আমিই এই হাস্তদীপ্ত শস্যপূর্ণ জনপদ বসাইয়াছি ছয়-সাত বৎসরের মধ্যে। সবাই কাল তাঁহাই বলিতেছিল—বাবুজী, আপনার কাজ দেখে আমরা পৰ্য্যন্ত অবাক হয়ে গিয়েছি, নাঢ় লবটুলিয়া কি ছিল আর কি হয়েছে! কথাটা আমিও ভাবিতে ভাবিতে চলিয়াছি। নাঢ় লবটুলিয়া কি ছিল আর কি হইয়াছে। দিগন্তলীন মহালিখারূপের পাহাড় ও মোহনপুরা অরণ্যানীর উদেশে দূর হইতে নমস্কার করিলাম । / হে অরণ্যানীর আদিম দেবতার, ক্ষমা করিও আমার । বিদায়! : Nව বহু কাল কাটিয়া গিয়াছে তার পর—পনের-ষোল বছর । বাদাম গাছের তলায় বসিয়া এই সব ভাবিতেছিলাম । বেলা একেবারে পড়িয়া আসিয়াছে।... বিশ্বতপ্রায় অতীতের যে নাঢ় ও লবটুলিয়ার আরণ্য-প্রান্তর আমার হাতেই নষ্ট হইয়াছিল, সরস্বতী হ্রদের সে অপূৰ্ব্ব বনানী, তাহাদের স্মৃতি স্বপ্নের মত আসিয়া মাঝে মাঝে মনকে উদাস করে। সঙ্গে সঙ্গে মনে হয়, কেমন আছে কুন্তা, কত বড় হইয়া উঠিয়াছে, মুরতিয়া, মটুকনাথের টোল আজও আছে কিনা, ভানুমতী তাহদের সেই শৈলবেষ্টিত আরণ্যভূমিতে কি করিতেছে, রাখালবাবুর স্ত্রী, ধ্রুবা, গিরিধারীলাল, কে জানে এতকাল পরে কে কেমন অবস্থার श्रांtछ् । •• আর মনে হয় মাঝে মাঝে মঞ্চীর কথা । অমৃতপ্ত মঞ্চী কি আবার স্বামীর কাছে ফিরিয়াছে, না আসামের চা-বাগানে চায়ের পাতা তুলিতেছে আজও। কতকাল তাহীদের আর খবর রাখি না ।